দেশে এক কোটি নতুন ভোটারের সংখ্যা বাড়ছে। অর্থাৎ আরও এক কোটি তরুণ ভোটার হচ্ছে। এই এক কোটি তরুণের মানসিক গঠন ও চিন্তার সঙ্গে আমাদের সঠিক অর্থে পরিচয় নেই। কারণ, এ কথা নিশ্চিত বলা যায়, এই এক কোটি তরুণের সকলেই সেলফোন ব্যবহার করে। বাংলাদেশে যে ১০ কোটি লোক সেলফোন ব্যবহার করে তার ভেতর এই এক কোটি তরুণ। এই এক কোটির একটি অংশ ফেসবুকের সদস্য। ইন্টারনেটের সঙ্গে পরিচয় আছে বড় একটি অংশের। এই এক কোটি তরুণের আশি ভাগ বর্তমান দিনের গান শোনে। এদের অধিকাংশেরই অনেক বিদেশী টিভি চ্যানেল দেখার সুযোগ হয়। এদের ভেতর একটি ক্ষুদ্র অংশ হলেও তারা বিদেশী কারিকুলামের ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রছাত্রী। অন্যদিকে এই এক কোটি তরুণ প্রজন্ম যখন বেড়ে উঠছে তখন গ্রাম ও শহরের দূরত্ব কমে গেছে। দূরত্ব কমে গেছে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের। তাই এদের মনোজগত আলাদা হবেই। এদের প্রকাশের ভঙ্গিমা ও ভাষা আলাদা হবে। এমনকি এদের ভালোবাসার রঙও ভিন্ন। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের এই পার্থক্যই কিন্তু মানব প্রজাতিকে এগিয়ে নেয়। যে মানব গোষ্ঠী যত বেশি দ্রুত এমনি পরিবর্তিত হতে পারে ও পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারে তারা তত বেশি দ্রুতই এগিয়ে যায়। আর আধুনিক রাষ্ট্র সৃষ্টির মূলে যে বিষয়গুলো কাজ করে তার একটি অবশ্যই মানব প্রজন্মকে এই এগিয়ে যেতে সাহায্য করা। যে রাষ্ট্র যত বেশি সঠিকভাবে এই এগিয়ে যাওয়াকে সাহায্য করতে পারবে ওই রাষ্ট্র ততই তার সঠিক মানব সম্পদ গড়তে পারবে। পাশাপাশি এটাও বলা যায়, রাষ্ট্র তত বেশি নতুন প্রজন্মের সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার যে এই এক কোটি নতুন ভোটারের বা এক কোটি তরুণ প্রজন্মের খুব সহায়ক একটি সরকার তা বলার কোন পথ নেই। কারণ, প্রত্যক্ষভাবে এই তরুণ প্রজন্মের জন্যে কাজ মন্ত্রণালয়গুলো হলো, তথ্য ও সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং নারী ও শিশু। এই তিনটি মন্ত্রণালয়ই বর্তমান সরকারের ব্যর্থ মন্ত্রণালয়গুলোর শীর্ষে। এই তিনটি মন্ত্রণালয় নেই বললেই মনে হয় সব থেকে সত্য কথাটি বলা হয়। এই যে এক কোটি নতুন ভোটার হতে যাচ্ছে এবার; বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন এই এক কোটি তরুণের বয়স কত ছিল? তাদের সকলের বয়স ছিল পনেরো বা তার কাছাকাছি। এই এক কোটি তরুণ সকলেই টেলিভিশন দেখে, রেডিও শোনে। একটা বড় অংশ পত্রপত্রিকা ও বই পড়ে। আমাদের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কি গত তিন বছরে এমন কোন ধারাবাহিক উদ্যোগ নিয়েছে যার মাধ্যমে এই তরুণদের আধুনিকতার পথে আনতে সহায়ক হবে প্রচার মাধ্যম। সরকারের হাতেও বড় প্রচার মাধ্যম আছে। সেখানেও কি কোন কাজ হয়েছে? অথচ এটা ছিল এই রাষ্ট্রের তরুণদের জন্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অনিবার্য কাজ। কারণ, একটা বিষয় মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশ শুধু নয়, গোটা পৃথিবী এখন একটি কঠিন সময় পার করছে। সত্যি কথা বলতে কি এই সময়ে প্রতিটি মানুষকে একটি সূক্ষ্ম সুতোর ওপর দিয়ে চলতে হচ্ছে। এর এক পাশে উদারনৈতিক জগতের পথ অন্যপাশে গভীর কালো মৌলবাদের খাদ। এর মাঝখানে কোন জায়গা নেই। যে ষাটের দশকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন, জাতীয়তাবাদের আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছিল ওই সময়ে কিন্তু মানুষকে এত সূক্ষ্ম সুতোর ওপর দিয়ে হাঁটতে হয়নি। কারণ সে সময় পথ ছিল অনেক, খাদ ছিল কম। যেমন সে সময়ে তরুণের সামনে সমাজতন্ত্রের আদর্শ ছিল, উদার গণতন্ত্রের আদর্শ ছিল, বুর্জোয়া গণতন্ত্রের আদর্শ ছিল। মৌলবাদীরা ছিল অনেক দূরে ক্ষীণ স্রোত রেখার মতো। আর কোন জাতীয় ক্রাইসিসে, সমাজতন্ত্রী, বুর্জোয়া গণতন্ত্রী ও উদার গণতন্ত্রী কিন্তু একই পথ রেখায় আসতে পারে। কিন্তু মৌলবাদের খাদে একবার কেউ পড়ে গেলে সেখান থেকে তার উঠে আসা কষ্ট। অসম্ভবই। এমনি একটা কঠিন সময়ে আমাদের তরুণরা বেড়ে উঠছে। তাই গত তিন বছরে এই এক কোটি তরুণকে মাথায় রেখে তাদের কাছে আধুনিকতার তথ্য পৌঁছে দেয়া কতটা দরকার ছিল তা আমাদের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বার ভেবেছে এমন কোন ছাপ তাদের কাজের ভেতর দিয়ে পাওয়া যায়নি। এবং গত তিন বছরে তথ্যমন্ত্রীর যে দক্ষতা (!) দেখা গেছে তাতে এগুলো ভাবা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এখনও যদি এই এক কোটি তরুণ ভোটারকে আধুনিকতার পথে রাখতে সার্বিক কাজ করতে হয় তাহলে অবিলম্বে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আধুনিক মানুষ দরকার। মনে রাখা দরকার ফসিল শুধু গবেষণাগারে লাগে। তার দ্বারা নতুন কোন কাজ হয় না। ঠিক তেমনিভাবে এর দায়িত্ব ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের। এই মন্ত্রণালয়ও তরুণদের আধুনিক চেতনামুখী করতে পারে। কিন্তু সেখানেও কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি। বরং এক রাশ ব্যর্থতা। আর যারা আঠারো বছরে ভোটার হচ্ছে তারা ষোলো বছর অবধি শিশু। এ সময়ে তাদের দেখভালের দায়িত্ব শিশু মন্ত্রণালয়ের। সকল শিশু অর্থাৎ যারা আজ ভোটার হতে যাচ্ছে তাদের সকলকে সম্মিলিতভাবে আবার নারী শিশু মন্ত্রণালয় হিসেবে নারী শিশুদের আলাদাভাবে আধুনিকতার পথে নিয়ে যাবার অনেক কাজ করতে পারে এই মন্ত্রণালয়। কারণ তাকে মনে রাখতে হবে, আমার হাত দিয়েই আগামী ভোটাররা তৈরি হচ্ছে। তারা যদি আধুনিক হয়, তবেই রাষ্ট্র আধুনিকভাবে চলবে অন্যথায় রাষ্ট্র ভিন্ন পথে যাবে। আর সেটা যে হয় তার উদাহরণ আমরা প্রতিমুহূর্তে দেখছি আমাদের চারপাশে। আমরা দেখতে পাচ্ছি নেপালের কমিউনিস্ট নেতা প্রচ- কপালে সিঁদুর মেখে ক্ষমতায় গিয়েছিল। আদভানীর ওই সিঁদুর তাকে উদার রাষ্ট্র গড়তে শক্তি জোগাতে পারেনি। অন্যদিকে যদি তরুণদের দেখি তাহলেও তো দেখতে পাই, রথ যাত্রার নেতা আদভানীর পাশে ষোলো বছরের তরুণ ছেলে কপালে সিঁদুর আর গৈরিক পাগড়ি মাথায় নিয়ে