আজ ন্যশলাল জিউগ্রাফী চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখলাম। একটি চিতাবাঘিনী এক বানরকে খাবার হিসেবে গ্রহনের উদ্দেশ্যে মেরে ফেললো এবং দাঁত দিয়ে কামড়ে গাছের উপরে উঠিয়ে নিলো। কিন্তু বাঘিনীটি হঠাত দেখতে পেলো মা বানরটি যাকে সে হত্যা করেছে তার নিচে ছোট্ট একটি বানরের বাচ্চা চুক চুক করে মায়ের দুধ খাচ্ছে। মায়ের নিথর দেহ থেকে কবে যে প্রান পাখী চলে গেলো তার কোন খেয়াল এই ছোট্ট বানরটির নেই। এবার আমাদের অবাক হবার পালা।
চিতা যখন এই ছোট্ট বানরটিকে দেখলো তখন সে বুঝতে পারলো একটা চরম ভুল সে করে ফেলেছে। কিন্তু তাতে কি? সে তো আর চাইলেই মা বানরটিকে ফেরাতে পারবেনা। বাঘিনীটি চিৎকার করছে। এর কিছু পরে এসে বাচ্চা বানরটিকে আদর করে বুকে টেনে নিলো। নিজের জিহবা দিয়ে বানর শিশুকে আদর করতে লাগলো। এখন এই বানরকে পিঠে নিয়েই চিতা বাঘটি সারা বন ঘুরে বেড়ায়। নতুন ডোরাকাটা এ মা পেয়ে বানর শিশু আনন্দে আত্মহারা।
আসলে এই ভিডিওটি আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে মাতৃরুপের মহিমার প্রতি। দেখুন মানুষের বেলায় চিন্তা করুন। আমার কিছু সহকর্মী আছেন যারা গর্ভবতী। সারাদিন কতো কষ্ট আমি বুঝতে চেষ্টা করি। একবার চেয়ারে বসেন আবার সেখান থেকে খাটে বসেন একটু কাত হয়ে শোয়ার চেষ্টা করেন। যেনো কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেনা। সারাদিন খেতে ভালো লাগেন, অস্থির লাগতে থাকে। রাতে ভালো ঘুম হয়না। দিন রাত সে যে কি অনবধ্য কষ্ট। অথচ তাঁর সব ঘুম কেড়ে নিয়ে সন্তানটি কিন্তু ঠিকই পেটের জোঠরে আরামের ঘুমে আছে। আর প্রসবের সময় সে যে কী তীব্র যন্ত্রনা তা আর ভাষায় প্রকাশ করা যায়না।
এমন এক সময় আসে সন্তান বড় হয়। সন্তানের সংসার বড় হয়। বৌ বাচ্চা নিয়ে ব্যস্ত সন্তান মা এর কথা দিব্যি ভুলে বসে থাকে। মাঝে কেউ কেউ এক কাঠি সরস হয়ে মাকে পাঠিয়ে দেয় বৃদ্ধাশ্রমে।
জানিনা আমি তুমি আমরা মায়ের সাথে কিরুপ ব্যবহার করতে পারি বা পারবো, তবে জেনে রেখো মায়ের চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকলেও মানুষের গুনাহ মাফ হয়ে। আর মায়ের সাথে সেরুপ ব্যবহার করো যেরুপ ব্যবহার তুমি তোমার সন্তানের কাছ থেকে আশা করো।
শেষ করবো রাসুলে পাকের একটি সুন্দর হাদিস দিয়েঃ
একদা নবীজী স. বললেন, ধ্বংস হোক। ধ্বংস হোক। পুনরায় ধ্বংস হোক। বলা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কার কথা বলছেন? তিনি বললেন, যে তার পিতা-মাতা উভয়কে বা কোনো একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেয়েছে, অথচ এরপরও সে (তাদের খিদমত করে) জান্নাতে যেতে পারে নি। -মুসলিম
সবার আগে বরষা নামুক বিবেকের উঠোনে