না, নববর্ষ উদযাপন নয়। আমার কাছে নববর্ষ আর পুরনো বর্ষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তবে সময়ের পরিক্রমার একটা ব্যাপার অবশ্যই আছে। গত হয়ে যাওয়া একটি বছর আমাদের অনেককিছুই দিয়েছে আবার অনেককিছুই কেড়েও নিয়েছে। এখন প্রাপ্তির আর অপ্রাপ্তির মধ্যে কোনটার পাল্লা ভারি সেটা সেটা স্ব স্ব স্থান থেকে আমরা নিজেরাই বিচার করতে পারি। নতুন বছর আমাদের জন্য কী নিয়ে আসবে সে ব্যাপারেও আমরা নিখুঁত ভবিষ্যদবাণী করতে পারব না। তাই শুভ নববর্ষ বলে সারারাত চিল্লাচিল্লি করে পরেরদিন ভাঙা গলা নিয়ে জেগে উঠলেই যে আমাদের সামনের বছরটা খুব ভালো কাটবে এ কথা হলপ করে কেউ বলতে পারব না। আগত সালটা আমাদের ভালো কাটার গ্যারান্টি একমাত্র আল্লাহই দিতে পারেন, অন্য কেউ নয়।
থার্টিফার্স্ট নাইটে আমরা হই-হট্টগোল পটকাবাজি, আতশবাজি, রঙিন পানীয় আর অবাধ মেলামেশার যে সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করার চেষ্টায় প্রাণপাত করছি সেটা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির সাথে কোনোভাবেই যায় না; আর ইসলামি সংস্কৃতির সাথে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। তবে হ্যাঁ, এই রাতকে উপলক্ষ্য করে সুযোগসন্ধানী কিছু লম্পট নর-নারীর বিকৃত মনস্কামনা পূরণ হওয়াটাকে আমাদের সমাজে অনেকেই প্রশংসার চোখে দেখে থাকেন, আর বিজাতীয় এই বেলেল্লাপনার অংশীদার হতে পেরে গর্বে তাদের বুক বিঘতখানেক ফুলে ওঠে। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে এ চিত্রই চোখের সামনে ভাসতে দেখছি।
আমি নিজে কখনও এই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাইনি, আর ভবিষ্যতেও ভাসানোর ইচ্ছে নেই। আর আমার পরিবারের কাউকেও এই তথাকথিত আধুনিক সংস্কৃতির সাথে তাল মেলানোর সুযোগ দেওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই।
যদি আপনার মন অতি সংস্কৃতিবান আর অত্যাধুনিক চিন্তাধারার ধ্বজাধারী হয়ে থাকে তবে আপনি থার্টিফার্স্ট নাইটকে যেভাবে খুশি উদযাপন করতে পারেন, আমি আপনাকে জোর করে বাধা দেওয়ার অধিকার রাখি না। তবে আমি তো এই রাতটিকে আর দশটা রাতের মতই স্বাভাবিক আর সুন্দরভাবে ইসলামি সংস্কৃতি মেনেই পালন করতে চাই।
সবার জন্য শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০২