somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার পিচ্চি বেলা:D -২

০৩ রা অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন ব্লগে কিছু লিখিনা।কিছু লিখতে ইচ্ছা হচ্ছে কিন্তু লিখবটাকি ভেবে পাচ্ছিলাম না।পিসি মনিটরের দিকে তাকিয়ে ভাবছি কি লিখা যায়।হঠাৎই হারানো বিজ্ঞপ্তিটা কানে ভেসে এলো।১০বছরের ছোট্ট একটা ছেলে হারিয়ে গিয়েছে।কোথায় একটু মন খারাপ করে ইশ আহারে বলবো তা-না,ফিক করে হেসে দিলাম।জানি কাজটা ঠিক হয়নি কিন্তু কি করব?ছোট বেলায় আমারো হারিয়ে যাবার স্মৃতি আছে।যদিও হারিয়ে যাবার ব্যপ্তিকাল কয়েক মিনিটের বেশিনা।তবুও প্রচণ্ড ঘাবরে গিয়েছিলাম যা এখন মনে পড়লে হাসি পায়।
তখন আমি খুব ছোট,বয়স তিন কি চার।আমার আম্মুর নানা তখন মারা গিয়েছিলেন।তার চল্লিশার আয়োজন গ্রামের বাড়িতে হয়।আমরা সব আত্নীয়রা সেখানে গিয়েছিলাম।তিন চার দিন ছিলাম।আমার আম্মুর নানার ছিলো ৭মেয়ে আর ১ ছেলে।সেই সুত্রে আমাদের আত্নীয়ও অনেক।আর আমাদের আত্নীয়তার বন্ধনও অনেক দৃঢ়।আমার নানীরা সাত বোন-ই আমার কাছে আপন নানুর মত।একদিন খুব সকালে আমি আমার ছোট নানাভাইয়ের সাথে হাটতে বের হয়েছি।হাটতে হাটতে আমরা বাড়ির পাশেই একটা মাঠে গেলাম।মাঠটা ছিলো গ্রামের মসজিদের পাশে।গ্রামের মুরব্বিরা সেখানে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন।ছোট নানাভাইও তাদের সাথে যোগ দিলেন।আমি ছোট্ট মানুষ,কতক্ষণইবা বড়দের গল্প ভালো লাগে।এদিকে নানাভাইয়ের গল্প আর শেষ হয়না আর আমারও আম্মুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো।কি করি!কেমন যেন কান্নাও পেয়ে যাচ্ছিলো।ভাবলাম বাড়িটাতো কাছেই,একাই চলে যাই।তাই নানাভাইয়ের আজান্তে একাই রওনা দিলাম।বাড়ির কাছাকাছি এসে আমার মনে হচ্ছিলো আমি পথ হারিয়ে ফেলেছি।কারণ প্রতিটা ঘরই আমার কাছে একি রকম দেখতে লাগছিলো।এভাবে ঘুরতে ঘুরতে আমি একটা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলাম।আমার কান্নার শব্দ শুনে আমার ভাইয়া বাড়ির বাইরে এসে আমাকে কোলে করে বাড়ির ভেতরে নিয়ে গেলো।সবাই এসে আমাকে আদর করে জিজ্ঞেস করছে কাঁদছি কেন।আমি তখনও কাঁদতে কাঁদতে বলি আমি হারিয়ে গিয়েছি।আমার কথা শুনে সবাই আমাকে সান্তনা কি দেবে হাসতে হাসতে একেক জনের চেহারা লাল হয়ে গিয়েছিলো।
আরেকবারের ঘটনা।তখন আমি ক্লাস ফোরে পরি।সেসময় আমার আপন মামা ফ্যামিলিসহ বিদেশ থেকে আসে।আমারো টার্মিনাল পরীক্ষা শেষ।সুতরাং সবাই মিলে একসাথে নানুবাড়ি যাচ্ছি।ফূর্তির শেষ নাই।কমলাপুর রেলস্টেশনে।কয়েকটা পথশিশু খেলছে।আমি তাদের খেলা দেখতে দেখতে তন্ময় হয়ে গিয়েছি।হঠাৎ ট্রেনের হুইসেলে আমার ধ্যান ভাঙ্গলো।দেখি সবাই ছুটোছুটি করে ট্রেনে উঠছে।এখুনি ট্রেন ছেড়ে দিবে।অথচ কোথাও আমার চেনা মুখ নেই।কি করি!আমার কান্না পেয়ে যাচ্ছে।আমার মনে হচ্ছিলো আমি এবার সত্যি সত্যিই হারিয়ে গিয়েছি।একটু দূরেই দেখি দুইজন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে।আমি কোনো রকমে কান্না চেপে রেখে সেখানে গিয়ে বলি-"পুলিশ ভাই পুলিশ ভাই আমিই হারিয়ে গিয়েছি"।বলেই ভ্যা করে কেঁদে দেই।সাথে সাঠে পিছন দিক থেকে একটা হ্যাচকা টান।তাকিয়ে দেখি আশফাক মামা (আম্মুর কাজিন) আর ভাইয়া।ওদের সাথে কোনো রকমে ট্রেনে উঠি।আর সাথে সাথে ট্রেনও ছেড়ে দিলো।কোনো রকমে সিটে বসলাম।দেখি আম্মুর অবস্থাও কাহিল আমাকে হারিয়ে।যাহোক সবাই আমাকে দেখে রিল্যাক্স হল।বরং ততক্ষণে সবাই হাসি শুরু করলো,আম্মুও:D ।আর আমি সারা পথ লজ্জায় চুপচাপ বসে ছিলাম।সেদিন ঘটনাটা আমার প্রেস্টিজে খুব লাগলেও এখন মনে হলেই হাসি পায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৬
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×