somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি এবং কেন?

০৭ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!
গত ২৯ এপ্রিল রাতে লেখাটা পোস্ট করার পরে অনেক ব্লগার বেশ গোস্যা করেছেন। তাদের ধারনা, আমি পুরো বাংলাদেশ নই শুধু পরিবর্তিত ক্ষুদ্র একটা অংশের ছবি এনে পুরো বাংলাদেশকে সেই ছাঁচে ফেলতে চাইছি। আদপে আমি ভয়ঙ্কর দুর্যোগে থাকা একটা দেশ ও দেশের মানুষের সমস্যাকে উপেক্ষা করে সরকারের উন্নয়নের জোয়ারের গুণগান গাইবার চেষ্টা করছি। সেটা আবার যেন-তেন ভাবে নয়; গাও গেরামের ভুখা নাঙ্গা মানুষকে শহরের মানুষের থেকেও উদ্ধত, দাম্ভিক ও বুর্জুয়া হিসেবে জাহির করে।
আপনি কি জানেন গত দশ/ বিশ বছরে বাংলাদেশের মানুষ ভীষনভাবে পাল্টে গেছে-কিভাবে পাল্টে গেছে, কেন পাল্টে গেছে, আসলে কি পাল্টে গেছে? এ কথা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করতে গেলে ব্যাপক পরিসরে আলোচনা করতে হবে।
এ পাল্টে যাওয়াটা প্রথমে আমরা সেভাবে গা করিনি কিন্তু এখন চোখে লাগছে- গা জ্বালা করছে।আগে প্রবাস থেকে কেউ একজন আসলে চারিদিকে শত হুলস্থুল । তাঁর ব্যাগ খুলে কি কি অমুল্য ধন বের হবে তাই দেখার জন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ত। গ্রাম মফঃস্বল মায় শহরের অলি গলিতে; বাইরে থেকে আনা পোশাক পরে কেউ বের হলে সবাই আড়ে ঢাড়ে দেখত। বন্ধুরা তো হামলে পড়ত। প্রবাস থেকে যারা আসত তারা হাত খুলে বাজার করত। দেশের সব কিছুই তাদের কাছে সস্তা মনে হোত। সব কিছুর দাম ডলার-পাউন্ড-দিনার -দিরহামে কনভার্ট করে কর সস্তা হিসাব করে বেশ মজা পেত।

এখন আর সেই দিন নাই। দেশে থাকা মানুষ এখন তাদের সামনে সবচেয়ে বড় মাছ কিনে ভাব নেয়, বলে জানিস এইটার দাম কত; দাম শুনে তারা ভিমড়ি খায়!
এমনি ঢাকা থেকে কেউ গ্রাম বা মফস্বলে গেলে বলত। ঢাকাইয়া মানুষ আসছে। তাদের ভাবও ছিল আলাদা। খানিকটা প্রবাসী মানুষদের মত। আর এখন ঢাকায় থাকা মানূষদের দুই ছটাক দাম দেয় না। কেউকেটা, নেতা, বড় ব্যাবসায়ী হলে একটু হালে পানি পায়- না হলে ভাত নাই।
মানুষ কি আসলে ধনী হয়ে গেছে? দেশ কি উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে? এটা কি আসলেই সরকারের সাফল্য?
মোটেও নয়। গত বিশ বছরে একটা দেশের যা কিছু অর্থনৈতিক ও মানসিক উন্নয়ন ও অবনমনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিশাল এক ভুমিকা আছে।
বিভিন্ন মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক কিছু উন্নয়ন হয়েছে সত্য কিন্তু আমরা ভয়াবহ এক অমানবিক জাতিতে পরিনত হচ্ছি।
***
সারা বাংলাদেশ একদিকে আর ঢাকা একদিকে, ঢাকার হাল দেখে আপনি বাইরের শহর গ্রাম কিংবা মফস্বলের অনুমান করতে পারবেন না। এই যে খুব কাছের শহর সাভার বা আশুলিয়ার কথা ধরেন; আমার প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, কি শীত কি গ্রীষ্ম কি বর্ষা সারা দিনরাত বিদ্যুত যাওয়া আসার উপরে আছে। নব্বুইভাগ দিনে ৮ ঘন্টা কাজের সময়ে ৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এমনি এই গ্রীষ্মের ভয়ঙ্কর গরমের দহন তাঁর উপরে পুরোদিন জেনারেটরের শব্দ ( তেলের পয়সার অতিরিক্ত হিসাবের কথা না হয় বাদই দিলাম)। ভয়ানক গরমে ক্লান্ত অবশ্রান্ত শরির আর হ্যাং যাওয়া মগজ নিয়ে বাসায় ফিরি প্রতিদিন।

আজব ব্যাপার কি জানেন; বছরের পর বছর এমন কাণ্ড হচ্ছে কিন্তু একজন মানুষ প্রতিবাদ করছে না। হাজার হাজার ব্যাবসায়ী শত কোটি টাকার তেল পুড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন কিন্তু কারো কিছু বলার সাহস নেই। আমি ওই এলাকার একটা মানুষের মুখেও শুনি নাই 'আর ভাল্লাগে না, এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে মুক্তি চাই!'
কেন? ওখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা বলি; বেশ কিছু বছর আগে এরা শাক সব্জী ফসল বুনে আর গবাদী পশু পালন করে কায়-ক্লেশে জীবন যাপন করত। এরা কোনদিন ভাবেনি ডেসিমাইল বা শতাংশে জমি বিক্রি করবে। মিল ফ্যাক্টরি ঢাকা থেকে বাইরের মুখী হওয়ায় আচমকা এদের ভাগ্য ফিরতে শুরু করে। এরপর শুরু হোল শহরের বাইরে প্রকৃতির ছোয়ায় একটুকরো নিজের জমির নামে প্লট বানিজ্য। সেখানেই থেমে রইল না। ধনবান মানুষেরা রিসোর্ট ব্যাবসায় মনোযোগী হলেন। ১০/২০/৫০/১০০ একর জমিতে গড়ে উঠতে থাকল রিসোর্ট। তারপরে প্রবাসী আর উচ্চবিত্তদের বাগানবাড়ির খায়েসে জমির দাম বাড়তে থাকল চক্রবৃদ্ধিহারে। ওদিকে মিল ফ্যাক্টরি যখন হচ্ছে এদের কর্মীদের থাকার জায়গা প্রয়োজন। ফাঁকা সব আবাদী অনাবাদি জমিগুলো ভরে উঠল একটা টিনশেড কিংবা দোতালা তিনতলা মেস আকারে বাড়ি। কোন মতে ঘর করলেই ভাড়া হয়। ওই এলাকার মানুষগুলো উতপাদনমুখী সব কাজ বাদ দিয়ে পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে এখন শুধু বসে বসে খাচ্ছে। যুবক ছেলেরা দামী দামী মটর সাইকেল দাবড়াচ্ছে, নেশা করছে রাজনীতি করছে আর মাস্তানি করছে। সাংঘাতিক একেকটা পারিবারিক পদবী নিয়ে চোখ রাঙ্গাচ্ছে সব বাইরের মানুষদের।ছোট মাঝারি ব্যাবসায়ীরা প্রসাশনের সন্ত্রাসী আর ওদের কাছে অসহায়।

~ এভাবে একরের পর একর জমি নিয়ে গড়ে উঠছে সখের বাগানবাড়ি বা রিসোর্ট।

ওইসব এলাকায় ফল-মুল ও বেশিরভাগ শাক সব্জীর দামও ঢাকার থেকে বেশী, কেন জিজ্ঞেস করলে বলে, ঢাকার থেকে এসব আমরা আনি!!!
***
আমার ফ্যাক্টরি থেকে গত দু'বছরে অন্তর জনা বিশেক ছেলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে দেশে চলে গিয়েছে। কেন?
বেতনে পোষায় না? হ্যাঁ এটা একটা কারন তো নিশ্চয়ই। কিন্তু স্কিলড একটা ছেলে তাঁর দারুন একতা ভবিষ্যত রেখে এত অল্প বয়সে
হতাশ হয়ে কেন এমন হুট করে চাকরি ছেড়ে দিবে?

