প্রিয় ছড়াকার আমীরুল ইসলামের ছড়া
কি পেলাম
লেখালেখি মানে দুষ্টুমি করি
চুপচাপ থাকি। বইটই পড়ি।
পড়ে-টড়ে ভাই হয়নারে কিছু
ঘুরি তাই আজ মানুষের পিছু।
লেখালেখি করে কিছু কি পেলাম?
যারা অলেখক তাদের সেলাম।
রবীন্দ্রনাথ
যে ভাষাতে রবীন্দ্রনাথ,
সেই ভাষাতে আমি
কথা বলি স্বপ্ন দেখি
আর করি পাগলামি।
যে ভাষাতে রবীন্দ্রনাথ
তাতেই অহংকারী
বিশ্বজুড়ে বাংলাভাষায়
সব করতে পারি।
হে মহাজীবন
তুচ্ছ চাওয়া তুচ্ছ পাওয়া
তুচ্ছ লোভের কাছে
নিজেকে কেন বিক্রি করি
কীইবা পাওয়ার আছে?
কিসের খ্যাতি কিসের মোহ
কিসের এতো লড়াই
কিসের জন্য অর্থবিত্ত
কিসের জন্য বড়াই?
জীবনটাতো সহজ-সরল
সহজ করে বাঁচা
আমরা বানাই জীবনটাকে
চিড়িয়াখানার খাঁচা।
আসুন ভায়া, লোভকে যদি
করতে পারি জয়,
জীবন তখন নদীর মতো
ফুলের মত হয়।
রবীন্দ্রনাথ
তোমার সামনে যখন দাঁড়াই
বড় বিস্ময় জাগে,
তোমার অবাক প্রতিভার পাশে
বেঁচে থাকি অনুরাগে।
নতুন ছড়া
নতুন ধারার ছড়া লিখব
পাই না খুঁজে থিম,
শিং নাচিয়ে সামনে এলো
হাট্টিমা টিম।
বললো তারা হাসতে হাসতে
পাড়বো মাঠে ডিম
আষাঢ় মাসে বৃষ্টি আসে
রিম ঝিম রিম ঝিম।
নতুন ধারার ছড়া লিখব
কোথায় পাবো থিম!
শীত ঘুম
শীতের সকালে লেপের তলায়
উম...
গড়াগড়ি করে এপাশে ওপাশে
ঘুম।
ঘুমাবো সকালে দুপুরে বিকেলে
রাতে,
ঘুমাবো একলা কিংবা মায়ের
সাথে।
ঘুমাব আরামে, গভীর মগ্ন ঘুম-
শীতের সকালে লেপের তলায়
উমম..।
শামুক
শামুক হাঁটছে
শামুক হাঁটছে,
খোলস কেন চোখ্কা
শীতে কিংবা
গ্রীষ্মে আমায়
খোলস করে রক্ষা।
ছড়া
নিজের দিকে তাকিয়ে ভাবি
মানুষ আমি দ্বিপদ,
আমি কি ভাই বাঁধার দেয়াল
কারও জন্য বিপদ?
প্রশ্ন জাগে, কেমন আমি
পাখির মতো বন্য,
মানুষকে তো ভালোই বাসি
মানুষ ভাবে অন্য।
কুট কুট
ওরে আমার ইঁদুরসোনা
তোমায় করি আরাধনা।
আর কেটো না বই
তোমায় নিয়ে ছড়া লিখব
আমি অবশ্যই।
বই
দামি দামি বই কিনেছি
করেছি সংগ্রহ
আর কিছু নয়, আর কিছু নয়,
বইয়ের প্রতি মোহ।
ঘরে অনেক ইঁদুরছানা
কাটুর কুটুর কুট
বইয়ের প্রতি মোহ তাদের
বই যেন বিস্কুট!
সুড়সুড়ি
পিচ্চিরে পিচ্চি
সুড়সুড়ি দিচ্ছি।
হা... হা... হা...
গরুদের জন্য শোকগাঁথা
কুরবানী ঈদ মানে
গরু নিয়ে গড়াগড়ি,
মৌলভী ধরাধরি।
ব্যাপারটা ভয়াবহ
এর নাম ধর্ম?
এটা কোন কর্ম!
ছড়া
কার খোকা
ছারপোকা?
কার পোলা
আরশোলা?
তুই বোকা
উঁইপোকা।
দিবি লিখা?
