অফিসে ও কর্মস্থলে এক মিনিটে আপনি কি কি করতে পারেন?
========================
এক মিনিটে আপনি কি কি করতে পারেন?
প্রশ্নঃ আমরা অফিসে ও কর্মস্থলে বলতে গেলে ইবাদত ও ভাল কাজের কোন সময়ও পাই না। কীভাবে আমরা দিনের এই অল্প সময় কাজে লাগাব? আর কিভাবেই বা আমরা এ থেকে উপকৃত হতে পারি?
উত্তরঃ নিশ্চয় সময় হল মানুষের জীবন। যা কখনেই অপচয় বা অবহেলা দেবার নয়। বুদ্ধিমান ও অভিজ্ঞ সেই, যে তার সময়ের সদ্বব্যবহার করে। তাই সে তা অহেতুক কাজ ও অর্থহীন কথায় ব্যয় করে না বরণ তা (সময়) সীমাবদ্ধ রাখে প্রশংসনীয় ও কল্যানমুখী কাজে, যা আল্লাহকে সস্তুষ্ট করে এবং মানুষের উপকার বয়ে আনে।
আপনার জীবনের প্রতিটি মিনিটে আপনি একটি করে প্রস্তর স্থাপন করতে পারেন যা আপনার মর্যাদার ভবনকে উচ্চকিত করবে এবং তা দিয়ে আপনার জাতি সৌভাগ্যের পথ পাড়ি দিবে।
এক মিনিট সময়ের মাঝে অনেক কল্যাণ করা যেতে পারে এবং বিশাল (প্রতিদান) সওয়াব অর্জিত হতে পারে। শুধু এক মিনিটেই আপনি আপনার জীবনে যোগ করতে পারেন কোন কিছু দান করে, কোন কিছু আত্মস্থ করে, মুখস্ত করে, কল্যানমুখী কাজ করে। শুধু এক মিনিটে এগুলো আপনার ভালো কাজের খাতায় লেখা হয়ে যাবে যদি আপনি জানেন কিভাবে তা কাজে লাগাবেন ও তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন।
আল্লাহর ইচ্ছায় এক মিনিটে যে বিনিয়োগ প্রকল্প সমুহ আপনি সম্পন্ন করতে পারেন, তার কিছু নিন্মে উল্লেখিত হলঃ
১. এক মিনিটে আপনি সুরা আল-ফাতিহা পরপর তিনবার গোপনে পড়ে ফেলতে পারেন। অনেকে বলেন সুরা আল-ফাতিহা পাঠের সওয়াব ৬০০ হাসানাহ এর বেশী। তাই আপনি যদি তা তিন বার পাঠ করেন, তবে আল্লাহর ইচ্ছায় আপনার ১৮০০ এর বেশী হাসানাহ (পূন্য) অর্জিত হবে আর এর সবই এক মিনিটে।
২. এক মিনিটে আপনি সুরা আল-ইখলাস "কুল হু আল্লাহু আহাদ" পড়তে পারেন গোপনে পর পর বিশ বার, তা একবার পাঠ করা আল-কুরআন এর এক তৃতীয়াংশ পড়ার সমান তাই আপনি যদি তা বিশ বার পাঠ করেন তবে তা ৭ বার আল-কুরআন পড়ার সমতুল্য। আর যদি আপনি তা প্রতিদিন এক মিনিটে বিশ বার পাঠ করেন তবে মাসে ৬০০ বার আপনার পাঠ করা হয় আর বছরে ৭২০০ বার পাঠ করা হয় যার সওয়াব (প্রতিদান) আল-কুরআন ২৪০০ পড়ার সমতুল্য হয়।
৩. আপনি এক মিনিটে আল্লাহর কিতাবের এক পৃষ্টা পাঠ করতে পারেন।
৪. আপনি এক মিনিটে আল্লাহর কিতাবের একটি ছোট আয়াত মুখস্থ করতে পারেন।
৫. এক মিনিটে আপনি " লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাই'ইন কাদির" ২০ বার পড়তে পারেন, যার সাওয়াব (প্রতিদান) ইসমাঈল বংশের ৮ জন দাসকে মুক্ত করার সমান।
৬. এক মিনিটে "সুবাহানাল্লাহি ওয়াবিহামদি" ১০০ বার পড়তে পারেন, আর যে তা একদিনে পড়ে তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায় যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মত হয়।
৭. এক মিনিটে আপনি "সুবাহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি সুবাহানাল্লাহিল আজিম" ৫০ বার পড়তে পারেন, আর তা হল সহজপাঠ্য দুটি বাক্য যা মিযানের ওজনে ভারী আর রাহমান (দয়াময়) এর অতি প্রিয় যেমনটি রয়েছে আল বুখারী (৭১২৪) ও মুসলিমে।
৮. এক মিনিটে আপনি সহজে বোধগম্য উপকারী কোনো বইয়ের দুই পৃষ্টা পাঠ করতে পারেন।
৯. এক মিনিটে আপনি টেলিফোন যোগে আপনার আত্বীয়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন ।
১০. এক মিনিটে আপনি কয়েকজনকে সালাম দিতে ও তাদের সাথে হাত মিলাতে পারেন।
১১. এক মিনিটে আপনি কোন ব্যক্তিকে, একটি মন্দ কাজ করা থেকে নিষেধ করতে পারেন।
১২. এক মিনিটে আপনি একটি ভাল কাজের আদেশ করতে পারেন।
১৩. এক মিনিটে আপনি একজন দুঃখীকে সান্তনা দিতে পারেন।
১৪. এক মিনিটে আপনি পথ থেকে ক্ষতিকর বস্তু অপসারণ করতে পারেন।
সুত্রঃ নির্বাচিত ফাতওয়া-১
(সিয়াম সংখ্যা)