~ ব্যাটারিচালিত রিক্সা এখন সারা দেশের জন্য এক ভয়ঙ্কর মাথাব্যাথার কারন। এর জন্য শুধু বিদ্যুৎ নয় যুবশক্তির ভয়ঙ্কর এক অপচয় হচ্ছে। মিল-ফ্যাক্টরির কর্মী থেকে শুরু করে এখন ক্ষেতের ফসল কাটার মুজুর পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এদের অনেকের বিষয়েই পরে জেনেছি;তারা দেশে গিয়ে অটো রিক্সা চালাচ্ছে। এবং কেউ কেউ নাকি এই দু বছরেই অটো রিক্সা চালিয়ে এক-আধখানা পাকা বাড়িও করে ফেলেছে। (তবে দু'চারজন বিদেশে গিয়েছে সেটা নিশ্চিত- আবার কেউ আদম ব্যাপারির হাতে ধরা খেয়ে সর্বশান্ত হয়েছে! সারা বাংলাদেশেই এখন কত লক্ষ ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চলাচল করে সেটা বলা মুস্কিল। এদেশে এখন সবচেয়ে বেশী যুবশক্তির অপচয় হচ্ছে এই অটোরিক্সার খাতে এটা নিশ্চিত, তবে ভিক্ষার পরে স্বাধীন পেশা হিসেবে এর জূড়ি মেলা ভার।
এমন স্বাধীন আর ইচ্ছামাফিক ব্যাবসায়িক পেশা আর কমই আছে। সকাল দশটা নাগাদ ঘুমিয়ে-গরম ভাত খেয়ে, অবৈধভাবে চার্জ করা ব্যাটারিচালিত রিক্সা নিয়ে ঘন্টা দুই তিন চালিয়ে বসায় ফিরে, ভাত খেয়ে ঘুমিয়ে আডদা দিয়ে বিকেলে বা রাতে দু-চার ঘন্টা চালিয়ে চমৎকার একটা উপার্জন নিয়ে বাসায় ফিরলাম। নিজের রিক্সা না থাকলে একটু ঝামেলা আছে- আর প্রসাশন ও এলাকার নেতাকে ম্যানেজ করে চলতেই হবে, এইটা আইন। ঢাকা থেকে তেতুলিয়া একই আইন চলছে।
***
ফেসবুক-ইউটিউব টিভি সহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়াঃ



সারা বাংলাদেশের চাষা-ভুষা শিক্ষিত অশিক্ষিত লোক বুঝে গেছে দেশী মাছ মাংস আর নন হাইব্রিড ও তাজা জিনিসের জন্য মানুষ দু'পয়সা নয় অনেক পয়সা বেশী দিতে রাজী। নদীর মাছ, দেশী মুরগী, দেশী মুরগীর ডিম, ক্ষেতের তাজা শাক সব্জী, দেশী কলা মুলো ছাতু গুড় আখ ফল মুল- এগুলোর জন্য শহরের মানুষ মুখিয়ে ছিল এতদিন। হালে এই ট্রেন্ড শুরু হয়েছে গ্রাম বা মফস্বলেও। হালে কোন এক জেলে নদী কিংবা খাল বিল থেকে দেশী কিছু মাছ ধরে টুকরিতে করে নিয়ে যাবার সময়ে এমন ভাব করে যে কোন সোনা- জহরত নিয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি তাজা ও দেশী মাছের লোভে তাদের কাছে গিয়ে দাম জিগ্যেস করেন তবে নব্বুই ভাগ ক্ষেত্রে তারা বাজার থেকে দাম অনেক বেশী চাইবে। আগের সেই সহজ সরল মানুষগুলো আর এখন নাই। সবাই খুব বেশী প্রাকটিক্যাল আর প্রফেশনাল হয়ে গেছে।
আগে ধোঁকা বেশীরভাগ শহরের মানুষ দিত। এখন অজ-পাড়াগায়ের মানুষও ভেজাল দেয়া আর ধোঁকা দেয়ায় ওস্তাদ হয়ে যাচ্ছে।
সবাই যে হয়েছে তা নয়। কিন্তু পুরো সমাজটাকে ঘুনে ধরেছে।

