somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিপড়া কথন! শেষ হইয়াও যাহা হইলো না শেষ (বনাস পর্ব)

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি নিরামিষাশী পিপড়া। জ্বি হা ভাই আমি মাংস খাই না খাই খালী পাতা। আর পাতা খাই বলে তোমরা মানুষের নাম দিয়েছো, পাতা-কাঠা পিপড়া! আবার তোমাদের চরম শত্রু বলেও ভাবো। আমাদের সে যা ভেবেছো, কারণ এক বছরে এক কলোনির দশ হাজার থেকে এক মিলিয়ন পিপড়া মিলে আমরা জমিয়ে ফেলি প্রায় আধ টন গাছের পাতা।

মহারাণী পিপড়ার বয়ান

সাধারন পিপড়ার বয়ান

কিশোরী পিপড়ার বয়ান

শেষ পর্ব
আমাদের পাতা কাঠা পিপড়া দের মাঝে আবার বিশেষায়িত তিন শ্রেণী আছে। একেবারে মাঠা মোঠা। মুখের আগে সাঁড়াশি লাগানো এদের বলে জায়ান্ট। এদের কাজ হলো গাছে চড়ে পাতা কেঠে নিচে ফেলা। এই কাজটা এরা চূড়ান্ত ভালো পারে, এরা শুধু পাতা কাটেই কখনও বয়ে নিয়ে যায় না। কথা হচ্ছে তোমরা মানুষেরা মাঝে মাঝেই বনে আগুন লাগিয়ে দাও। সে আমাদের মারতে অথবা জঙ্গল সাফ করতে তখন এই বলদ ভোদাই রা কি করে সেই কথা বলি। যখন আগুন লাগে তখন আগুনের তাপ আস্তে আস্তে পাশে আসে আর এরা এদের কাজ ই করতে থাকে, পাতা কাটতেই থাকে। একেবারে জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হবার আগে পর্যন্ত একবারের জন্য পালানোর কথা ভাবে না।

এর পরেই এলো ট্রান্সপোর্টর এদের কাজ কাটা পাতা বয়ে নিয়ে যাওয়া। চল চল চল ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাতল বলে এরা কাঁধে তুলে নেয় কাটা পাতা আর রওয়ানা হয়ে যায় বাসার দিকে। সারাদিন এরা অনবরত নিরবধি কাজ চালিয়ে যায় এক বারের জন্য না থেকে। শুধু মাত্র ঘুমের সময় দেড় মিনিট কাল ঘুমিয়ে নেয়।

এর পরেই আছে ছোট ছোট সাইজের আরেক দল এরা ঘরে থাকে, ফাই ফরমাস খাটে। ছোট ছোট কাজ করে পাতা সামলে রাখে। এদের দেখতে বড়ো মায়া লাগে, বড়োরা ঘরে ফিরে এলে আশে পাশে ঘুরঘুর করে অনবরত। যদি বড়োরা হটাত হটাত হাত পা টিপে দেবার কথা বলে আর বকশিস দেয় এই আশায়। কিন্তু আমরা পিপড়াদের গায়ে ব্যথা নাই তাই গা টিপে দিতে হয় না।

মাঝে মাঝে বিভিন্ন কারণে আমাদের বাসা আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত কলোনিকে সরিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের প্রায় সময় লাগে দুইদিন। এই প্রক্রিয়া টা খুব কঠিন। কারণ আমাদের মাঝে কোন লিডারশীপ নেই তাই আমরা সবাই মিলে কারো কথা শুনবো এমন হয় না কখনই। আমরা সবাই রাজা আমাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেই। তবে আমাদের সিদ্ধান্তে কখনও ভুল হয় না। সবাই মিলে নিরাপদ এক জায়গাতেই যাই। প্রধান কাজ আমাদের রানীমাকে নিয়ে যাওয়া। সে ডিম পাড়তে পাড়তে নিতিয়ে যায় যার ফলে তাকে টেনে নিয়ে যেতে হয়, সহজে যেতে চায় না। এর পরে ডিম লার্ভা। যত টুকু পারো খাবার নিয়ে যাওয়া।

এর থেকেও কঠিন কাজ হচ্ছে রাজকুমারী দের নিয়ে যাওয়া। কারণ এদের পিঠে পাখনা অসময়ে উড়াল দিয়ে কোন বাঁদরের আদর খেতে চলে যাবে! শেষে কিনা বংশ ধংস, কুলের নাশ! তাই এদের-নিয়ে যাওয়ার সময় এদের পাখায় জোড়করে ধরে রাখতে হয় যেনো কলঙ্কিনী হওয়ার কোন সুযোগ না পায়।

