আজ সকালে নবাবের (মানে আমার

) ঘুম ভাঙলো এক ফ্রেন্ড বাসায় এসে ডাকাডাকি করার পর; দুপুর ১২:৩০ এ। তার ঈদের কেনাকাটা নাকি কিছুই হয়নি। আমাকে যেতে হবে তার সাথে পাঞ্জাবী আর জুতা কিনতে। কিছু কারণে মন খারাপ থাকায় এবার ঈদ নিয়ে কোন উচ্ছ্বাস নেই; নিজেও কোন কেনাকাটা করিনি। যাই হোক, গেলাম তার সাথে। অনেক ঘোরাঘুরির পর তার পাঞ্জাবী আর জুতাজোড়া কেনার পর বাসায় ফিরে আসলাম। অতঃপর ঘন্টাখানেক পর আমারও মনে হল একজোড়া স্যান্ডেল কেনা আসলেই দরকার (আগেরটার সোল ছিঁড়ে গেছে কিনা)। আমার জুতা বা স্যান্ডেল কিনতে যাওয়া মানেই তিক্ত অভিজ্ঞতা; মনে পড়তেই মন খারাপ হয়ে গেল (আমার পায়ের সাইজমত জুতা পাওয়া দুষ্কর কিনা) । বের হলাম স্যান্ডেলের খোঁজে। আশেপাশের বাটা আর এপেক্সের প্রায় সব শোরুম দেখা হয়ে গেল, কিন্তু যেটাই পছন্দ হয় সেটা আমার সাইজের পাওয়া যায় না। এক দোকানে বলেই দিলো- অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিতে। ৪৪ এর ওপর নাকি তারা বানায় না !

রাগে গরগর করতে করতে এরপর চলে গেলাম এলিফ্যান্ট রোডে। সায়েন্স ল্যাব পুলিশ বক্সের পাশের ওভারব্রীজ পার হতে গিয়ে চোখে পড়ল নানা রকম ভিক্ষুকের সারি। এখানে এসে মনে হল ঢাকা শহরের অর্ধেক লোকই মনে হয় চলে এসেছে মার্কেটিং করতে

। একদিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক শপিং মল, মার্কেটের সারি; অপরপাশে বিভিন্ন বয়সের ভিক্ষুকের সারি- বড়ই বেমানান। কিছু বিকলাঙ্গ ভিক্ষুকের বিকৃত চেহারা দেখে শিউরে উঠতে হয়। একবার মনে হল- আশ্চর্য ! এদের পুনর্বাসন করার মত কোন সংস্থাই কি নেই? পরক্ষণে মনে মনে নিজেকেই গালি দিলাম; ৫৬০০০ বর্গমাইলের যে দেশে জনসংখ্যা ১৮ কোটি (যদিও আমার মনে হয় এখন ২০ ছাড়িয়ে গেছে

) এবং তারপরও সরকারের সর্বোচ্চ নির্বাহী জনসংখ্যা সমস্যাকে কোন সমস্যা বলেই মনে করেন না, সেখানে এটাই তো স্বাভাবিক। তাকিয়ে দেখলাম শুধু ৩/৪ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত হতদরিদ্র হাড্ডিসার অপুষ্টিতে ভোগা মানুষগুলোকে। ততক্ষণে প্রচণ্ড ভিড় আর এসব দৃশ্য দেখে আমার স্যান্ডেল কেনার ইচ্ছা উবে গেছে। এরপর দেখলাম ভিক্ষা করার সম্পূর্ণ নতুন একটি দৃশ্য। (নাকি টেকনিক?) ওভারব্রীজের সিঁড়ির কাছে একটি লাশ নিয়ে ভিক্ষা করছে এক মহিলা! মানুষটির কতক্ষণ আগে মৃত্যু হয়েছে জানা নেই। কিন্তু লাশটির চারিদিকে প্রচুর মাছি উড়ছিলো! হায়রে মানুষ! মরে গিয়েও শান্তি নেই।…………………………………………
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৫৯