~ অর্গানিকের নাম করে কে কি বিক্রি করছে কেউ জানে না কিন্তু বিক্রি হচ্ছে সাধারণ পণ্যের থেকে অনেক বেশী দামে।

টিকটক, রিলে গ্রাম আর শহর কেউ কারো থেকে পিছিয়ে নেই। শহরে কোন পণ্য মুল্যে আগুন ধরে এটা মুহুর্তে ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে- সঙ্গে সঙ্গে সেখানেও আগুন জ্বলে ওঠে। তবে পচনশীল দ্রব্যে সেই আগুন উতপাদ্নকারীরা জ্বালিয়ে রাখতে পারেনা বেশীক্ষন। কিন্তু 'রাখী' মালে কেউ কারো থেকে কম নয়। দেশের কোথায় কেমন উৎপাদন যোগান বাইরের দেশের উৎপাদন,আমদানী- ডলারের দাম, আমদানী নিষিদ্ধ ঘোষনা, ভ্যাট শুল্ক ছাড় সহ সব কিছুতেই সবাই খবর রাখে। যেটা একসময় শুধু কিছু ধনবান জোতদার ব্যাবসায়ী ফড়িয়াদের হাতে ছিল সেটা এখন দু চার লাখ টাকা হাতে থাকা মানুষের হাতেও চলে গেছে। নিত্যপণ্যের বাজারে নব্য কর্পোরেটদের বিশাল থাবা ও সব ব্যাবসা কুক্ষিগত করার পায়তারার পাশাপাশি এইটাও একটা বড় কারন পণ্যমুল্য বাড়ার।
এর বাইরে খাঁটি তেল ঘি, নদীর মাছ দেশী মুরগীর তিল তিসি আখের গুরের নাম করে শহরের বাইরে শত শত ছেলেরা অনলাইন ব্যাবসা করছে। এদের বড় একটা অংশ ব্যাবসার নামে করছে জোচ্চুরি- লোক ঠকাচ্ছে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ঠগছে শহর ও শহরকেন্দ্রিক মানুষেরা।

কেউ কেউ ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে শুধু প্যাকিং ও কুরিয়ারের অগ্রীম টাকা নিয়ে মেরে দিচ্ছে। ১০০ টাকার জন্য তেমন আর কেউ উচ্চবাচ্য করছে না কিন্তু এভাবে লক্ষ কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। পুরো দেশের আনাচে কানাচে মানুষ অনলাইন মিডিয়ার বদৌলতে সবধরনের ব্যাবসা থকে শুরু করে ফেরেব্বাজি ফাঁকিবাজি শিখে যাচ্ছে। খুব সহজে মানুষের পকেট থকে টাকা খসানোর বুদ্ধিটা জেনে যাচ্ছে। গ্রাম মফস্বলের মানুষদের সহজ সরল মনে করে এবং তাদের কাছে অথেন্টিক জিনিস আছে ভেবে ধরা খাচ্ছে শহুরে লোক।

