কোন ধর্ম বা মত সঠিক সেটা নির্ণয়ে মানুষের চেয়ে যোগ্য প্রাণি আজ অবদি খুঁজে পাওয়া যায়নি। মহাশূণ্য থেকে মহাবিশ্বের উত্তরণে সৃষ্টিকর্তার অনুপস্থিতি প্রমাণ করতে গিয়ে মানুষ যথেষ্ট নাকানি চুবানি খেয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের হিসেবের খাতায় এখনো মহাশূণ্য বিরাজমান। আর মহাশূণ্য থেকে মহাবিশ্বের উত্তরণে সৃষ্টিকর্তার উপস্থিতি প্রমাণ করতে মানুষ বরাবর সফল। এ বিষয়ে আমার লেখা ‘আল্লাহর অকাট্য প্রমাণ’ গত একুশে বই মেলা ২০১৮-তে প্রকাশ পেয়েছে। বইটি ১৬ পৃষ্ঠার ৪ ফর্মা ছিল। এখন ২য় সংস্করণে বইটিকে ১৬ পৃষ্ঠার ১০ ফর্মা করার প্রচেষ্টা চলছে।
আল্লাহ বলেছেন,‘অলাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ-কেহ তাঁর মতো হতে পারেনি’। সবাই যদি বানালে হয় আর কেউ তাঁর মতো না হয় তবে তাঁর দাবী অনুযায়ী তিনি একা নিজে নিজে হয়েছেন। তিনি ছাড়া আর কেউ তাঁর মতো নিজে নিজে হতে পারেনি।
কেন হতে পারেনি?
ডারউইন তত্ত্বে নেচারাল সিলেকশনে নেচার তাঁকে সিলেক্ট করেছে। ডারউইন তত্ত্বে যোগ্যতমের জয়ে আর সবার উপর তিনি জয়ী হয়েছেন। সে জন্য তিনি একা নিজে নিজে হতে পেরেছেন। একই কারণে অন্য কেহ নিজে নিজে হতে পারেনি।
কেহ যদি বলে রিক্সা চালক কেন উড়োজাহাজ চালাতে পারে না? এর সহজ উত্তর অযোগ্যতা। যোগ্যতার কারণে আল্লাহ যা পেরেছেন, অযোগ্যতার কারণে অন্যেরা তা’ পারেনি।
আল্লাহ বলেছেন,‘কুল্লুমান আলাইহা ফান ওয়া ইয়াবকা অজহু রাব্বিকা জুল জালালি ওয়াল ইকরাম- তাতে সব বিলিন হয়। বাকী থাকে তোমার মহিমাম্বিত ও দয়ালু প্রতিপালকের সত্ত্বা’। বিজ্ঞান তত্ত্বে যাতে সব বিলিন হয়ে প্রতিপালকের সত্ত্বা বাকী থাকে সেই স্থান মহাশূণ্য। পদার্থ তাতে হতে গিয়ে স্থান লাভের কোন নির্দিষ্ট স্থান না পেয়ে মহাশূণ্যের সর্বব্যাপ্ত মহাঅনির্দিষ্ট স্থানের মহাটানে পড়ে অনু পরমাণু থেকে ভেঙ্গে গিয়ে ইলেক্ট্রণ পোট্রন ও নিউট্রন নামক শক্তি কনিকায় পরিণত হয়েছে।এভাবে সকল পদার্থের সকল শক্তি কনিকা এবং সকল শক্তির সকল শক্তি কণিকার সম্মিলনে সর্ব শক্তিমান রূপে প্রকৃতি নির্বচনে মহান প্রতিপালক আল্লাহ একমাত্র নিজে নিজে হয়েছেন। বিলিন হওয়া সংক্রান্ত প্রাকৃতিক কারণে আর কেহ তাঁর মতো হতে পারেনি।
মহাশূণ্য থেকে একমাত্র তিনি হয়েছেন। এরমানে মহাশূণ্যে তিনি ছাড়া আর কেহ ছিল না। বাইনারি নিয়মে শূণ্য এবং একের শূণ্যে তিনি এবং একও তিনি এজন্য তিনি চিরন্তন। তিনি ছাড়া আর কেহ নিজে নিজে হতে না পারায় আর সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা একমাত্র তিনি।
