বলা হয়ে থাকে, ঈব্রাহিম তার স্বপ্নের মাধ্যমে তার প্রিয়বস্তু কোরবানী করার ইঙ্গিত পেয়েছিলেন। তাই তিনি তার একমাত্র পুত্র ঈসমাইল কে কোরবানী করার জন্য মনপুত হয়েছিলেন। কিন্তু মনে প্রশ্ন জাগে ঈসমাইল তার অধিক প্রিয় নাহয়ে তার স্বীয় প্রাণ কেন নয়..
কোরবানী করার সময় যখন ইব্রাহিম ঈসমাইলের গলায় ছুড়ি চালালেন তখন দেখা গেলো তার পুত্রের বদলে একটা দুম্বা কুরবানী হলো। কিন্তু কোথা থেকে দুম্বাটা আসলো তা কারোই বোধগম্য নয় এমনকি ইব্রাহিম নিজেও জানেন না। কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্স টু নো, সে সময় যদি ঈসমাইল কুরবানী হয়ে যেতো তবে তারা কি ঈসমাইলের মাংস ভক্ষন করতো...? যদি না করে তাহলে দুম্বার মাংস ভক্ষন করা কি উচিত ছিল..? স্বপ্নে কি এমন কোন ইঙ্গিত ছিল যে, যা তুমি ত্যাগ করবা তা তুমি পরিপূর্ণ ত্যাগ না করে ভোগও করতে পারবা..? তাহলে তা ত্যাগ কিভাবে হয় এটাও আমার বোধগম্য নয়।।
অধিকাংশ নবীরাই ইব্রাহিমের বংশধর। ইব্রাহিম তার সময়েই ছেলেদের খৎনা করার নিয়ম চালু করেছিলেন । অন্যান্য নবীরাও এই নিয়ম পালন করে গেছেন। ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলমানরা এখনও এই নিয়ম পালন করেন। সেই একই ব্যক্তির অন্য প্রথা কুবাবানী শুধুমাত্র মুসলমানরাই পালন করছে কিন্তু ইহুদি ও খ্রিষ্টানেরা ত্যাগ করেছেন। তারা কেন এই প্রথা ত্যাগ করলেন ইহা যেমন বোধগম্য নয় তেমনি ইব্রাহিমের আগমনের ২৫০০ বছর পর কেন সে প্রথা চালু করা হলো তাও বোধগম্য নয়...
কৃষিকাজের জন্য বলদ গরু, গরুর গোবর ইত্যাদি অত্যন্ত উপযোগী। ভারতীয় উপমহাদেশের জমি কৃষি কাজের জন্য অত্যন্ত উর্বরভূমি। অপর দিকে আরবের মরুভূমির মাঝে কৃষিকাজ হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে সে দেশের গাভী গরুগুলো দুধের জন্যকাজে লাগলেও বলদ গরুগুলো তারা ত্যাগের জন্য হোক কিংবা ভোগের জন্য হোক কোরবানী দিতে পারেন। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য তা কতটা কার্যকরি..? তাহলে এ প্রথাকে কি আরব সংস্কৃতির অংশ বলে মনে করাটা কি যুক্তিযুক্ত নয়..?
কোরবানীর পশুর অধিকাংশ মাংস ভক্ষনের মাধ্যমে কোরবানীদাতা তা কিভাবে ত্যাগ করলেন আমার জানানেই। কিছু পরিমাণ মাংস দানের মাধ্যমে তার কিছুটা স্বার্থত্যাগ হলেও কুরবানীর পশুর সম্পূর্ণটাই হয় আত্নত্যাগ। আবার অনেকে হারাম টাকায় কুরবানী দিলে তা ধর্মমতে গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে হারাম টাকার বলিদান হয়া পশুটির অপরাধ কি..? এরা কি ইব্রাহিমের স্বপ্ন কতৃক পাওয়া প্রভুভক্তির নির্মম শিকার নয়..?
ইব্রাহিমের প্রিয় পুত্র কুরবানীর জন্য রাজী হয়েছিলেন স্বেচ্ছায় কিন্তু কুরবানীকৃত পশুগুলোকে জবাই করার পদ্ধতিতে কতটুকু ত্যাগের মহিমা রয়েছে আর কতটুকু হিংস্রতা রয়েছে তাও আজ প্রশ্নবিদ্ধ...
সবশেষে ধরা যাক, অন্যকোন গ্রহ থেকে অন্য কোন বর্বর জাতি এসে পৃথিবীতে অবস্থান করলো এবং তারা তাদের প্রভু ভক্তির জন্য মানুষকে কুরবানী দেয়া শুরু করলো। এক্ষেত্রে ঐ জাতির ছুরির নিচে থাকাকালন সময়ে মানুষ কি এটাই বলবে না যে, অন্ধবিশ্বাস দূর হোক....?