মনের মধ্যে নরহত্যার উগ্রতায় ফুঁসছে। ঠিক তেমনি গত ১২ মার্চ চারদলীয় জোটের মহাসমাবেশের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম সেখানে ষোলো বছরের তরুণ গোলাম আযম, সাঈদীর ছবিসংবলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে ঘুরছে। তাকে যদি সত্যি সত্যি বোঝানো যেত, তুমি যে সাঈদীর ছবি নিয়ে ঘুরছ সে এক জন ধর্ষণকারী। একাত্তরে নিজে ধর্ষণ করেছে। যার স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে সেই এসে কোর্টে বলে যাচ্ছে। তাকে এই সত্য বোঝাতে পারলে সে নিশ্চয়ই ছুড়ে ফেলে দিত সাঈদীর ছবিসহ প্লাকার্ড। তেমনিভাবে গোলাম আযমের ছবিসহ প্লাকার্ড বহন করছে, এই শিশুদের জন্য প্রয়োজন ছিল নতুন পথ জানানো। অথচ নারী শিশু মন্ত্রণালয় মনে করে তাদের কাজ বেলুন ওড়ানো আর দিবস পালন করা। বাদবাকি সময় রাষ্ট্রীয় সুযোগসুবিধা ভোগ করা। তাদের দায়িত্ব কি, কাজ কি, শিশুদের তাদের কোথায় নিয়ে যেতে হবে এ সম্পর্কে তাদের কোন চিন্তাভাবনা নেই। এবং গত তিন বছরে তারা যে যোগ্যতা দেখিয়েছে তাতে তাদের কাছে আশা করারও কিছু নেই। তাই নতুন এই এক কোটি ভোটারকে যদি প্রগতির পথে রাখতে হয় তাহলে সরকারকে অবিলম্বে এই তিন মন্ত্রণালয় নিয়ে ভাবতে হবে। পরিবর্তন আনতে হবে এখানে। সংযোগ করতে হবে আধুনিক চিন্তা ও দক্ষতার।
অন্যদিকে সরকার, সরকারী দল এবং রাষ্ট্রের ভেতর এখন একমাত্র নেতা আছেন শেখ হাসিনা যিনি এই তরুণদের জন্যে কিছু উদ্যোগ নিতে পারেন। কারণ বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম জিয়া নিজের সন্তানদের অপরাধ থেকে রক্ষা করার জন্যে এবং ক্ষমতায় যাবার উন্মাদনায় যা করছেন সেটা ভবিষ্যতই শুধু হিসাব দেবে। বর্তমানে অনেকেই এটা বুঝতে চাচ্ছেন না। এই কলামসহ অনেক জায়গাতেই লিখেছি, শিবিরের সঙ্গে ছাত্রদলকে এক করে দিয়ে বেগম জিয়া নিজের সন্তানদের সাপের বিষের ভেতর নিক্ষেপ করেছেন। ১২ মার্চের জনসভায় যখন কিছু তরুণের হাতে গোলাম আযম, সাঈদী, নিজামী এই সব নরহত্যাকারী, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী ও নারী ধর্ষকদের ছবিসহ প্লাকার্ড দেখি তখন সত্যি কষ্ট পাই ওই তরুণদের অধঃপতন দেখে। কারণ, এই যে পনেরো ষোলো বছরের তরুণ এরা তো কেউ রাজাকার বা আলবদর নয়। অথচ এদের আজ নতুন করে রাজাকার বা আলবদর হবার সুযোগ করে দিচ্ছেন বেগম জিয়া। ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে তিনি এ কাজ না করলেও পারতেন। তাতে দেশ একটি সুস্থিরতার দিকে যেত। কিন্তু তা তিনি করছেন না। তাই এই এক কোটি ভোটারকে প্রগতির পথে নিয়ে যাবার শক্তি এখন কোনমতেই বেগম জিয়া নয়, বরং তিনি তাদের মৌলবাদের গভীর খাদে ফেলে দিচ্ছেন তরুণদের নিজের স্বার্থে। এ মুহূর্তে গোলাম আযম, নিজামী ও সাঈদীরা দেশের ও দেশের তরুণদের যে ক্ষতি করছেন তার থেকে হাজার গুণ ক্ষতি করছেন বেগম জিয়া। তাই কোন দলীয় সঙ্কীর্ণতা থেকে নয়, এখন বাস্তবতা স্বীকার করতে হলে বলতে হবে, সমাজ নেতাদের বাইরে একমাত্র রাজনৈতিক নেতৃত্ব শেখ হাসিনাÑ তিনি এই তরুণদেরকে আধুনিকতার পথে রাখার, প্রগতির পথে এগিয়ে নেবার উদ্যোগ নিতে পারেন।
