
২০০৪ এ একবার গিয়েছিলাম সেখানে। জানুয়ারী ২০১২ তে আরেকবার গেলাম বউ-বাচ্চাসহ। ফিরে এসে কিছুটা লিখে ফেললেও ফাইলবন্দী (হার্ডডিস্ক-বন্দী) হয়েই পড়ে ছিল এসব। শরতের শেষে সেই পুরান স্মৃতি চাগান দিতেই মনে পড়ল সাগরে যাবার ডাক তো প্রায় এসে গেল। কারো যদি কাজে লাগে এই চিন্তায় হার্ডডিস্ক থেকে অবমুক্ত করলাম আমার সেন্টমার্টিন ভ্রমন কাহিনী আর সেই সাথে এর কিছু ম্যাপ।

ছবিসূত্রঃ বাংলাপেডিয়া
{বাংলাপেডিয়া থেকে সংগৃহীত ঊপরের এই ম্যাপে শাহপরীর দ্বীপকে শাহৌরি দ্বীপ লেখা আছে কেন বুঝলাম না। বর্তমানে এখানে বি.ডি.আর এর কোন ক্যাম্প অবশ্য নেই।}
যাবার আগেঃ
সেন্ট মার্টিন যাবার আগে অনেকেই প্রশ্ন করে কি আছে সেখানে, কোথায় থাকবে, কোথায় ঘুরবে, নিরাপত্তাই বা কেমন। প্রথমতঃ বলা যায় সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তা সম্ভবতঃ বাংলাদেশের অন্যান্য সকল অঞ্চলের থেকে কিছুটা হলেও ভাল। পত্রিকা, কিম্বা ব্যক্তিগতভাবে কারো কাছেই কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা আমি শুনিনি। আর এমনিতে এখানকার মানুষগুলো অনেকটাই ধর্মভীরু। অসংখ্য জায়গায় মসজিদ মাদ্রাসার জন্য চাদা চাওয়াটাই যা একটু বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে। আরেকটা প্রবলেম কুকুরের আধিক্য।

৫১০০০ ফুট উপর থেকে গুগল ম্যাপের এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সেন্টমার্টিন আর ছেড়া দ্বীপের পাশে সাগরের গভীরে প্রবালের স্তর।
বড় করে দেখতে চাইলে View this link
আমি কোথাও যাবার আগে সেখানকার নাড়ি-নক্ষত্র নিয়ে কিছুটা Study করি। সবচেয়ে বেশি করি ম্যাপ আড় হোটেল ফ্যাসিলিটি নিয়ে। কম সময়ে সর্ব্বোচ্চ জায়গা কিভাবে cover করা যায় সেটা একটু সাজিয়ে নেই। আর বেছে নেই কোন ওয়ার্কিং ডে। কারন ভীড়-ভাট্টা আমার একদম পছন্দ হয় না।
এবারও ঘেটে ঘেটে বের করলাম এসব কিছু। এসব না জেনেই অনেকেই ভ্রমন করতে শুরু করেন আর শুধু নিজে যে বিনোদন লাভ করেন সেটাই না অন্যকেও বিনোদিত করেন। যেমন যখন আমাদের জাহাজ নাফ নদীর নেটং এর কাছ থেকে ছেড়ে দিল তার একটু পরেই একজন মহিলা মোবাইলে চেচিয়ে বলতে লাগলেন, “হ্যা হ্যা... আমরা ফেরীতে সাগরপাড়ি দিচ্ছি”।

নাফ নদীতে
প্রকৃত ব্যাপার হল জাহাজ (বা লঞ্চ) নাফ নদী দিয়েই প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সময় চলে। এরপর শাহপরীর দ্বীপ যেটা বাংলাদেশের ভূখন্ডের সর্ব দক্ষিনের প্রান্ত সেটা পার হয়ে সাগরে আরো কয়েক কিলো পাড়ি দিয়ে তবে পৌছায় সেন্টমার্টিন বা নারিকেল জিঞ্জিরায়। (প্রথম ম্যাপটা দেখলে পরিষ্কার বোঝা যাবে)
লাইট হাউজ হিসাবে যেটা আছে ওটাকে দেখলে মোবাইল টাওয়ার ছাড়া আর কিছুই ভাবা দুষ্কর।
এবারে আসা যাক আসল প্রসঙ্গে-
যাবার আগে আরো কিছু সামু ব্লগ থেকে সহায়তা পেয়েছিলাম। সেখনে হোটেলের ফোন নম্বর, নিজেদের অভিজ্ঞতা এসব পেলেও নেটে কোথাও যেটা পাইনি তা হল হোটেলের লোকেশন ম্যাপ। এমনকি এসব হোটেলের নিজস্ব ভাল কোন ওয়েবসাইটও নাই, সেখানে ম্যাপ থাকা তো দূরের কথা।
প্রাসাদ প্যারাদাইস আর সমুদ্র বিলাস নিয়ে একট সাইট পেলাম- View this link
ব্লুমেরিন নিয়ে ওয়েবসাইটের দৈন্যতা বিষ্ময়কর।
অবকাশ পর্যটন নামে যে হোটেল সেটা আসলে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর অবকাশ নয় (এরা এই নাম ব্রান্ড করল কিভাবে ঠিক বুঝতে পারছি না।) । এদের হোটেলের সামনে পশ্চিমের বীচটা পাওয়া গেলেও হোটেলের খুব দূরাবস্থা। একমাত্র নীল দিগন্তের খুব ভাল কিছু পিক পাওয়া যায়।
কিন্তু এসবের কোনটাতেই কিন্তু বোঝা যাবে না দ্বীপের কোথায় এদের অবস্থান।
কাজেই ফিরে এসে গুগল আর্থের ছবিতে নিজেই হোটেল লোকেশন বসিয়ে একটা ম্যাপ দাড় করালাম। প্রসিদ্ধ রিসোর্টের মধ্যে একমাত্র নীলদিগন্ত আমি আইইডেন্টিফাই করতে পারি নি (ব্লগারদের সাহায্য চাই)

বড় করে দেখতে হলে নিচের থাম্বনেইল ছবিতে ক্লিক করুন
অথবা এই লিঙ্কে
জাহাজ থেকে নামার পরঃ
দ্বিতীয় পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:১৩