পিটিয়ে মানুষ মারার প্রথা বাংলাদেশে কবে থেকে শুরু হয়েছে তা গুগলে সার্চ করে সময়কাল পাওয়া যায়নি। তবে বর্তমান সময় এবং গত দুই দশক ধরে এর একটা ধারাবাহিকতা রয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। খবরের শিরোনামের ভেতরের বিস্তারিত লেখায় যা দেখা যাচ্ছে ঢাবির ঘটনায় পতিতদলের অংশ হিসেবে উল্লেখ “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের একজন ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগী নেতা, অন্যদের রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।”
দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা, তীব্র ক্ষোভ
এখানে কি ক্ষোভ থেকে এমন হচ্ছে। না ছাত্রদের প্রতি দেশের সাধারণ জনগণের যে ভালোবাসা ও আস্থা তৈরি হয়েছে তা থেকে মানুষের আবেগকে অন্যদিকে ধাবিত করার জন্য এই আয়োজন করে যাচ্ছে পতিতদলের একটা মহাপরিকল্পনার লক্ষ্যকে সামনে এগিয়ে নেওয়া প্রয়াসে। যদি তাই হয় তবে দ্বিতীয় স্বাধীনতা নিয়ে যারা গর্ব করছেন তাদের জন্য একটা বার্তা হতে পারে। তারা যদি বার বার এমন ফাঁদে পা দেন তবে সামনের দিনগুলোতে সাধারণ জনগণ কি আপনাদের পাশে থাকবে। বরং পতিত শক্তি পুনরায় সগর্বে ফিরে আসবে। সর্তক ও সজাগ না হলে এই স্বাধীনতার অর্থবহ হবে না। অথবা ২য় স্বাধীনতা আপনারা ধরে রাখতে পারলেন না।
পর্যালোচনা অনেকভাবে করার সুযোগ আছে-একটা ধারাবাহিকতা আছে, এখানে তাদের কিছু বঞ্চিত লোক থাকতে পারে, প্রতিবন্ধী ও অসহায় থাকতে পারে। তাদের দিয়ে মানুষের আবেগকে পুঁজি করে একটা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের এক ধাপ এক ধাপ করে এগিয়ে নেয়া যায় তাই তারা করতে পারে। কারণ তারা নিজেদের মধ্যে নিজেদের নিঃশেষ করে দিতে পারে। কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে চর্চায় তা আছে। আমরা তর্কের খাতিরে অনেক কিছু বলতে পারি তবে তা যুক্তির নিরিখে যাচাই করা প্রশাসনের দায়িত্ব।
কিছু প্রেতাত্মা থেকে যাবে তারা এমন কিছু করে একটা সহানুভূতি নেওয়ার চেষ্টা করবে। একটা সময় হয়তো এটা প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা থাকবে পূর্বেই ভালো ছিল। আগে এতো বিশৃঙ্খলা ছিল না।
ধারাবাহিকভাবে কেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হচ্ছে- মানুষের মোটিভ বিশ্লেষণ করে জনগণের ভালোবাসার জায়গা থেকে ছাত্রদের আলাদা করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হয়ে গেল। নাকি ছাত্রদের কেউ ব্যবহার করতে পারছে না। বা ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। এমন দ্বন্দ্ব কি তৈরি হচ্ছে।
বর্তমানে দেশটা যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাতে সাবার সমানভাবে অংশগ্রহণ না থাকলে একটা স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু এবারের জেগে উঠার পর যদি বাংলাদেশ ঘুমিয়ে যায় তবে তার ফলাফল কি সিকিমের পরিণতি নিয়ে আনবে তা আমাদের জানা নেই। একটা স্বাধীনতার পর কেন ভয় আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছে। সেই ভয়টাই হলো মব জাস্টিস। সবার সর্তক থাকা প্রয়োজন। যারা যেসকল ছাত্র এই ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত তাদের শাস্তি চাই। আমাদের চাওয়া টুকু যেন চাওয়ার মধ্যেই দাড়ি হয়ে না যায়। তার বাস্তবায়ন চাই। স্থিতিশীলতা চাই। অন্যায় চাই না।
”ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একই দিনে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম (এফ এইচ) হলে চোর সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেন একদল শিক্ষার্থী। আর জাহাঙ্গীরনগরে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে কয়েক দফা মারধর করে হত্যা করা হয়। এ দুটি ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের একজন ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগী নেতা, অন্যদের রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের চার নেতা-কর্মীসহ কিছু শিক্ষার্থী জড়িত বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহসান লাবিবকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে এবং ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এদিকে খাগড়াছড়িতে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে মোহাম্মদ মামুন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ভোরের এ ঘটনার জের ধরে গতকাল দীঘিনালায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ আল মাসুদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন জায়গায় ‘মব জাস্টিস’ (উচ্ছৃঙ্খল জনগোষ্ঠীর বিচার) চলতে দেখা যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে।”