১। মধু বালা......
চাতকের তৃষ্ণার সাদ না জেনেও আক্লেশে বলতে পারি আঁটকে থাকা জলতেস্টা আমার কারো চে কম ছিলনা। মরিচিকায় পথ হারাতে দোষ দেখিনি জলের ছোঁয়া পাব বলে। অথছ আজো আমি তৃষ্ণারত। কন্ঠ পায়নি নিবারন জল। “এ জল হুজুরের যোগ্য”, তার যজ্ঞ তো কবেই হারিয়েছে জপ মালা। তবু বলি আর কত দিন- মধু বালা... মধু বালা......
২। স্বপ্ন দেখিনা...
স্বপ্নের মাঝে দৌড়াতে গিয়ে মাও সে তুং এর দুই পা সামনে তো এক পা পেছানোর তত্ত টের পেয়েছি হাঁড়ে হাঁড়ে। সামনের দাড়ানো আচেনা ভয়ের বিপক্ষে হাত উঠে ত পা উঠে না। ওই তো কাল রাতেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে হঠাৎ হাড় জির-জিরে একটা কুকুর সামনে এসে দাঁড়ালো পথ আঁটকে। হাত বাড়িয়ে কোথা থেকে একটা গাছের ডাল নিয়ে আমায় বাড়ি মারতে গেলো। সরে যাব, তো পা যেন হাজার মন ভারি। লড়াই করে গেলাম মনের সাথে। আবার একই দৃশ্য , তবে এবার আমার হাতে গাছের ডাল। কিন্তু মারতে গিয়ে মনে হল যুগ যুগ পেরিয়ে যাচ্ছে। আকাশে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলাম, হঠাৎ সুতো কেটে গেলো। ছুটছি তো ছুটছি ঘুড়ির পিছে। পথ আর শেষ ই হয়না। একটা খুব ভয়ের সপ্ন দেখে আমি ঘুমের ভেতর ও কেঁপে কেঁপে উঠেছি।
আমাদের গ্রামের বাড়িতে একটা বিশাল কড়ই গাছ ছিল। অন্ধকারে আমি ধিরে ধিরে ওই গাছের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, দেখলাম গাছের বিশাল ডাল গুলোতে কালো কিম্ভুতাকার কত গুলো হাতি আমার দিকে তাকিয়ে আছে, তাদের দৃষ্টি দিয়ে আমায় যেন এক আদৃশ্য টান এ বেঁধে রেখেছে। পা দিয়ে মাটিতে নিজেকে জোর করে আঁটকে রাখতে আমার ঘাম ছুটে যাচ্ছে। কিছুতেই নিজেকে আটকাতে পারছিনা। কি যে অসহায় লাগছিল! মনে মনে দোয়া দরুদ পড়ছিলাম(!)। যতক্ষণ দোয়া পড়ি, টান এড়িয়ে থাকতে পারি, দোয়া শেষ হলেই আবার সেই আদৃশ্য টান। সে কি ভয়ঙ্কর অনুভূতি!
মোটর সাইকেল এর প্রতি দূর্বার আসক্তি ছিল আমার। কত হাজার বার দুরন্ত গতিতে ছুটে গেছি সপ্নের পথ ধরে শাঁই শাঁই করে! আর যে স্বপ্নটি বার বার দেখতে চাইতাম, তা হল আমি সুপার ম্যান এর মত আকাশে উড়ছি। পালকের মত হাল্কা শরীর নিয়ে উড়ে যাচ্ছি গাছেদের উপর দিয়ে, গিয়ে বসছি কারেন্টের তার এর উপর (সম্ভবত পাখিদের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে) । মাঝে মাঝে ডানার মত করে হাত ঝাপটাতাম। কখনো বা এম্নিই ভেসে যেতাম হাওয়ায় ভর করে।
স্বপ্নে সঙ্গম করেছি কতবার, হিসেব কে রাখে? তবে বেশিরভাগ ই মাঠের আশপাশে দৌড়াদৌড়ি করেই বল শেষ (বলতে কিঞ্চিত লজ্জাই লাগছে)। সেদিনের কথা না বললেই নয়। ধব ধবে সাদা বিছানার চাদর, তুলতুলে নরম বিছানায় পা দেবে যায়। এর মাঝে ফর্সা কি তুলতুলে নরম শরীরের এক শেতাঙ্গ নারী আমার বিছানায়! আমাকে আহ্বান করে যেন তার কত চেনা। আমি ডুব দেই তার ভেতরে। প্রতিটা মুহূর্তে আমি অনুভব করছিলাম মাখনের মত নরম কিছু ভেদ করে আমি প্রবেশ করছি। জাগরনে বহু নারীর মাঝে আমি ওই স্বাদ ই খুঁজেছি ।
তারপর একদিন হারিয়ে যেতে শিখলাম। নিবিড় নিঃঝুম অন্ধকারে ডুব দিয়ে আরো গভীর বেদনার কালো নীল সবুজাভ চাদর ক্রমাগত দু হাতে সরিয়ে হাচড়ে পাচড়ে আলো খুজতে গিয়ে দেখলাম সামনে হারিকেনের নিভু নিভু আলোয় ক্রোধোন্মত্ত দুটি চোখ। হতাশা আর যুগপত ঘৃণা নিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো মুখটা। হুরমুর করে উঠে বসলাম। ঐ চোখগুলো... খুব চেনা... । ঠিক যেন আমারই চোখ, মুখটাও। সেই থেকে ঘুমুতে গেলে ভয়ে থাকি, কবে আবার সামনে এসে পড়ে হতচ্ছাড়াটা ।
৩। রযাবো............