কিন্তু শেখ হাসিনাকে এই সত্য স্বীকার করতে হবে আজ যে এক কোটি ভোটার হতে যাচ্ছে, তাদের মনোজগত আর শেখ হাসিনার মনোজগত এক নয়। শেখ হাসিনার তারুণ্য ষাটের দশকের চিন্তাচেতনায় গঠিত তার থেকে তিনি যে নিজে কিছু এগোননি তা নয়। তারপরেও জেনারেশন গ্যাপকে কেউ অস্বীকার করতে পারেন না। রবীন্দ্রনাথও পারেননি। তাই তাকে তরুণ নেতৃত্ব দিয়েই নতুন এই এক কোটি তরুণকে প্রগতির পথে রাখতে হবে। এবং এখানে তিন কোন পথে যাবেন সেটাই প্রশ্ন। আমরা যদি আমাদের দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই তিনি তরুণ নেতৃত্ব দিয়েই তরুণদের প্রগতির পথে এনেছিলেন। আবার যদি বর্তমান মুহূর্তে আমাদের চারপাশে তাকাই তাহলে দেখতে পাই, বেগম জিয়া তরুণদের গভীর কালো খাদে টানতে চাচ্ছেন তাঁর সন্তানদের দিয়ে। যে সন্তানরা চিন্তাচেতনায় মোটেই আধুনিক নয়। বরং মৌলবাদী। কারণ তারেক রহমান নিজেই বলেছেন, ছাত্র শিবির ও ছাত্রদল একই মায়ের সন্তান। ভারতের সোনিয়া গান্ধী আদভানী, সুষমা স্বরাজ এমনকি মমতা ব্যানার্জীর মৌলবাদীদের চেতনা থেকে দেশের তরুণ সম্প্রদায়কে প্রগতির পথে আনতে চাচ্ছেন তার তরুণ সন্তান রাহুল গান্ধীর মাধ্যমে। সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে রাহুল সফল না হলেও তিনি গত লোকসভা নির্বাচনে তরুণের কাছে আদর্শ ছিলেন। তবে রাহুল যে পুরো প্রগতির পথে হাঁটছেন না বলা যাবে না। কারণ, তিনিও বার বার আপোস করছেন ধর্মীয় মৌলবাদের সঙ্গে। তারপরেও মন্দের ভালোর মতোই তিনি এখন ভারতের তরুণদের জন্যে গভীর কালো মৌলবাদের খাদের বিপরীতে ন্যূনতম প্রগতির একটি পথ। ভারতীয় কংগ্রেস নেত্রী ওইভাবে কোন ছাত্রনেতা তৈরি করছেন না যে হতে পারেন তরুণদের আদর্শ। শেখ হাসিনাও সত্যি অর্থে ওইভাবে কোন ছাত্রনেতা বা নেতৃত্ব তৈরি করছেন না। তিনি সম্প্রতি ছাত্রলীগের যে নেতৃত্ব তৈরি করেছেন এদের দিয়ে কি করানো যায় সেটা গত বারো মার্চ রাজপথে দেখা গেছে। প্রায় সব পত্রিকায় সে সব ছবি ছাপা হয়েছে। এমন নেতৃত্ব বাছাইয়ের জন্যে যে শেখ হাসিনা দায়ীÑ তা কিন্তু নয়। শেখ হাসিনা তাঁর দলের কিছু নেতার ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেতৃত্ব বাছাইয়ের। ওই নেতারা আর যাই হোক বর্তমানের তারুণ্যের বুকের কথা কান পাতলেও শুনতে পান না। তাঁরা এখন অনেক পিছনে পড়ে আছেন। আধুনিক রাজপথ ছেড়ে তাঁরা এখনও অনেক দূরে। তাছাড়া তাঁদের কোটারি স্বার্থ কাজ করে। তাঁরা ভাবতে পারেন না আগামী দিনকে। তাঁদের এই চিন্তার দীনতাই ছাত্রলীগে এই নেতৃত্ব এনে দিয়েছে। তাই আর যাই হোক ছাত্রলীগের এই নেতৃত্ব নতুন যে এক কোটি তরুণ আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালনার সিদ্ধান্ত দিতে আসছে তাদের প্রগতির কথা শোনানোর যোগ্য নয়।