পিপীলিকা।
ম্যানিয়া
রাত জেগে থাকি -- ম্যানিয়া
শুধু বই পড়ি --ম্যানিয়া
কেন ছড়া লিখি --ম্যানিয়া
কেন জুতো কিনি -- ম্যানিয়া
কেন জামা কিনি --ম্যানিয়া
কেন কথা বলি -- ম্যানিয়া
কেন হাউকাউ --ম্যানিয়া
কেন বেশি খাই? --ম্যানিয়া
কেন জোরে হাসি --ম্যানিয়া
কেন লাফালাফি --ম্যানিয়া
চোখ পিটপিট --ম্যানিয়া
দাত কিড়কিড় --ম্যানিয়া
কেন বই পড়ি --ম্যানিয়া
মা
যখন আমার চর্তুদিকে
জ্বলে বিষের আগুন,
কৃষ্ণচূড়ার লালে লালে
যখন আসে ফাগুন।
তখন মায়ের মুখ,
দেয় ভরিয়ে বুক।
যখন আমি নীল-হতাশায়
শূন্য-আচ্ছাদিত,
মা আমাকে কোলের মধ্যে
ঠিক জড়িয়ে নিতো।
মা মানেতো মাতা
মাথার উপর ছাতা।
মা মানেতো ভালোবাসার বাড়ি
মনে পড়ে মায়ের রঙিন শাড়ি।
যখন বুকে কষ্ট জমে
দুচোখ জুড়ে ঘৃণা
মা বলতেন, কাউকে কিন্তু
কিচ্ছুটি বলবি না।
মাতো আমার দেবীর মতো
নীল আকাশের পরী-
যখন ছড়া হয়না লেখা
মাকে স্মরণ করি।
গাধা
আমি যখন গলা সাধি
সারে গামা পাধা
বাবা বলেন, চেঁচাস কেন
তুই একটা গাধা।
সত্যি একদ্নি গাধার সামনে
গান গাইতে গেলাম,
অর্ধেক গান গেয়েই আমি
সোনার মেডেল পেলাম।
ছড়া
আমরা সবাই মিথ্যা কথার রাজা
শরীর-মোটা তাজা।
আমরা সবাই ভণ্ড প্রতারক
সহজ কথায় ঠক।
খনা বলেছেন
গাছের বদলে মাটির বুকে
গাঁথতে থাকো ইঁট,
লোহার পিলার, টিনের দেয়াল
সিমেন্ট কংক্রিট।
তৈরি করো শহর নগর
ধ্বংস হোক সব,
প্রাণের বিকাশ রুদ্ধ হোক
মৃত্যুর উৎসব।
বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রাপ্তিতে
পুরস্কার পাওয়ার পরে
বুঝতে পারি হায়রে
এর তো কোন মূল্যই নাই
দিন চলে যায় যায়রে!
মহাকালের গর্ভে আমার
কী বা এমন মূল্য?
কেউ পড়ে না লেখা, আমার
জীবদ্দশায় ভুলল।
পুরস্কার পাওয়ার পরে
বুঝছো ভায়া বুঝছো
বুঝতে পারি আমার লেখা
তুচ্ছ অতি তুচ্ছ।
তাদের পাশে
আমি থাকি স্বপ্নহীনা
দুঃখীজনের পাশে,
যাদের চোখে কান্নাগুলো
মুক্তো হয়ে ভাসে।
আমি থাকি ক্ষুধায় যাদের
শূন্য থাকে থালা,
আমি থাকি তাদের পাশে
যাদের পেটে জ্বালা।
আমি থাকি দুঃস্থ অনাথ
রুগ্ন শিশুর সাথে,
দিনে যারা ভাত পায় না
ঘুম আসে না রাতে।
আমি থাকি জনমদুখী
ভাগ্যহীনার পাশে
ওদের দুখে দুঃখী আমি
কান্না কেন আসে?
কান্না তো নয় কান্না তো নয়
আমিও আর্তজন
সবার কান্না মুছতে হবে
এই করেছি পণ।
আমীরুল
আমীরুল কথা শোন, আর কত ঘুরবি
কতোদিন ডালে ডালে ঘুরে ঘুরে উড়বি?
নিজের আগুনে তুই কতো আর পুড়বি?
ধীরে ধীরে এইবার হও ধীর শান্ত
জীবনের অপচয় করে তুমি ক্লান্ত
অতিদ্রুত ক্ষয়ে যাবে কেউ সেটা জানতো?
টাকা যদি থাকে তবে আকাশেতে উড়তি
প্রতিক্ষণ প্রতিদিন করে গেলে ফূর্তি
সংসার করলে না, যেন এক মূর্তি।
আমীরুল
কে আমীরুল
কে ভিমরুল
কে কুমিরুল? জানি না
কে ভিমরুল
কে কুমিরুল
কে আমীরুল? মানি না
আসবেন তো হাসবেন। কিংবা, কাশতে কাশতে, অশ্রুজলে ভাসবেন।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১টি মন্তব্য ৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন
মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সত্যি বলছি, চাইবো না
সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন
শেখস্থান.....
শেখস্থান.....
বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন