আমি ইন্টার পাশ করার পর ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত ২৬টা টিউশনি করছি। গুইনা গুইনা। একাউন্টইং পড়াইতাম। মাঝে মাঝে অন্য বিষয়। অন্য গুলা পড়াইতাম না কারণ ভাল্লগতোনা। কোন প্রবলেমের কথা বললে বুঝায় দিতাম। কিন্তু ওদের অন্য সাভজেক্ট গুলো ঘাটায় দেখতাম। দিনের পর দিন খেয়াল করছি আজাইরা অনেক কিছু সংযুক্ত করা হইছে। দরকার ছিল না ওসবের। আমাদের ইতিহাস জানানো নিয়া তো বিশাল ঘাপলা আছে। পুড়া স্কুল জীবনে পাঠ্য পুস্কক পড়লে মানে ১০ বছর পড়ার পর জানা যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান আমাদের জাতির পিতা। ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ হইছে, ৩০ লক্ষ শহীদ হইছে, এনাফ ধর্ষন হইছে। বাস আমরা এখন স্বাধীন। আর কোন মানুষ সেই সময় হিসেবে ছিল না। আমাদের ইতিহাস এখানে শেষ। এখন চলতেসে সৃজনশীল লেখালেখি। কি আছে অইটার মধ্যে আল্লাহ মালুম। একটা একটা আইন্সটাইনের বাচ্চা হইয়া স্কুল থেকে পাস দিবে। অতটুকু বাচ্চা জানে কি? ও সৃজনশীলের কি বোঝে?
গোল্ডেন A+ পাইলো প্রায় দেড় লক্ষ পোলাপাইন। বর্তমান এই গ্রেডিং সিস্টেমের সাথে একমত হইতে পারতেছি না। এই সিস্টেমের কোথায় জানি ঘাপলা আছে। একটা বিশাল ঘাপলা আছে। জাতিটারে বলদ বানানোর একটা বিশাল পদক্ষেপও বলা যাইতে পাড়ে। এই দেড় লাখ পোলাপাইন সর্বোচ্চ গ্রেডের অধিকারী। এদের জন্য কলেজ কই? বিশ্ববিদ্যালয় কই? ঢাকা শহরে হাজার খানেক কলেজ আছে একটা বিল্ডিং এর দুইটা ফ্লোর ভাড়া নিয়ে গড়ে উঠছে। বাস এইটাই কলেজ। এইখানে এরা কি পড়বে? শিখবেটা কি? এদের মানসিক বিকাশের জায়গা কই? দেড় লাখ ছাড়া বাকি ছাত্র ছাত্রী কই? মানুষের লিস্টে আছে তো? ওদের ভবিষ্যত কই? ফার্মের মুরগী হয়ে বাইর হইতেসে।
বালের কতগুলা স্যার ম্যাডাম আছে, তাদের কাছে এখন প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে। না পড়লেও উপায় নাই। ফেল। পোলাপান ভেড়ার পালের মত স্কুলে যায়, সেখান থেকে ভেড়ার পাল যায় প্রাইভেট পড়তে। এক, দুই, তিন জায়গায়। বাসায় ফিরলে বাপ মা দেখা যায় একটা পাইভেট টিউটর রাখছে। পোলাপান এই বছরই প্রধানমন্ত্রী হয়ে স্কুল পাশ করবে। স্মার্ট বাপ মা।
এইসব পোলাপান গুলা বাল শিখে বড় হইতেছে। ডেলিভারীও দেয় বাল। বাপের বয়সী লোকের সামনে সিগারেট টানে। দাদার বয়সী যারা ওদেরকে দেখে আবর্জনার মত। ম্যাট্রিক পাশ করলে এইসব পোলাপান বাসায় ঢোকে রাত ৭-৮ টায়। ইন্টার পাশ করলে ১০-১১ টা। পকেটে এক একজনের গোল্ডেন এ প্লাস। কোন জায়গায় চান্স পায় না হাজার হাজার পোলাপান। খেলার মাঠে বইসা গোল হইয়া গাঁজা খায়। নিজের চোখে দেখা। ম্যানার বলে কোন কিছু এদের মধ্যে নাই। রিক্সাওয়ালারা এদের কাছে অন্য কিছু, মানুষ না। ৫০ বছরের বেশি বয়সী একজনরে মারতে দেখছি নিজের চোখে। ছেলের বয়স ২৫ ও হবে কি না কে জানে। এই হইলো এদের শিক্ষা। সেভেন-এইটে পরে একটা বাচ্চা মেয়ের বয়ফ্রেন্ড না থাকলে না বান্ধবীর সংখ্যা দিন কে দিন থাকে। এইটাও তার শিক্ষা। এটাও নিজের চোখে দেখা।
একসময় তো আমরাও স্কুল কলেজে পড়ছি। নাকি?