~ এমন হাজারো নামে ফেসবুকে প্রতারনার জাল বিছিয়ে রেখেছে শহর থেকে মফঃস্বল হয়ে গ্রামে সবখানের মানুষেরা। এরা লাইক, ফলোয়ার, সাবস্ক্রাইবার থেকে শুরু করে মন্তব্য পর্যন্ত পয়সা দিয়ে কিনে নেয়। বিরূপ মন্তব্য অপছন্দের কোন বিষয় সবকিছুই এইসব পেজে ফিল্টার হয়ে যায়। প্রোডাক্ট হাতে পাওয়ার ছবি সহ চমৎকার সব মন্তব্য সবগুলোই মিথ্যে- হাজার হাজার বেকার বসে থাকা ছেলে মেয়েরা স্মার্ট মোবাইল নিয়ে শত শত ফেসবুক ইউটিউবে মিথ্যে লাইক মন্তব্য দিয়ে পয়সা কামায়।

~ জ্বীনের বাদশার মত এমন বহু পরিচয়ে অনলাইনে প্রতারনার জাল বিছিয়ে কিছু মানুষকে সর্বশান্ত করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত কিছু মানুষ। মুল প্রতারকদের শেকড় মূলত মফঃস্বল ও গ্রামে। ইন্ডিয়াতে 'জামতারা' (সাবকো নাম্বার আয়েগা) নামে নেটফ্লিক্সে সত্য ঘটনা অবল্মবনে একটা সিরিজ আছে; যেখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে পুরো একটা গ্রাম জড়িয়ে পড়ে অনলাইন স্ক্যামে।এমনটা কমবেশি আমাদের দেশেও আছে।
ঢাকা শহরে যত ধরণের প্রতারক চোর, পকেটমার, মলম পার্টি, বমি পার্টি, অজ্ঞান পার্টি আছে এদের প্রায় সবাই শহরে এসে পার্ট টাইম কুকর্ম করে নিজের বাড়িতে গিয়ে সুফি সেজে আয়েশ করে। (এরা সমাজের অতি ক্ষুদ্র অংশ)
***
সবাই যে বাকা পথে অসৎভাবে আয় রোজগার করছে তা নয় মোটেই। তবে প্রান্তিক মানুষের হাতে টাকা যাচ্ছে সেটা একটা ভাল লক্ষন। শহরের ও সারাজীবন প্রবাসে থেকে ক্লান্ত বিষন্ন একজীবন জন্মভুমি ছেড়ে পরভুমে কাটিয়ে আসা মানুষেরা জীবনের শেষ লগ্নে একটু আত্মার শান্তির খোঁজে ছুটে আসতে চান গ্রামের নিভৃত কোলে। তাদের কত সপ্ন থাকে এক টুকরো গাছ গাছালি ছাওয়া জমি, একটু খামার, একটা পুকুর সাথে একটা বাংলো। সেই সপ্নে বিভোর এখন হাজারো লক্ষ বাঙ্গালী। একদম অজ পাড়াগাঁয়ে আজ জমির দাম বেড়ে যাচ্ছে হু হু করে। সেনেটারি টাইলস এসি মিস্ত্রি খুঁজতে আর শহরে যেতে হয় না। সেই বাঁশ কাঠ ছনে ছাওয়া ঘরগুলো আজ বিলুপ্ত প্রায়। পাকা ছাদ না হলেও রঙ্গীন টিন এসবেস্টর আর টালি তাঁর জায়গা দখল করে নিচ্ছে। পাকা বাথরুম, কমোড, গ্যাসের রান্নাঘর এখন গ্রামে আর কোন সপ্ন নয়।

