তকদির বা ভাগ্য নিয়ে লিখলে আসলে অনেক কিছুই লেখা যায়। আমরা অনেকেই আধুনিক শিক্ষিত, বিজ্ঞান মনস্ক, যুক্তিবাদী ভাগ্যকে বিশ্বাসই করতে চাই না। যারা আরো এককাঠি সরেস তারা তো বলেই বেড়ান, ভাগ্য বলে আসলে কিছুই নেই, চেষ্টা ও পরিশ্রম করলেই ভাগ্য বদলানো যায়। তবে কথা হলো এই সাফল্যের ভাগ্য আর নিয়তির ভাগ্য এক জিনিস নয়। এ দুয়ের মধ্যে সুক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে, আমাদের উপলব্ধি করতেই যা বাকি।
আপনি সাফল্যের জন্য আপ্রান চেষ্টা করলেন, দিনরাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করলেন, খেয়ে না খেয়ে দিন গুজরান করলেন, মাস শেষে কিছু টাকা জমালেন। সারা বছর রাতজেগে পড়াশুনা করলেন, সিনেমা-নাটক কিছুই দেখলেন না, কোথাও বেড়াতেও গেলেনে না, রেজাল্টের দিনে মোটামুটি একটা ফলাফল অর্জন করলেন। এটা হলো আপনার সাফল্য। কিন্তু আপনি যদি হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যান, লটারীতে ৩০ লাখ টাকা পেয়ে বড়লোক হয়ে গেলেন কিংবা আপনি পাবলিক পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন (0.01 মার্কের ব্যবধানে)। এটাকে কি আপনি সাফল্য বলবেন নাকি ভাগ্য?
তকদির বা ভাগ্যে বিশ্বাস করা ঈমানের অঙ্গ। মানুষের সমগ্র জীবনে যা কিছু ঘটবে তা সবই পূর্ব নির্ধারিত। নিয়তিকে এড়ানোর সুযোগ আসলেই মানুষের নেই। মানুষ সেটা বিশ্বাস করুক বা না করুক।
তবে ভাগ্যের দোহাই দিয়ে কর্মফল এড়ানোর কোন সুযোগ নেই। কর্মফল অবশ্যই মানুষকে ভোগ করতে হয়, আপনি যখন খারাপ কাজ করবেন তখন আপনাকে এর ফল ভোগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যখন কাউকে কষ্ট দিবেন, যখন কারো ক্ষতি করবেন, তখন সেই কষ্ট আর ক্ষতি নিজেও ফেরত পাওয়ার জন্য তৈরী থাকুন। আর ভাল কাজের পুরষ্কার মানুষ ইহজগত ও পরজগত দুজগতেই পেয়ে থাকে।
সুতরাং মানুষের প্রজ্ঞা, জ্ঞান ও শারীরিক সামর্থ্যকে ভাল ও কল্যানমুখী কাজে ব্যয় করা উচিত।
২২/০৪/২০১৬, পাবনা।