হয়তোর ছায়ায় যে অন্ধকার আছে, তার সৌন্দর্য , রঙ দেখেছেন র্যা বো। তাই তিনি স্বর-বর্ণে রঙ করেছেন ইচ্ছে মত। অদেখা, ঝাপসা কিংবা অন্ধকারের সকল গলি- শিকড় চেনার জন্য ছুটেছেন প্রতিটি লভ্য কনায়। কিছুতেই পাপকে দেখেননি। আর পাপকেও দেখেননি পাপের রঙ এ। মের্লিন হয়ে পিতা শয়তান আর নরককে ভালবেসেছেন মায়ের ভালবাসার সর্গের চেয়ে ও বেশি। নিজেকে ভালবেসেছেন তীব্র উচ্ছাসে। কানে কানে বলে গেছেন-“হুদাই...”। আসলেই, হুদাই।
৪। সময় কথন-১
অতঃপর চলে যাবো সেই স্থবিরতার দেশে।
ক্লাউন বেশে আর কতোকাল বইবো বলো
মিথ্যে অহঙ্কার ,
হায় সংসার ,
আর কতোকাল মনের মাঝে চোখের ঠারে বলবো সখা চলো।
চোখের পাতা বন্ধ করে খোলার আগেই শীতের প্রকোপ
চারা গাছের পাতা শুকোয়।
কাঠ কিংবা লাকড়িও নয় ।
আন্তঃনগর ট্রেনের মতো বয়ে বেড়াই হাজার কথন
যাত্রীরা সব ডেরায় ফেরে আমিই কেবল পুরান ষ্টেশন।
ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় চোখ জ্বলে যায়
বুকটা জ্বলে কিসের থাবায়?
বাড়ার আগেই শীতের প্রকোপ
চারা গাছের কুঁড়ি শুকায়!!!!
৫। মিষ্টি আগুন
ও চাঁদ, বিছানাটাকে গায়ে মাখাও।
স্পর্শ নাও। এলিয়ে যাও।
হুম...হাম... নিঃশ্বাসে ওঠা জোয়ার ভাটায় ক্ষুধাই মিটে, কামনা নয়।
ছুটে যাও...ছুঁয়ে যাও...গড়িয়ে যাও মোহো্নায়।
ওগো চাঁদ, নিবিড় শ্রোতা এক,
সারাদিন শোনো সূর্য থেকে, সে চলে গেলে পরে,
নিঝঝুম রাতে গল্প শোনাও অভিমানি কোনো কবিকে।
" দেখেছ কি দূরে...ক্রমে আরও দূরে...ছোট্টো ফানুস?
তাঁর (!) চে ও ধনি হলো কবে? যদিও সে নিজে জ্বলে।
জেনো, তা ক্ষনিকের। তাতে খুন পাবে এক ডেফোডিল এর।
পাবেনা দীর্ঘতা, ক্রমাগত ক্রন্দন আর্তের-আঘাতের।
হোকনা সে আলোর, আগুনেইতো সৃষ্টি।"
ও চাঁদ... আর কত কাল এই দূর চুম্বন? আমিও জানি সে অভিমান।
মহাকর্ষিও ভালবাসার একমাত্র দান, ছুঁড়ে দাও। ছুটে যাও-তার কাছে।
ধ্বংসেতে হবে মিলন মধুর। চাইনা জোছনা বৃষ্টি।
৬। শেষ লাইন............
নাটাই সুতো গিটে মাথায় জোড়া দিয়েই পগার পার?
সময়ের থাল খাবলে নিলেই যাপন,
পকেটে পুরেই স্মৃতির ভাগাড়। আপন!
ধ্বংস! সে তো জীবন বয়েই মাটি।
বৃক্ষ জনমে সাইকেল পরিপাটি।
স্পষ্ট স্বরে বিনির্মাণ হবে শরির। হোক কবিতায় কবির।
যাপন-চ্ছটা রুপে রুপে - হারিয়ে গিয়ে পরিচয়। তাই,
স্পন্দন হাসে শেষতম কোষে, চিৎকার করে কয় ...
মৃত্যু, এক মিথ্যা-চারন । মরার উপায় নাই।
৭। রতি প্রিয়া
তোমার চুল থেকে খুলে নেবো খোঁপার কাঁটা।
চুমুতে বাঁধবে তাই নুপুর টাও রাখবোনা পায়।
ঝাড় বাতি নয়, মৃদু ম্লান প্রদিপের আলোয় রুপবতি হয় প্রেমাচার।
অচেনা ফুলে, সাজাবো পাহাড়ি তহ্নি সাজে।
কেননা বুনো বেড়াল খেলায় বেশি টানে।
তারপর ছুটে, টুটে, বুকে হেটে বিচরন।
তোমায়, তোমাতে, ঠোটে, কানের লতিতে।
নিতম্বে হাত দিয়ে ঝটকা টানে কোমরের পাশে।
আহ...আহ... সুখের সন্ধান।