somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদ্যালয়ে বহিরাগতের প্রভাব এবং গভর্নিং বডি

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অরিত্রির আত্বহত্যার পর তার বাবার একটা সাক্ষাৎকার প্রচার হয়েছিল। যেখানে তিনি বলেছিলেন যে, ভিকারুন্নেসা স্কুল কর্তৃক টিসি দেয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন অর্থাৎ সমস্যাটার সমাধান করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তদবীর করছিলেন, তাঁকে প্রভাবশালী একজন কথাও দিয়েছিলেন যে, সমস্যাটা সমাধান করে দিবেন। কিন্তু ইতোমধ্যে অরিত্রি আত্বহত্যা করে বসে। ফলে তার বাবার তদবীর অকার্যকর হয়ে যায়।
বস্তুত, সন্তানের ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য পিতা-মাতার তদবীর নেতিবাচক কিছু নয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তে প্রভাবশালীদের প্রভাব বিস্তার নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
এবিষযে বিবিসি এর 05/12/2018 তারিখের একটি সংবাদ ধর্তব্য। লিংক- https://www.bbc.com/bengali/news-46450516
যেখানে ফারাহ ফাহমিদা নামক একজনের একটি মন্তব্য এরকম “ যারা যোগ্যতা ছাড়া শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে স্কুলের প্রধান হয়, তাদের কাছ থেকে আর কি ভালো আশা করা যায় ’’
এ থেকে স্পষ্ট যে, বেসরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে ইন্টারনাল অনেক বিষয়েই বিদ্যালয়ের বাইরের প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের প্রভাব অনেক। যেটা অবশ্যই নেতিবাচক।
আর বিদ্যালয়সমূহের স্কূল ম্যানেজমেন্ট কমিটি/গভার্নিং বডি/ম্যানেজিং কমিটি এমন ভাবে গঠন করার নিয়ম, যেখানে আর্থিকভাবে প্রভাবশালী স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এসব কমিটিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারে খুব সহজেই।
স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি বিদ্যালয় প্রশাসনকে আরও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করবে ভেবেই হয়তো উক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গকে কমিটি গুলোতে রাখার সিদ্ধান্ত তৈরি হয়েছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এর অপব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়।
আমাকে প্রমান দেখাতে বললে আমি হয়তো প্রমান দেখাতে পারবো না, কিংবা যারা বলেছে তারাও পরে হয়তো স্বীকার করবে না, কিন্তু বিখ্যাত বিদ্যালয়গুলোর অনেকগুলোতেই গভার্নিং বডি বা ম্যানেজমেন্ট কমিটির লোকদের মাধ্যমে টাকা পয়সার লেনদেনের মাধ্যমে বাচ্চা ভর্তি করা যায়, এটা মোটামুটি ওপেন সিক্রেট। আমি আমার সন্তানকে একটা ভালো স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে সেখানে লটারীতে ছেলের নাম আসে নি। কিন্তু আমি দুই জায়গা থেকে দুই লাখের বিনিময়ে এবং এক জায়গা থেকে এক লাখের বিনিময়ে উক্ত স্বনামধন্য স্কুলে ভর্তির প্রস্তাব পেয়েছি। এবং প্রত্যেকটার সোর্সই বিদ্যালয়ের বাইরের প্রভাবশালী মহল।
এখন এই বিষয়ে দুটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।
ক) যুৃগান্তরের 05/12/2018 তারিখের রিপোর্টের (লিংক- https://goo.gl/smcEmZ) একটা অংশে ভিকারুন্নেসার ভাইস প্রিন্সিপালের ভাষ্য ছিল “আমরা ওর ব্যাপারে গভর্নিংবডির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।”
অর্থাৎ, বর্তমানে যে ধরনের গভর্নিং বডির ব্যাখ্যা আছে সেই বডি এই ধরনের সমস্য সমাধানে পারফেক্ট না।
খ) আমার বসবাসের এলাকায় একটা স্বনামধন্য বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে এমন একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন, যার কি-না বিদ্যালয়ের ডিচিশন মেকিং এ নূন্যতম যোগ্যতা থাকার কথা না। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অশিক্ষিত কিন্তু স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী উক্ত ব্যক্তি তার প্রভাবের কারণে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
কিন্তু বিদ্যালয় গভর্নিং বডিতে থেকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করতে নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেয়া উচিৎ ছিল। নয়তো সে কিভাবে বুঝবে যে বিদ্যালয়ে বেত ব্যবহার করা অনুচিত। একথা বলছি একারণে যে অনেক অভিভাবক মনে করেন যে শিক্ষার্থীকে মারা বা কড়া শাসন করা যুক্তিযুক্ত। শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়ে অভিভাবক বা স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের অনেকেই ওয়াকিবহাল না। তাই গভর্নিং বডির ফরম্যাট পরিবর্তন এবং বহিরাগতদের প্রভাব কমানো জরুরী।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×