আমরা কি প্রেষণা নিয়ে জীবন টেনে চলছি। খাদ্যে ভেজাল মেশাচ্ছি, ভেজাল মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ, পরীক্ষা গারের রিএজেন্ট মেয়াদ উত্তীর্ণ – আমাদের রোগ নির্ণয় ভুল হচ্ছে, অসুখ ভাল হচ্ছে না, বিদেশ গিয়ে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। দেশের টাকা স্রোতের মত বাহিরে চলে যাচ্ছে। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কোটি মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
সাধারন মানুষ সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না, দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, আর এদেরকে শোষণ করে তাদের টাকা দিয়ে কিছু মানুষ সিঙ্গাপুর, ভারত, থাইল্যান্ড যাচ্ছে, বিদেশে চিকিৎসা করছে।এত কিছুর পর ও সবাই ৬০ থেকে ৮০ বছরে মারা যাচ্ছে। মারা যাওয়ার ৫ -১০ বছর আগে থেকে প্রায় সবাই বার্ধক্য জনিত নানা রোগে ভুগছে।
টাকার জন্য গুলি করে মারছি, পিটিয়ে মারছি, খুন, গুম সবকিছু করছি, নিজের সম্পদ বাড়ানোর জন্য। এই অবৈধ টাকা দিয়ে আমাদের স্ত্রী, সন্তান, বাবা, মা খাচ্ছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে, আনন্দ করছে।
দেশে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে, বাংক লুট করে, ঋণের টাকায় ভাগ বসিয়ে, কমিশন বাণিজ্য করে, অনেক টাকা চুষে নিয়ে বিদেশে বাড়ি কিনছে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। কার জন্য কাদের জন্য। জীবন কিন্তু সবার একটাই। সেসব দেশে নিরাপত্তা আছে। আর আমাদের এই দেশে সেই টাকার কিছু অংশ খরচ করলে এই দেশটাকে ও নিরাপদ বানানো যায়। তাহলে শেষ বয়সে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশ যাওয়া লাগত না, বিদেশে বাড়ি কেনার দরকার হতো না।
বিদেশে কেনা বাড়ীতে পালিয়ে গিয়ে বেশী হলে ১০ -১৫ বছর থাকা যাবে, আর একটা পলাতকের জীবন যাপন করতে হবে। এসব না করে দেশের উন্নয়নে এই টাকা খরচ করলে দেশটাকে আর ও সুন্দর করা যেত। এসব কথা কে বোঝাবে আর কে বুঝবে।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্গতি, মানসম্মত শিক্ষা নেই, বিদেশীরা আমাদের অনেক জায়গা দখল করে আছে। আর যাদের কারনে এই দুর্ভোগ ও অব্যবস্থা তারা তাদের সন্তানদেরকে বিদেশে পড়াচ্ছে, দেশ থেকে টাকা লুট করে তাদেরকে টাকা দিচ্ছে, দেশের থেকে টাকা নিয়ে তাদেরকে বাঁচতে হচ্ছে, তারা ভাল কিছু করতে পারছে না। দেশের উন্নয়নে তদের কোন অবদান নাই, তার নতুন দেশ তাকে কি দাম দিচ্ছে, সেখানে মাস্তানি মারার কোন সুযোগ আছে কি?
ঘুষখোর, দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা কর্মচারী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও অন্যান্য পেশাজীবী মানুষগুলো তাদের নিজেদের লাভ আর লোভের কারনে একটা দেশ, জাতি ও একটা প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কি তাদের লক্ষ্য, কেন উদ্ভ্রান্ত হয়ে তাদের এই পথচলা। এই পথচলা কি শেষ হবে না?
নিজের এই দেশটার ভালর জন্য দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য একজন করে হলেও শুরু করতে হবে। ভাল কাজ করার ইচ্ছা জাগাতে হবে, তাদেরকে প্রেষণা দিতে হবে।
একটা বাটপার, প্রতারক, ঘুষ খোর অবৈধ অর্থ উপার্জন কারীর স্ত্রী, সন্তান ও পিতামাতা হয়ে আনন্দের কি আছে? সমাজে তারা ধিক্কৃত হতে হবে। আমাদের এই মৃত বিবেক জাগার সময় কবে হবে?
সব সময় মনে রাখতে হবে যে কোন পরিবর্তনের জন্য এখন ই সময় এবং বর্তমান সময় হল সবচেয়ে ভাল সময়। আমাদেরকে বদলাতে হবেই তা না হলে আমরা একটা ধ্বংস প্রাপ্ত মনো বলের মানুষে পরিণত হব। আমাদের আচরনে পশুরাও লজ্জা পাবে।
মানুষ হত্যা ও মানুষকে শোষণের জন্য যত খরচ হয় তার চেয়ে অনেক কম খরচে অনেক মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যায়, অনেক শিশুর জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়া যায়।
আসুন নিজে আগে পরিবর্তিত হই, সবাই মিলে কিছু সুন্দর ও ভাল মানুষ বানানোর চেষ্টা করি। এক শতাংশ থেকে শুরু করে বাড়তে থাকলে একদিন নিশ্চয়ই একটা উল্লেখ করার মত সংখ্যা আসবে। সবাইকে তো বদলানো যাবে না। কিছু যারা বদলাবে তাদেরকে বদলে যেতে একটু সহায়তা করতে হবে।
আসুন যারা সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়াচ্ছে তা প্রতিহত করি। এরা আপনার আমার পরিচিত। আমাদেরই চেনা মানুষ, তাদেরকে বুঝাতে হবে।
দেশের টাকা পাচার না করে দেশে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করি।
কমিশন না নিয়ে কম খরচে দেশের কাজটা ভালভাবে করি।
শিক্ষার উন্নতি করে জাতিকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসি।
চুরির মনমানসিকতা থেকে বেরিয়ে সম্মানজনক জীবিকা অর্জনের চেষ্টা করি।
একটা সুন্দর আগামীর জন্য সবাই কিছু করার চিন্তা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:২৭