কথায় বলে, কুত্তার লেজ কখনও সোজা হয় না। আওয়ামী-বাম-নাস্তিক ঘরাণার পত্রিকা প্রথম আলো প্রতিষ্ঠার পর থেকে তাদের চরিত্র এখন পর্যন্ত বদলায় নি। বরং দেশের মানুষকে তাদের পক্ষে বদলে যাওয়ার জন্য রীতিমত বিজ্ঞাপন দিয়ে প্ররোচনা দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রথম আলো গং কিন্তু খুবই শক্তিশালী। ভারত-মার্কিন দালাল ও পেইড বুদ্ধিজীবীদের সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট হল প্রথম আলো। এদের বাইরের রূপ ও ভিতরের রূপের মাঝে আকাশ-পাতাল ব্যবধান। প্রথম আলোর কিছু ঘটনা সবার সাথে শেয়ার করার করতে চাই।
‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল নিয়ে বিভ্রান্তির সূচনাকারী প্রথম আলো
গত ১২ মার্চ সারাদেশে সরকারী উদ্যোগে ৫ বছর কমবয়সী শিশুদের ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল ও কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অর্থায়নে অখ্যাত ভারতীয় কোম্পানীর কাছ থেকে এই ক্যাপসুল কেনায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করে প্রথম রিপোর্ট করে দৈনিক প্রথম আলো। পরে সমকালও একটি রিপোর্ট করে। ফলে সচেতন অভিভাবকদের মনে ঐ ক্যাপসুল খাওয়ানো নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয়। ইন্টারনেটের বিভিন্ন ফোরামে এটা নিয়ে বেশ তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। আমি নিজেও আমার সন্তানকে ঐদিন ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল খাওয়াই নাই।
তবে হৃদয়হীন পশু ছাড়া আমার ধারণা কেউ চাননি ঐ ক্যাপসুল খেয়ে কোন শিশু অসুস্থ হোক বা মারা যাক। ঐদিন সারাদিন অনলাইনে ছিলাম আর মনে মনে প্রার্থনা করছিলাম যাতে কোন দুঃখজনক সংবাদ না আসে। কিছু দানবের লোভের শিকার যাতে কোন নিষ্পাপ শিশু না হয় সেই কামনাই করছিলাম। কারণ বাবা হিসেবে জানি, সন্তানের চেয়ে প্রিয় কোন বাবা-মার কাছে কিছু নেই।
ব্যতিক্রম ছিল একটি গোষ্ঠী। এরা হল জামায়াত-শিবির। সরকারকে বেকায়দার ফেলার কোন সুযোগ এরা হাতছাড়া করছে না। ১১ তারিখ অর্থাৎ ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর আগের দিন থেকেই এরা অনলাইনে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করে। এমনকি ১২ তারিখ এই সামহোয়ার ইন ব্লগেই বেশ কয়েকটি নিক থেকে নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশু অসুস্থ হওয়া, এমনকি মৃত্যুর খবরও প্রচার করে। কিন্তু পাশাপাশি দেখছিলাম বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের বক্তব্য। ডাক্তারদের বক্তব্য ছিল, ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল নিম্নমানের হলে হয়ত শিশুদের শরীরে তাৎক্ষণিক সামান্য প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বা কোন প্রতিক্রিয়াই হবে না, কিন্তু শিশুদের মৃত্যুর সম্ভবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে আসলে ঐদিন উদ্বিগ্ন হওয়ারই কিছু ছিল না।
ঐদিন প্রথম আলোতেও কোন শিশুর অসুস্থ হওয়ার সংবাদ আসেনি। একটা সংবাদ ছিল এটা-
ফেনী ও কাপ্তাইয়ে ‘ভিটামিন এ’ ক্যাম্পেইন নিয়ে বিভ্রান্তি
দিনটি ভালভাবে পার হওয়ায় শুধু সারাদেশের সাধারণ মানুষ নয়, সরকারের কর্তাব্যক্তিরাও যে হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন সেটা বলাই বাহুল্য। শুধু মনে হয় একটা গোষ্ঠী খুশি হতে পারে নি। আমার মনে আশঙ্কা ছিল সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য না আবার কোন ধরণের স্যাবোটাজ ঘটে। তবে নিষ্পাপ শিশুদের পক্ষে আল্লাহ নিজে ছিলেন বলে তেমনটি ঘটেনি।
যাহোক, সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরেরদিন ১৩ মার্চ গুজব তদন্তে কমিটি গঠন করে। এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। এই খবরটিও প্রথম আলোয় আসে এভাবে-
ভিটামিন ‘এ’ নিয়ে গুজব তদন্তে কমিটি গঠন
আমার স্পষ্ট বিশ্বাস, সরকারের তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণায় প্রথম আলো কিছুটা বেকায়দায় পড়ে। কেননা, তাদের রিপোর্টটিই কিন্তু জামায়াত-শিবির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। ফলে, জামায়াত-শিবিরের বাইরে একমাত্র প্রথম আলোরই দরকার ছিল শিশু অসুস্থ হওয়া বা শিশু মৃত্যুর অন্তত একটা অভিযোগ হাজির করা। এবং আমি ভাবছিলাম দুই একদিনের মধ্যেই প্রথম আলো এমন কিছু একটা আবিস্কার করবে।
হলও তাই। ১৫ তারিখ প্রথম আলো নাটোরে ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল খেয়ে এক শিশুর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করল-
নাটোরে ভিটামিন এ খাওয়ার পরে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ
অথচ, সাধারণ জ্ঞানে চিন্তা করলে বোঝা যায়, লাখ লাখ শিশু ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল খেয়েছে। যদি এই ক্যাপসুল খেয়ে অসুস্থ হয় এবং মারা যায় তাহলে সেই সংখ্যাটি কম হবে না। সুতরাং যেহেতু সেরকম কিছু হয়নি, তাই বিষয়টি নিয়ে আর অযথা নতুন করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোন মানে হয় না। আর প্রতিদিন এমনিতেই অসংখ্য শিশু বিভিন্ন অসুখে মারা যাচ্ছে। নাটোরের ঐ শিশুটির মৃত্যু সেরকমই একটি ঘটনা। কিন্তু প্রথম আলো সেটাকে ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুলের প্রতিক্রিয়া হিসেবে চালিয়ে দিল।
অর্থাৎ প্রথম আলোর চরিত্র হল এমন- কোনভাবেই ভুল স্বীকার করা যাবে না, সাদা ইমেজে কাদা লাগানো যাবে না। যারা দীর্ঘদিন এই পত্রিকাটি পড়েন তাঁরা এটা ভালই বোঝেন। একটা সময় ছিল যখন মানুষ এগুলো বিশ্বাস করত। কিন্তু এখন মানুষ অনেক বেশি সচেতন, অনেক বেশি সন্দেহপ্রবণ।
পরবর্তীতে যা নিয়ে লেখার ইচ্ছে-
শতাধিক মানুষের জীবন বনাম লিমনের একটি পা!
প্রথম আলোর অনলাইনে মন্তব্য মডারেশনকারীর চোখে মারাত্মক সমস্যা?
সংখ্যালঘু-ইস্যু ব্যবসায়ী প্রথম আলো
প্রথম আলো ও আশরাফুলের গোপন প্রেম!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৪৭