আল্লাহর বাণী কোরআন সম্পর্কে ডঃ মরিস বুকাইলি বলেছেন, মোহাম্মদের (সাঃ) আমলে জ্ঞান বিজ্ঞানের যতটা উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল, তার নিরিখে বিচার করলে দেখা যায়, কোরআনের বাণীতে বিজ্ঞান বিষয়ক যে সব বক্তব্য ও বর্ণনা বিদ্যমান, সে সব বৈজ্ঞানিক বিষয় আদৌ সে সময়কার কোন মানুষের রচনা হতে পারে না। সুতরাং তথ্যগত যুক্তির বিচারে এই সত্য স্বীকার করে নিতে আপত্তির কোন কারণ থাকতে পারে না যে, কোরআন অবতীর্ণ এক আসমানী কিতাব ছাড়া আর কিছুই নয়। তো যার বাণী আছে সে নেই এটাতো হতে পারে না।
আরিফ আজাদ তার প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ গ্রন্থে আল্লাহ সংক্রান্ত বিষয় সমূহ এমন ভাবে উপস্থাপন করেছেন যাতে এগুলো বেঠিক বলার আর কোন সুযোগ অবশিষ্ট নেই।
উপলব্ধির মাধ্যমে আল্লাহকে বিশ্বাস করা ফরজ। কারণ সবার পক্ষে আল্লাহকে প্রমাণ করে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়। তাই বলে আল্লাহর প্রমাণ নেই ঘটনা এমন নয়। প্রমাণ আল্লাহ নিজেই দিয়ে রেখেছেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় বিজ্ঞানের অভাবে সেটা এতদিন বোধগম্য হয়নি। এখন প্রয়োজনীয় বিজ্ঞানের উপস্থিতি জনিত কারণে আল্লাহর উপস্থাপিত প্রমাণ বুঝতে আর কোন সমস্যা থাকেনি।এখন আর আল্লাহর বিরুদ্ধে উপস্থাপিত কোন অভিযোগ দাঁড়াতে পারছেনা। গ্রহণযোগ্য জবাবের মাধ্যমে আল্লাহর বিরুদ্ধে উপস্থাপিত সব অভিযোগ খন্ডন করা যায়।
শূণ্যে বিবর্তন সম্ভব নয়। শূণ্যে নিজে নিজে হওয়া সম্ভব। আর যে নিজে নিজে হবে সে সসীম হবে না বরং সে অসীম হবে। কারণ তাকে অসীম হতে কেউ বাধা দিচ্ছেনা। আর অসীম হতে পারলে সে কেনইবা সসীম হতে যাবে? আর যে অসীম হবে সে পদার্থ হবে না। কারণ পদার্থের সীমা থাকে। কাজেই নিজে নিজে শক্তি হবে। কারণ শক্তির অসীম হতে সমস্যা নেই। আর অসীম একাধীক হলে সে গুলো আলাদা হবেনা। কারণ আলাদা করতে সীমা দিতে হয়। আর সীমা দিলে অসীম আর অসীম থাকে না। কাজেই সব অসীম একত্রে মিলে একজন সর্ব অসীম শক্তিমান হবেন। এটাই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম। এ জন্যই আল্লাহ বলেছেন,‘ কুলহু আল্লাহু আহাদ-বল আল্লাহ এক’।
সার কথা আল্লাহ প্রমাণীত সত্য এবং এর বিপরীত কথা প্রমাণীত মিথ্যা। এটার আর কোন বিকল্প নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:৩২