নতুন ঘরে গেলেই হলো না কত কাজ তখন বাকী নতুন জায়গা, রোগ বালাই এ ভরতিতখন আমাদের মাঝে কেউ কেউ রওয়ানা দেয় কবিরাজ বাড়ী, কবিরাজ তো আর বিনা দামে ঔষধ দিবে না জান দিতে হয় আমাদের অনেক কেই। আমাদের ঔষধ হলো গাছের থেকে বের হওয়া কস বা রেজন। এই রেজনের ফাদের মাঝে যে আটকে যায় তাকে আর বের করে আনা যায় না। কালে কালে তারা হয়ে উঠে এম্বার। তাকে শেষ চুমো খেয়ে ওখানেই রেখে আসতে হয়। বাকী বেচে যাওয়া জনেরা শুকনো এজন্য তুলে নিয়ে আসে কাঁধে করে। এবার বাসার চারিদিকে সেটা রেখে দেয়া হয়, গর থেকে বেরুবোর সময় আর ঘরে ঢুকার সময় সেই এজন্য এর উপর দিয়ে যাওয়া আসা করা লাগে যাতে পায়ের নিচে লাগা ফাঙ্গাস বেটারে মরে যায়। এরা আমদের দারুণ জ্বালায়, এরা ঘরে একবার ঢুকে গেলে চিমনি করে দিয়ে রোদ আলো ঢুকাতে হয় না হলে পালে পালে আমাদের পিপড়ারা মরে যায় বিভিন্ন রোগে। আমাদের বড়ো বড়ো কলোনির অনেক গল্প তোমরা শুনেছো। আবার ২০-২৫ সদস্যা নিয়েও কিন্তু আমাদের কলোনি হয় প্রচুর, সরবোচ্ছ ১০০ পর্যন্ত যায় সংখ্যা। যে কোন শুকনো ফলের ভিতরে আরামসে সেই সব কলোনি বানিয়ে ফেলা যায়। যারা একটু নিরিবিলি অহংকারী তারাই এমন ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে যায়।
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের সেকাল এবং একালের ঈদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ৩১ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:১৩



কানাডার আকাশে ঈদের চাঁদ উঠেছে কিনা সেটা খুঁজতে গতকাল সন্ধ্যায় বাসার ছাদে বা খোলা মাঠে ছুটে যাইনি। শৈশবে সরু এই চাঁদটা আকাশে দেখতে পেলেই দেহকোষের সবখানে একটা আনন্দধারা বয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাঁটুতে ব্যথা, তাই সুঁই এ সুতা লাগানো যাচ্ছে না

লিখেছেন অপলক , ৩১ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:৩৭

শুরুতেই একটা কৌতুক বলি। হাজার হলেও আজ ঈদের দিন। হেসে মনটা একটু হালকা করে নেই।

"কোন এক জায়গায় স্বামী স্ত্রী ঘুরতে বেরিয়ে বাইক এক্সিডেন্ট করে। জ্ঞান ফিরলে স্বামী নিজেকে হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈদ মোবারক!

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩১ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০৪



ঈদ মোবারক!

ঈদ উল ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন! এক মাসের সংযম ও আত্মশুদ্ধির পর এসেছে খুশির ঈদ। ঈদ মানেই আনন্দ, ভালোবাসা ও একসঙ্গে থাকার মুহূর্ত। আসুন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্লোবাল ব্রান্ডঃ ডক্টর ইউনুস....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ৩১ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৯

গ্লোবাল ব্রান্ডঃ ডক্টর ইউনুস....

রাজনৈতিক নেতাদের সাথে, ক্ষমতাসীনদের সাথে তাদের কর্মী সমর্থক, অনুগতরা ছবি তুলতে, কোলাকুলি করতে, হাত মেলাতে যায় পদ-পদবী, আনুকূল্য লাভের জন্য, নিজেকে নেতার নজরে আনার জন্য। আজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির ব্যক্তিটি কোন আমলের সুলতান ছিলেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩১ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪১



বাংলাদেশে এবার অভিনব উপায়ে ঈদ উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। ঈদ মিছিল, ঈদ মেলা, ঈদ র‍্যালী সহ নানা রকম আয়োজনে ঈদ উৎসব পালন করেছে ঢাকাবাসী। যারা বিভিন্ন কারণে ঢাকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×