অথচ এই এক কোটি তরুণই কিন্তু আগামী দিনে বাংলাদেশের সরকার সৃষ্টিতে সব থেকে বড় শক্তি। তারা যদি প্রগতির পথে থাকে তাহলে বাংলাদেশ প্রগতির পথে থাকবে। চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক বলয়ের মাঝখানে আরেক নতুন অর্থনৈতিক বলয় তৈরি করতে সমর্থ হবে বাংলাদেশ। আর তারা যদি প্রগতির পথে না আসে তাহলে বাংলাদেশের জন্য এক ভয়াবহ সময় নেমে আসবে। বাংলাদেশ আবার একটি অন্ধকার যুগে প্রবেশ করবে। যেখানে আবার গণহত্যা হবে, আবার নারী ধর্ষিতা হবে। এবং চিরতরে নির্মূল করা হবে বাংলাদেশের সকল প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীকে। তাই এই এক কোটি তরুণ ভোটারকে প্রগতির পথের শক্তিশালী সৈনিক হিসেবে তৈরি করার দায়িত্ব এখন শেখ হাসিনার কাঁধে। এই তরুণদের প্রগতির পথের, আধুনিকতার পথের যোদ্ধা তৈরি করতে তিনি কার হাতে নেতৃত্ব তুলে দেবেন, আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত কোন তরুণ তরুণীদেরকে তিনি কাজে লাগাবেন সেটা তাঁকে এখনই ভাবতে হবে। এখানে তাঁর ভুল করার কোন সুযোগ নেই। কারণ তিনি এমন একটি সময়ে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যে সময় বাংলাদেশের প্রগতি, বাংলাদেশের অর্থনীতি এমনকি বাংলাদেশের অস্তিত্ব একটি সূক্ষ্ম সুতোর ওপর দিয়ে চলছে। এখান থেকে পা পিছলে পড়লেই গভীর খাদ।
অন্যদিকে এ কাজে শেখ হাসিনার হাতে সময় মাত্র একটি বছর আর কয়েকটি মাস। যে সময়ে অনেক বড় ঝড় আসবে। কিন্তু সে ঝড়কে ঝড় ভাবার সময় এখন দেশবাসীর বিশেষ করে প্রগতিশীল শক্তির হাতে নেই। বরং প্রগতিশীল শক্তিকে রবীন্দ্রনাথের ওপর ভর করে বলতে হবে, ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার।
লেখক,সাংবাদিক ও নিয়মিত কলামিস্ট
"তিনটি মন্ত্রণালয় বর্তমান সরকারের ব্যর্থ মন্ত্রণালয়গুলোর শীর্ষে " স্বদেশ রায়।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর


আলোচিত ব্লগ
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান
চাইলে জিয়াউর রহমান ঢাকায় ঝাঁ চকচকে দালান কোঠা রাস্তা বানিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে উন্নয়ন করার বাহাদুরি করতে পারতেন। সেটা না করে তিনি ঘুরতে লাগলেন সারা দেশে, গ্রামে গঞ্জে গিয়ে খাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
জবাবদিহিতার অনন্য দৃষ্টান্ত
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে। সেসব পোস্টে তার বিরুদ্ধে বিপুল... ...বাকিটুকু পড়ুন
আপনি যাত্রা করবেন নাকি রাজনীতি করবেন ?
ইদানীং দেশে রাজনৈতিক দল গজানোর হার দেখলে মনে হয়, দেশের মাটিতে এখন ধান নয়, গজায় দল। ভোট এলেই বুঝি এই দলগুলো দুলে ওঠে, আর না এলেই পড়ে থাকে ফাইলের পাতায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?
আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সুরের জাদু: গিটার বাজালে কি ঘটবে?
গাজীপুরের পুবাইলের পুরনো গির্জাটি রাতের আঁধারে যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই গির্জার নির্মাণকালে কিছু না জানা কুসংস্কারের অনুসরণ করা হয়েছিল। গাজীপুরের লোককথায় বলা হয়, এই গির্জার নিচে আটটি... ...বাকিটুকু পড়ুন