১৯২১ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতে অক্সব্রিজ শিক্ষাব্যবস্থা অনুসরণে স্থাপিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার উন্মুক্ত হয় ১৯২১ সালের ১ জুলাই। সেখান থেকেই পথচলা শুরু। প্রতিষ্ঠার এই দিনটিকে প্রতিবছর "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস" পালন করা হয়।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও মানবিক চেতনা বিকাশে উচ্চশিক্ষা’।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর পূর্ব বাংলা রাজধানীর মর্যাদা পায়। সেখান থেকেই মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পর ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, ধনবাড়ীর নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ। এরপর নানা প্রতিকুলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
১৯১৭ সালের মার্চ মাসে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী সরকারের কাছে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পেশের আহ্বান জানান। ১৯২০ সালের ২৩ মার্চ গভর্নর জেনারেল এ বিলে সম্মতি দেন। এ আইনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ভিত্তি।
১৯২১ - ২০১৬ সালের দীর্ঘ পথচলায় নানা ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৪৭ পরবর্তী স্বাধিকারের সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামসহ প্রতিটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বাংলাদেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
তিনটি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ নিয়ে একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর প্রথম উপচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্যার পি জে হার্টগ। বর্তমানে এর ১৩টি অনুষদ, ৮১টি বিভাগ, ১১টি ইনস্টিটিউট, ১৯টি আবাসিক হল ও ৫টি হোস্টেল রয়েছে। বর্তমান চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
শুরুর দিকের বিভিন্ন পরিশ্রমী ছাত্র/শিক্ষক ও বিজ্ঞানীদের দ্বারা কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রিত হবার প্রেক্ষাপটে এটি 'প্রাচ্যের অক্সফোর্ড' নামে স্বীকৃতি পায়।