আজকে ব্রাজিল-স্পেন ফুটবল যুদ্ধ, খেলাটা দেখার আগ্রহ আছে ২০০%, কিন্তু অত রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে পারবো কিনা সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন! আমি খেলাধুলার খুব ভক্ত, সবসময় সব ধরণের খেলার খবরই রাখার চেষ্টা করি...সুযোগ পেলে এখনও খেলতে নেমে যাই। অনেকদিন পর ইচ্ছা হচ্ছে ছোটবেলার মত কাঁদা মেখে বৃষ্টিভেজা পিচ্ছিল মাঠে ফুটবল খেলি!
আমার কাঁদা মাখা জার্সি ধুতে ধুতে ক্লান্ত আম্মু যে আমাকে কত বকাঝকা করেছেন তাঁর হিসাব নেই, তবুও আমি খেলেছি। খুব যে ভালো খেলতাম তা না, তবে আগ্রহ ছিল অনেক। চশমা পড়ে বৃষ্টি আর কাঁদার মাঝে যারা ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছেন তারাই বুঝবেন সেটা আসলে কেমন পেইন! এই পেইন আমি প্রতিদিন নিতাম, আর আফসোস করতাম নিজের দুর্বল চোখের জন্য। আহা, যাদের চশমা নেই তাঁরা না জানি কি সুখেই আছে!
আমাদের বাসার সামনেই এক বিশাল মাঠ ছিল (এখনও আছে!), সেখানে বিকাল থেকেই আশেপাশের সব এলাকা থেকে ছেলেপিলে, চাচারা জড়ো হতেন। সবাইকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে দুই দলের দুই ক্যাপ্টেন (বেশীরভাগ সময়ই বয়স্ক চাচারা ) তাঁদের দলের খেলোয়াড় বেছে নিতেন। কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই খেলায়, একেক দলে অনেক সময় ২০-২২ জনও হয়ে যেত, পাস-টাস এর কোন বালাই নেই। বল যার পায়ে সাড়া মাঠ তাঁর পেছনে! আর আমি বল নিয়ে তেমন কারিকুরি করতে না পারায় ডিফেন্সে দাঁড়িয়ে থাকতাম, বল আসলেই সজোরে উড়িয়ে দিতাম! (এটা অবশ্য বেশ ভালোই পারতাম)
অনেক মিস করি সেই খেলাটা, ছেলে বুড়ো সবার সাথে একসাথে সেই খেলাটা সারাজীবন মনে থাকবে। ক্রিকেট আমাদের প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হলেও এখনও কিন্তু বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ ফুটবলের পাগল। অথচ আমাদের ফুটবল দিন দিন শুধু নিচেই নামছে, আফসোস। এখনকার ছেলেরা এইসব খেলাধুলা করার চেয়ে বিভিন্ন গ্যাজেটস নিয়েই বেশী ব্যাস্ত, ক্লাস ৮-৯ এ পড়া ছেলেরা মাঠে ফিল্ডিং না করে রাস্তায়/পাড়া মহল্লায় ফিল্ডিং মারতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে! আমি যেই মাঠে খেলে বড় হয়েছি, সেখানে একই সাথে ৫ টা খেলা হতো। অনেকে জায়গার অভাবে খেলতে পারত না, আজকে সেই মাঠ খাঁ খাঁ করে। এই প্রজন্মটা মাঠে গিয়ে খেলার চেয়ে বাসার ভেতরে মনিটরের সামনেই খেলেই বেশী আনন্দ পায়। আমি আবার ফিরে যেতে চাই সেই সময়টাতে, মাঠে নেমে কাঁদা মেখে খেলতে চাই আবার...কারো কাছে একটা টাইম মেশিন হবে?