~ শহরে কি গ্রামে একটুকরো জমিতে নিজের মনের মত বাড়ি করতে আর সেই হ্যাঁপা নেই। কাই-এর মত বহু কর্পোরেট ব্যাবসায়ীরা এখন এগিয়ে এসেছে অল্প পয়সায়- অল্প দিনে যেমন খুশী বাড়ি করে দিবে। এমন একটা বাড়ি বানাতে মাত্র ১৬ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। ( এখন নাকি ৮/১০ লক্ষ টাকায় অনেক কোম্পানী এমন কিংবা ডুপ্লেক্স বাড়ি অফার করছে)
***
ফুটনোটঃ আমি হয়তো এখানে ৬০ ভাগ মানুষের কথা বলছি। বাকি ৪০ভাগ মানুষের কথা আমি জানি না কিংবা তাদের কাছে আমি পৌছাতে পারি নাই। আমার কেন যেন মনে হয় ইদানিং গ্রামের মানুষের থেকে শহরে অভাবীদের সংখ্যা বাড়ছে বেশী; আমি এখানে নিন্ম বা নিন্ম-নিন্মবিত্তদের কথা বলছি না। আমি বলছি যারা মধ্যবিত্ত বা নিন্ম মধ্যবিত্তদের কাতারে ছিল তাদের কথা। কেরানীগিরি বাদ দিলাম স্কুল মাষ্টারি বা কলেজের শিক্ষকতার ( সেটা সরকারী হলেও) মত পেশায় এ শহরে ভদ্র পল্লীতে থেকে জীবন নির্বাহ করা অতীব কঠিন ব্যাপার! ৫০ হাজার টাকা বেতনে ঢাকা শহরে দুই কামরার একটা ভাড়া বাড়িতে থেকে চারজনের ( বাচ্চাদের পড়াশুনা+ চিকিৎসা ব্যয়) সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব এখন। কিন্তু একজন সরকারি সহকারি অধ্যাপক সম্ভবতঃ ৩৮ হাজার টাকা বেতন পান। কি ভয়াবহ ব্যাপার!

***
ধনবানদের ক্ষমতাবান হবার খায়েশে গ্রামমুখী রাজনীতিঃ
গতকালের টিআইবি'র রিপোর্ট ছিল 'সম্পদে এমপিদের ছাড়িয়ে চেয়ারম্যানরা'



পাঁচ বছরে অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধিতে সংসদ সদস্যদের ছাড়িয়ে গেছেন উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা।এবার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে কোটিপতির সংখ্যা ১১৭।
শহরে এখন অবৈধ টাকার পাহাড় গড়া মানুষ হাজার হাজার। টাকা হলে মানুষ চায় ক্ষমতা আর ক্ষমতার জন্য সবচেয়ে লোভনীয় হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচিতি- তবে সেটা অবশ্যই সরকারদলীয় হতে হবে। মানুষের লোভের শেষ নাই; টাকার জোড়ে গরু ছাগল ধেনো ইদুর সবাই সমাজের মাথা হতে চায়। এমপি হওয়াতো চাট্টিখানি কথা নয়, তাই অনেকের নজর থাকে পৌরসভার মেয়র, উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান না হলে নিদেন পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানের মত জনপ্রতিনিধির দিকে। শুধু শহরের ধনবান পয়সাওয়ালা লোক নয়- বিদেশ ফেরত অর্থবান মানুষেরাও ছুটে আসছে দলীয় পদ পদবী বাগানো বা এইসব জন-প্রতিনিধি হবার লোভে। দেশের এক ধরণের মানুষই আছে ফাঁদ পাতার জন্য; দিন-রাত খোচাতে থাকে। 'আপনি দাড়াইলেই কেল্লা ফতে'- 'আপনার পাশে দাড়ানোর মত আর কোন লদু-ছদু আছে?' 'সারাজীবনতো অনেক কামাইলেন- এখন দেশের মানুষের জন্য কিছু করেন।'
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে এখন কাগজের মত টাকা ওড়ে। প্রার্থীরা দু-চার বছর আগে থেকেই থাকার থলি নিয়ে দৌড়াতে শুরু করে। প্রসাশন, পাতি নেতা,হাতি নেতা, উঠতি নেতা, ময়-মুরুব্বি, বখাটে -ফেরেব্বাজ সব ম্যানেজ করতে হয়। একটা উপজেলা নির্বাচনে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করেন এমন প্রার্থী কয়েক শত।
এদের টাকায় সারা বছর মটর সাইকেল চালিয়ে গুলতানী মারে কত-শত পুলাপান তাঁর হিসাব নেই।
***
শহরের মানুষের ধর্মের প্রতি ঝোঁক বেড়ে যাওয়া ও গ্রামের মানুষের পোয়াবারোঃ
ঢাকা নাকি মসজিদের শহর। এই তালিকায় চাঁটগা সিলেটও পিছিয়ে নেই। গত ত্রিশ বছরে ঢাকায় মসজিদের সংখ্যা যতনা বেড়েছে তাঁর থেকে বহুতল হয়েছে বেশী। এখনো জুম্মাবারে কোন মসজিদেই মুসুল্লী সঙ্কুলান হয় না- শহরের বহু রাস্তা আটকে যায় নামাজীদের জন্য।
আমার দেখা মতে গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষ ধার্মিকতা ও নাস্তিকতা দু'দিকেই বহুগুন এগিয়ে আছে বা যাচ্ছে। তবে মানুষের অসুস্থতা অস্থিরতা সামাজিক অবক্ষয় দুর্নীতি লোভ দুর্দমনীয় আকাঙ্খার পাশাপাশি কেন এত ধর্মভীরুতা বাড়ছে সেটা একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা বটে। হাজার হাজার শিক্ষিত তরুন তাবলীগ করছে- কেউ কেউ ধর্ম আলোচনায় উচ্চবাচ্য করলেও অনেকে একেবারেই নিশ্চুপ, তারা নিজ মনে নিজের মত করে সব রকম লজিককে পাশ কাটিয়ে ধর্মপালন করে যাচ্ছে।
আমি আমার বাল্যকালে কোন যুবক ছেলে মেয়েকে হজ্জ বা উমরা পালন করতে দেখিনি। কিন্তু এখন প্রতি বছর শত সহস্র যুবক যুবতী হজ্জ বা উমরা পালন করতে মক্কা- মদীনায় যাচ্ছে।



যাকাত কিভাবে ফাঁকি দেয়া যাবে কিংবা কত কম যাকাত দেয়া যায় তাই নিয়ে আগে ধার্মিক ধনবানদের চেষ্টার কমতি ছিল না। এখনো তেমন মানুষ নেই তা নয়- তবে অনেকেই পরিপূর্ণভাবেই তাঁর নিয়ম পালন করছে বা বেশী বেশী করছে। বহু শত প্রবাসী ও দেশি ধনী মানুষ তাঁর গ্রামে এতিমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, মসজিদ, স্কুল করে দিচ্ছে। সেখানে টাকা ঢালছে দেদারছে- কিন্তু যাদের মাধ্যমে যাচ্ছে বা যাদের কাছে যাচ্ছে, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সেখানে হচ্ছে নয় ছয়। শহর গ্রাম বা মফস্বলের শত শত পরিবার এখন শুধু তাদের ধনী আত্মীয়স্বজন ( এর মধ্য বহু দূর সম্পর্ক বা -লতায় পাতায় আত্মীয়ও আছে) শুধু এই যাকাতের টাকায় বসে বসে খাচ্ছে। কেউ কেউ ভাঙ্গা বাড়ি মেরামত করবে, দোকান দেবে বল্‌ ভ্যান গাড়ি, অটো, গরু কিনবে বলে বড় অঙ্কের যাকাতের টাকা নিয়ে পুরো টাকায় ভালমন্দ খেয়ে-দেয়ে কোন অনুশোচনা ছাড়াই দিন কাটিয়ে দেয়।

