অপরাজিত
.................................................
ছুড়ে ফেলতে পার যত
আমার দেয়া গোলাপ শত
ঠোট বাকাতে পার অবজ্ঞায়
কাদা লেপে আমার আশায়।
অথবা তোমার শিয়ালনীর ছলাকলা
বাড়িয়ে দিতে পারে আমার অন্তর্জালা,
ভুলে যেতে পার আমার একনিষ্ঠতা
ভালবাসাকে বানিয়ে দিয়ে ব্যার্থতা।
জেনে রেখো তুমি
বিনাযুদ্ধে ছাড়বোনা আমি সূচাগ্র ভূমি
যে ভূমিতে তোমার জন্য বহমান নদী,
তা যে কত খরস্রোতা তুমি বুঝতে যদি।
যদি না পাই ভালবাসা প্রত্যাশিত
তারপরও রইবো আমি অপরাজিত
তুমি জাননা মেয়ে
হোক সে নিস্তব্ধ পারাবার
অথবা কোন ঝড় আবেগিক,
হার মানেনা প্রেমিক পুরুষ
পরাজিত হয়না প্রেমিক।
রামু থেকে সুন্দরবন
....................................................
জল ছলকে ওঠে তোমার পায়ের ছোয়ায়
বড়মামা পালায় তোমার হায়দারি হাঁকে
ঝড়ের বুকে চলে তোমার অভ্রভেদী নাও
দূর পাহাড়ের সবুজ গায়ে মেখে
উড়াল দিতে চাও নীল্ আকাশের পাখির মতো
মানুষ হয়ে বাঁচার তাগিদ তোমার অবিরাম
তবে কেন তোমার আকাশে ওড়ে স্বৈরাচারী শকুন?
তবে কেন তোমার মাটিতে সম্প্রসারণবাদী শেয়ালের আনাগোনা?
তবে কেন ইতিহাসের কৃষ্ণচক্র ফিরে আসে বারবার?
ভাই আমার, ডাকছি তোমাদের বাংলার সবুজ প্রান্তর থেকে,
নেমে এস ঐ পাহাড় ডিঙ্গিয়ে
পেরিয়ে এস ঐ দানবীয় জলরাশি
আস আর বলো, এদেশ আমার
কোন শকুন শিয়ালের নয়!
মুক্তিযুদ্ধের ঠিকাদারী
....................................................
প্রতারণা তোর চোখেমুখে
মিথ্যা তোর বুলিতে
দাজ্জালের মত তুই
স্বর্গের আশ্বাস দেখিয়ে
পাঠাস পত্রপাঠ নরকে।
ভাইয়ের মাঝে তুলে দিস দেয়াল
করিস চেতনা নিয়ে বেশ্যাবৃত্তি
চোখের লকে অবজ্ঞা করিস।
বাঙ্গালীর হাজার বছরের সংস্কৃতিকে
করিস মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা।
উগ্রতা তোর চলনে
সীমালঙ্ঘন তোর রক্তে
তোদের দেখেই বুঝতে পারে হারাধনের ছেলে
মুক্তিযুদ্ধও আজ চলে গেছে
নষ্টদের অধিকারে।
তুই ফ্যাসিস্ট
তুই উগ্র জাতীয়তাবাদী,
তুই নরাধম, তুই নরকের কীট
তুই বর্বর, তুই অমানুষ।
মুক্তিযুদ্ধের ঠিকাদারী তোকে কে দিলো?
কে কে কে দিলো?
শূন্য মানুষ
..................................................
টিএসসির কোন এক নবীনবরণের অনুষ্ঠানে
নীল শাড়ি পরা মিষ্টি তরুনীটি
যখন দু’হাত বাড়িয়ে আদর করলো কুকুর ছানাটিকে
আর বেড়ে যেতে লাগলো আমার অন্তর্বেদনা,
তখন আমি জানলাম
কখনও কখনও কুকুর হয়ে জন্মানোও
মানবজন্মের থেকে অনেক প্রীতকর।
কেননা, তাদের এই আলোকজ্জ্বল মিলনমেলায়
আমি যেন নিতান্তই বাইরের কেউ
দারুণ বেখাপ্পা, বড্ড বেমানান।
মুক্ত গান আসেনা কনডেম সেলের কয়েদী থেকে
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে আটকে পড়া মানব
পারেনা জ্বালাতে উল্লাসের আতশবাজি
শূন্য মানুষ এই আমি
টিকে থাকে আমার ভাঙ্গাচোড়া চোখে
আর অসমাপ্ত গানের পোড়া পোড়া বেদনা
যেন আমি সময়ের হাতের খেলনা মাত্র।
ভিখীরি নই
...............................................
