.
পুরানো যেকোন জিনিসের প্রতি আমার আগ্রহ অসীম । কারন তার পরাতে পরাতে কাহিনী , তাই নানার এই বিশাল সিন্দুকের যতসব পুরানো সব দলিল দস্তা বের করে পড়তে বসেছি । নানুভাই এখন অসুস্থ তাই ঢাকার হাসপাতালে আছেন । আর আমাকে ঘর পাহারা দিবার জন্য মা এখানে পাঠিয়েছে । কি আর করা ? বসে বসে মাছি মারছি তো মারছি আর ঠিক সে সময়ে চোখে পড়ে সিন্দুকটি ।
আমার নানার বয়স প্রায় ৯০ এর কাছাকাছি । এই বয়সেও মানুষটা এখনো অনেক শক্ত । চোখে দৃষ্টি এখনো পরিস্কার । নানা বলে ছিলেন গত ৩০ বছর ধরে এই সিন্ধুক খোলা হয়নি , আমি চাইলে কি আছে দেখতে পারি । কিছু যখন করার নেই বসে গেছি পুরানো কিছু রহস্য উদ্ধার করার নিমিত্তে । কিন্তু সে পুরানো দিনের এক দুই টাকার চালের হিসাব দেখতে দেখতে মন বিষয়ে উঠেছে ।
হঠাৎ একটা খাতা পেলাম । এর বাধাই আর লিখা সম্পুর্ন অপরিচিত । একটু ভালো করে খেয়াল করতেই দেখি লিখাটা চাইনীজ ! আর ব্যাস আগ্রহ মাত্রা চুড়ান্ত । এটা নানার কাছে কেন ?
.
এই লিখাগুলোর অর্থ কি ? সারা রাত এই চিন্তা মাথা ভারি করে রাখলো ।
.
দেরী নয় , সরাসরি স্যারের কাছে গেলাম । -"স্যার এগুলোর অর্থ কী ?"স্যার গম্ভীর চোখে আমাকে দেখলেন । আমার মনোভাব কি বুঝার চেষ্টা করছেন । স্যার আমাদের ইউনির্ভাসিটির একজন প্রবীন অধ্যাপক , একজন ভাষাবিদ । চাইনিজ পারে কি না জানি না , তারপরও ট্রাই করে দেখলাম । অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও লিখাগুলো দেখলেন । এরপর তার ভ্রু কুচকালো । ধীরে ধীরে পড়ার গতি বাড়তে লাগলো । "এটা কোথায় পেলে ?" জানালাম । -"প্রথমেই বলে দিই লিখাটা চাইনীজ না জাপানিজ , আর এই লিখন রীতি একদম ১৫০০ থেকে ১৭০০ সালের জাপানী লেখনরীতির সাথে মিলে ।আমি এটার অনুবাদ করতে পারব না তবে আমার বন্ধু মিশাওয়া আছে টোকিও ইউনিভাসির্টি তে , তাকে দিতে পারি , কি বল ? আমি উত্তেজনায় কাঁপছি । যাক লাইফে ইন্টারেস্টিং কিছু তো পাওয়া গেলো । মাথা ঝাকালাম ।
.
.
.
.
.
নানুভাই যেন সুদুর অতীতে । "তখন আমি বার্মায় , ২২ বছরে এক তরুণ । বাবা ছিলো ব্রিটিশ রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা । তখন ১৯৪২ । ২য় বিশ্বযুদ্ধ চলছে । জাপানীরা বার্মা আক্রমন করলো । ব্রিটিশরা বার্মা ফ্রন্টে পরাজিত হয়ে বার্মা ছেড়ে দিয়েছে । আর জাপানীরা হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ মেরে ফেলেছে । শুরু হয়েছে বার্মিজ রোহিঙ্গার দাঙ্গা । আমরাও পালাচ্ছি । এক রাতে বাবা কোথা থেকে একটা ব্যাগ এনে মাকে দিয়ে জানালেন এটা নাকি নাক বোঁচাদের ব্যাগ । এক মৃত জাপানী সোলজার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে । আর সেখান থেকেই আমি এটা পাই । আমি কখনো জানতে চাইনি এই লিখাটার অর্থ কী বা কেন লিখা হয়েছে । কেন যেন আগ্রহ পাইনি । হয়ত সেটা ঘৃনা " এই বয়সে এত লম্বাচড়া কথা বলে নানভাই হাপাচ্ছেন । আর আমি মুগ্ধ বিস্ময়ে জলজ্যান্ত ইতিহাসের কাহিনী শুনছি ।
.
.
.
দু মাস পর স্যার ডেকে পাঠালেন । লিখাটার অনুবাদটা এসেছে । পড় চমকে যাবে । এটার লেখক মুয়াশি , একজন বিখ্যাত সামুরাই বীর । যার জন্ম ১৬শ শতকে ।
.
স্যারের কথা শুনে পড়ার আগেই চমকে গেলাম । ১৯৪২ সালের নাক বোঁচাটার সাথে ১৬ শতকের সামুরাই বীরের কি সম্পর্ক ?
.
