দেশের বিচার বিভাগ ও সরকার যেখানে অপরাধীদের কিছু করতে পারে না সেখানে র্যাব ঐ সমস্ত অপরাধীদের ধরে ক্রসফায়ার করায় জনগণের মনে যে খুশীর বন্যা বইছিল তা বলার মত না। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একাগ্র নিষ্ঠটা, আত্মত্যাগ, স্বদেশপ্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। একশত চোদ্দটি (১১৪) বিশেষ শর্ত দিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নের আবির্ভাব। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী,বিমানবাহিনী, পুলিশের মাধ্যমে যৌথ ভাবে গঠিত হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন। ক্রসফায়ার, এনকাউন্টারসহ বিভিন্ন অপারেশন বাংলাদেশী জাতির জন্যে এন্টিবাটিকের মত কাজ করছিল। কিন্তু এই এন্টিবাটিক যখন বিষে রুপ নেয় তখন অভাগা জাতির সয়ে সয়ে বুকে গুলি নিয়ে নেয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।
র্যাবের প্রতি আমার প্রথম ঘৃণা জন্ম নেয় একদিন আমি এয়ারপোর্ট রোডে কাওলা থেকে আসছিলাম রাস্তায় এক সি,এন,জি ড্রাইভার এক লোকের পা ধরে বার বার আকুতি জানাচ্ছে। বিষয়টা আমার খুব ইন্টারেসটিং লাগলে আমি রিক্সা ছেড়ে দেই আর তাদের পাশে এসে দাঁড়ালাম। যা দেখতে পারলাম তা হচ্ছে জিনস আর সার্ট পরিহিত ব্যাক্তি যিনি এক আর্মি অফিসার। তিনি সদ্য আফ্রিকার কোন দেশ থেকে জাতিসংঘের মিশন ফেরত আর র্যাবে নতুনভাবে যোগ দিয়েছেন। সেখানে যা হয়েছিল সেই কুলাঙ্গার অফিসার রাস্তায় এক সি,এন,জি ড্রাইভারকে ওভারটেক করতে চাচ্ছিল আর সাইড না পাওয়ায় সে সেই সি,এন,জি ড্রাইভারকে এমন কিছু গালি দিচ্ছিল তাতে আমার মনে হচ্ছিল যে সে মানুষ না সে মানুষের মুখোশ পড়া কোন জন্তু যার মুখোশ সরালে হয়ত বেরিয়ে পড়বে কোন কুকুর বা হায়েনার ভয়ালো প্রতিচ্ছবি। একজন এডুকেটেড আর্মি অফিসারের মুখ থেকে কিভাবে এরকম গালি বের হয় তা ভাবার বিষয় বটে। সি,এন,জিতে বসা দুই আরোহীও বারংবার মাফ চাইছিল কিন্তু আমি কোন দোষ খুজে পাচ্ছিলাম না। একটু পরে সেই কুলাঙ্গার বাংলাদেশ জনগণ প্রদত্ত ক্ষমতার প্রয়োগ করলো আর মোবাইলে র্যাব-১ ফোন করলো আর কিছুক্ষণের মধ্যে হোন্ডা ও গাড়ি নিয়ে আরো কিছু কুলাঙ্গার র্যাবের উপস্থিতি বাড়ল। বাড়ল অযথা ধমক এবং অন্যায় অত্যাচারের স্ত্রিম রুলার। এটা আমার দেখা জুলুম ও অত্যাচারের একটি চিত্র। এরকম হাজারটা চিত্র আছে ও কাহিনী আছে এই বাহিনীকে কেন্দ্র করে।
শিল্পী হায়দার আলীর একটা গানে তিনি বলেছেন "প্রান নিতে নয় প্রান দিতে গর্জে উঠুক হাতিয়ার ভঁয়ে কম্পিত ভীত শঙ্কিত অত্যাচারীর অত্যাচার" সেখানে আমি মনে করি আমাদের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নের বর্তমান অবস্থান ঠিক উল্টো। তাদের হাতিয়ার প্রান দিতে নয় বরং অপামর জনতার প্রান নিতে জালিমের ভূমিকায় বারবার তাদের হাতিয়ার গর্জে উঠেছে। তার সবচেয়ে উদাহরণ লেমনের ঘটনা ও গতকালের পত্রিকায় ছাপা পুরাতন ঢাকার দুই যুবক সহ হাজারো অন্যায় বিচার বহির্ভূত হত্যা। এতগুলো কথা বললাম এই জন্যে যে আমি আমার দেশকে ভালোবাসি আর ভালোবাসি দেশের জনগণকে। অপসন্দ করি দেশের মাটিতে অন্যায় ভাবে এক ফোটা রক্ত ঝরাকে আরো অপসন্দ করি স্রেফ ক্ষমতার অপব্যবহার করে এরকম হত্যাযজ্ঞ।
আমার সাথে কে কে আছেন প্লিজ আওয়াজ দিন............
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ৭:১৭