কলকাতার সাহিত্য পত্রিকা “অন্যনিষাদ”-এ আমার এই কবিতাটি প্রকাশিত হল।
অস্তিত্ব
সেইখানে কোন পড়ে যাওয়া নেই
ডুবে যাওয়া নেই অতলে, তলিয়ে যাওয়া।
আছে কেবল হেটে যাওয়া জীবনে, পথচলা মহাকালে।
সেইখানে ভোরের আলো নেমে এলেই
পাঁচদুয়ারে হাড়ি ওঠে চুলায়, কামরাঙা গাছে বসে
দেখে জোড়া শালিক।
কাঁঠালপাতা ঝরে পড়ে পুকুরের জলে কলাগাছের
ভেলা ভাসে। খেয়া নৌকাগুলো এপাড় আসে ওপাড়ে যায়
অপেক্ষা করে ঘাটে পরের যাত্রায়।
ছাই দিয়ে বাসন ধুয়ে
বসন ঢাকে ভেজা কাপড়ে ঘরমুখে গমন করে মহিলারা।
কাপড় শুকাতে দেয় অপরাজিতা লতার পাশে।
সেইখানে আকাশ পৃথিবীর গভীরে নীল ছড়ায়
সাত আসমান এক আসমান হয়ে
নীল এসে মিশে যায় ডালিম গাছের লালে।
সেইখানে সবুজ ধানের শীষে শিশিরের ফোঁটা
জেগে থাকে সমস্ত ভোরের শান্ত আভায়
গাব গাছের মৌচাকে।
সেইখানে নক্ষত্র জোনাকির রুপ মেখে
পুঁথি পড়ে যায় কেউ, সারারাত ধরে
পিদিমের আলো জ্বলে চলে ভরা জ্যোৎস্নার সাথে।
সেইখানে রাখাল আজও বসে আছে বটের ছায়ায়
গায় ভাটিয়াল, কাঁদা মাখে গায়ে বালকের দল
ঝাঁপ দিয়ে দেখে নদীর জল।
সেইখানে আজও আছে একজন শাড়ী পড়ে
ঘোমটা কপালে টিপ হাতে কাঁচের চুড়ি
আজও বসে আছে, আমার নারী।
সেইখানে বেঁচে আছি আমি চিরকাল।
আমি বসে আছি ঘাসে
নগ্ন পায়ে মাটিতে মিশে।