***
উন্নয়নে অধিগ্রহণঃ অনুর্বর অনাবাদি জমির মালিকরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছঃ
পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন লাইন, গভীর সুমুদ্র বন্দর, থার্ড টার্মিনাল সহ এই সরকারের ছোট বড় হাজারো দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্পে মানুষ সুবিধাভোগ করছে সেটা বলার জন্য সরকারের দালাল হতে হয় না। তবে এই সব প্রকল্পে প্রয়োজন জমি অধিগ্রহন। এর পাশাপাশি সারা দেশ জুড়ে হচ্ছে স্পেশাল এক্সপোর্ট ইকোনোমিক জোন বা ইপিজেড। ওদিকে মসজিদ,হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় এগুলোর জন্য জমি অধিগ্রহন একান্ত প্রয়োজন।
ওদিকে এসবে যে ছোট বড় দুর্নীতি হচ্ছে আবার সেটা বোঝার জন্য বিশাল টিআইবির চেয়ারম্যান বা দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের মত অর্থনীতিবিদ হতে হয় না।
কিন্তু দুর্নীতিটা কোথায় কোথায় হচ্ছে সেটা ফাইন্ড আউট করা মুশকিল!
আমার জানা মতে এযাবতকালে জমি অধিগ্রহন নিয়ে সবচেয়ে বেশী দুর্নীতি হয়েছে পদ্মা সেতুতে বিশেষ করে এর রেল প্রকল্পে! এই দুর্নীতির প্যাটার্ণটা একটু ভিন্ন ছিল। এর সাথে সম্ভবত সরকারের উর্ধ্বতন মহল জড়িত নাও থাকতে পারে। তবে স্থানীয় প্রশাসন, ক্ষমতাবান, রাজনীতিবিদ ও প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জড়িত ছিল এটা মোটামুটি নিশ্চিত।
জমি অধিগ্রহনে খাস জমি, খাদ, পুকুর, খানা-খন্দ, অনাবাদী, এক ফসলী, পুর্ন আবাদী, ভিটা জমির জন্য আলাদা আলদা মুল্য বরাদ্দ থাকে। স্বভাবতইঃ বাড়িঘর সহ ভিটা জমির মুল্য সবচাইতে বেশী থাকবে। কেরানীগঞ্জ থেকে শুরু করে ভাঙ্গা পর্যন্ত- যত জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে তাঁর একটা বড় অংশের নাকি ভিটা জমি হিসেবে মুল্য পরিশোধ করা হয়েছে এমনটাই সংবাদে এসেছে।



কিভাবে? পরিদর্শনের আগেই খবর চলে যেত জমির মালিকের কাছে। রেডি থাকত মোবাইল বাড়ির ব্যাবসায়িরা। তারা পয়সার বিনিময়ে রাতারাতি বাড়িঘর করে গাছপালা লাগিয়ে হাঁস মুরগী ছেড়ে, গরুর গোয়ালঘর বানিয়ে পুরো গেরস্তর ঘর করে দিত। পরদিন প্রকল্পের লোক এসে জমির দাগ খতিয়ান বুঝে নিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যেত।
কারসাজির ‘সম্রাট’ হুমায়ুন ~বিস্তারিত জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
সরকারী টাকার বড় অংশ পেয়ে যেত জমির মালিক আর ভাগের টাকা চলে যেত প্রশাসন, চেয়ারম্যান-মেম্বার, নেতা আর প্রকল্পের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে। এভাবে সাধারণ গেরস্ত থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে হাজার মানুষ।
***
মোবাইল কমিউনিকেশন ও ডিজিটাল লেনদেনঃ ঘরে বসে রাজার হাল,এমন অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আছে, সময় সুযোগ পেলে করব নিশ্চিত। লেখা অনেক বড় হয়ে গেছে। আজ এ পর্যন্তই থাক। তবে আলোচনা সমালোচনা সব ব্যাপারেই হতে পারে। যে কোন যুক্তিযুক্ত মতামত গ্রহণযোগ্য- আমি সব কিছু জেনে বুঝে বসে আছি সেটা মোটেও নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১:১৫
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×