চাহিদা খুব বেশী ছিলোনা আমার
একটা মিষ্টি শ্যামবরণ চারচোখা ললনা
সেওতো ছিলো অসাধারণ আমার কাছে।
যখন বড় বোন বলেছিলো,
তোর জন্য চাকুরীজীবি মেয়ে দেখি
তখন ভাবলাম,
কনকর্ড এম্পোরিয়ামের বইয়ের দোকানে
যে স্নিগ্ধ লাবণ্যময়ী মেয়েটি বসে,
অথবা মিরপুর স্টেডিয়ামের উল্টোদিকে বুটিক হাউসে
ডাড়িয়ে থাকে যের সুন্দরী বিক্রয়কর্মী,
সেওতো যথেষ্ট উপযুক্ত এই চালচুলোহীন আমার জন্য।
যদি না থাকতো আমার হৃদয়ের এই ভ্রুকুটি।
আমিতো ভিখিরী নই যে
তোমার দরজায় প্রত্যাখ্যাত হয়ে
কড়া নেড়ে যাব দরজার পর দরজায়,
আমার প্রত্যাখ্যান ও প্রত্যাবর্তন
শুধুমাত্র তোমার পাষাণ দুয়ারে।
সিডনির সৈকতে উদোম হাওয়ায়
খোলাচুলে উন্মাতাল তুম্
গোণনা আমাকে কড়ে আঙ্গুল দিয়েও।
তোমার ওপাশে সূর্যের সব আলো
আর আমার দুনিয়ায় এখনও আমি
ইশ্বরকণার বিজ্ঞানীদের মতো
খুজে ফিরি ইশ্বরের অনুগ্রহ।
তবুও মাহবুবা, প্রিয়তমা আমার
তোমার পাড়াতেই থাকবেও আমার
নিত্য যাতায়াত হাজার,
আমার ভালবাসা জেনে রেখো
কিনতে পারে এই দুনিয়াকে অজস্রবার।
একজন একলব্য ২
..............................................................
গুরুয়ালয় হতে থাকে উঁচু থেকে উঁচু
নিত্যনতুন বাড়ে তার জাঁকজমক।
দ্রোণার চারপাশে বেড়ে যেতে থাকে
অভিজাত পান্ডবদের ভীড়
জমে ওঠে জমজমাট ধনুর্ব্যবসা।
একলব্য জানে তার স্থা এখানে নয়
গুরুর সাহচর্যই মোক্ষ নয়,
বরং গুরুর শিক্ষাই সে ছড়িয়ে দিতে চায়
শতশত অর্জুন আর একলব্যের মাঝে।
ব্যাকপকেটের ১১৯টি টাকা
আর বুকপকেট ভরা স্বপ্ন নিয়ে
নেমে আসে সে জনস্রোতে
অনুসারী নয়, নেতা সৃষ্টিই তার লক্ষ্য।
স্মরণে দ্রোণার শিক্ষা
হৃদয়ে তার প্রতিচ্ছবি
একলব্য আবারও তুলে নেয় ধনুর্বাণ,
যুদ্ধ আর দারিদ্র্য হার মানবে আরও একবার।
এদিকে, ভেড়ার পালের মত বেড়ে চলে দ্রোণার শিষ্যসংখ্যা।
কিন্তু, দ্রোণা জানুক বা না জানুক
তার সর্বশ্রেষ্ঠ অনুসারীটি
লক্ষ্যভেদ এবার করবেই করবে,
কুরুক্ষেত্রে তার জয় অবশ্যাম্ভবী।