স্যার হাসলেন । এটার একটা সহজ সমাধানে পৌছা গেছে । লিখাটা ১৯ শতকেই লিখা । তবে ১৬ শতকের সামুরাইয়ের চিঠি থেকে হুবাহু কপি পেষ্ট করা । কেন করেছে জানতে পেরেছি । এই ব্যাপারে আমি খোঁজ নিয়েছি যা জানলাম তা হল , ১৯৪২ এ বার্মা ফ্রন্টে যে জাপানী সৈন্যরা মারা গেছে ও নিখোঁজ হয়েছে তাদের মাঝে মিয়ামোতো মুসাশি নামেও একজন আছে , যে মুসাশির একজন বংশধর , লিখা সেই লিখেছিল । জাপানিজ জাদুঘরে মুসাশি সামুরাইয়ের অনেক লিখা এখনো আছে । যার মাঝে "বুক অব ফাইভ রিংস" নামে তার বিখ্যাত গ্রন্থ রয়েছে রণকৌশল সম্পর্কিত গ্রন্থ । এখনও প্রতিবছর হাজার হাজার কপি বিক্রি হয় এই বইয়ের । বিশেষজ্ঞরা একে সামুরাই মুয়াশির লিখা বলে সনাক্ত করেছে ।
.
.
.
নিথর হয়ে বসে আছি । লিখাটা কতটা অসাধারণ তাই ভাবছি । লিখাটা একটা চিঠি । বিখ্যাত সামুরাই মুয়াসী তার পুত্রকে তার জীবন কাহিনী বলেছেন । যেটা কোন রহস্য উপন্যাস থেকে কম না ।
.
.
.
পুত্র মুয়াশি ,
তোমাকে এ দীর্ঘ ৬০ বছরের জীবনে একবারও দেখতে পারিনি আমার পাপময় কর্মের জন্য । আজ শেষ বয়সে এসে তোমাকে খুব মনে পড়ছে । শুনেছি তুমি তলোয়ার বাজীতে বিশেষ পরাদর্শী হয়ে উঠেছো । ভালো লেগেছে । আমার রক্ত আছে তোমার শরীরে , যেমনটি আমার শরীরে আমার পিতা মানসাইয়ের ।আজ আমি বিখ্যাত একজন সামুরাই যোদ্ধা কারণটা আমার পিতা । তোমাকে আমি জানি না । কিন্তু তুমি যেন আমাকে জানতে পারো সে চেস্ষ্টাই করছি । তাই আজ আমি নিজেরই সামুরাই হয়ে উঠার কাহিনী শোনাবো ।
.
আমার বাবা মুনিসাই ছিল এক বিখ্যাত সামুরাই যোদ্ধা, তাই ছেলেকেও সামুরাই বানাতে ছোট বেলা থেকেই কঠোর হাতে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন । সামুরাই হবার এই প্রশিক্ষণের সময় প্রায়ই নির্দয় ভাবে পিতার হাতে মার খেতে হত আমাকে। আঘাতে ক্ষত বিক্ষত আর রক্তাক্ত হতো মরদেহ। অবশেষে আর সহ্য করতে না পেরে ৮ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে পালাই আমি । বাবাকে ছেড়ে গেলেও তার দেখানো পথ ছাড়লাম না । পরবর্তী পাঁচ বছর জঙ্গলে আমি নিজে নিজে প্রশিক্ষণ নিই । ঘটনাক্রমে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই জীবনের প্রথম দ্বন্দ্ব যুদ্ধের মুখোমুখি আমি । "আরিমা কিহাই" নামে এক যোদ্ধাকে ছয় ফুট লম্বা লাঠি নিয়ে তেড়ে গেলাম আমি । আরামিও তার "ওয়াকিজাশি" তলোয়ার নিয়ে আগ বাড়ল । কিন্তু আমার ক্ষিপ্ততা নিয়ে কাছে সে পরাজিত হল ।
এরপর পরবর্তী চার বছর আমি কৌশলের উন্নতির লক্ষ্যে অকাতর সাধনা করে গেলাম , যা শুরু হত ভোরের সূর্য উঠার সাথে সাথে আর চলত সন্ধ্যা অবধি । জঙ্গলের এক নির্জন জায়গায় চলতে থাকল তার নিবিড় তপস্যা। এই সময়েই উদ্ভাবন করলাম তার বিখ্যাত "ডাবল সোর্ড" কৌশল,একহাতে "কাতানা" আর একহাতে "ওয়াকিজাশি" নিয়ে দুই হাতেই সমান দক্ষতায় সামনে পিছনে শত্রুর মোকাবেলা করা। আর তলোয়ারবাজি ছাড়াও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করলাম , আর সেটি হচ্ছে মুখোমুখি লড়াইয়ে একাগ্রতা ধরে রেখে শত্রুর উপর মনস্তাত্ত্বিক বিজয় লাভের কৌশল । আর এটাই আমাকে অন্যন্য করে রাখলো ।
.
.
.
..
অবশেষে ২১ বছর বয়সে আত্মগোপন হতে বেরিয়ে এলাম । সমাজের চোখে সম্পূর্ণ অপরিচিত আমি , বুঝতে পারলাম নিজেকে চেনাতে হলে অবশ্যই বড়সড় কাউকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে, এ উদ্দেশ্যে উপস্থিত হলাম কিয়োটো শহরে। সেখানে এক বিখ্যাত সামুরাই প্রশিক্ষণ স্কুলের শিক্ষাগুরু ছিল "ইয়োশিকা সেইজুরো" আর "ইয়োশিকা দেন শিকিরো" নামের দুইভাই। সাধারণত অপরিচিত কারও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেনা , যখন আমার বাবা মুনিসাই এর নাম বললাম , তখন আর এড়িয়ে যাবার উপায় ছিলনা তাদের । "একসময় মুনিসাই এর হাতে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষাগুরু পরাজিত হয়েছিল, তাই এখনই সুযোগ মুনিসাই এর ছেলেকে পরাজিত করে প্রতিশোধ নেবার"
.
বড়ভাই সেইজুরোই সেই চ্যালেঞ্জে সাড়া দিল । নির্ধারিত দিনে যথারীতি ধ্যান শেষ করে নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হোল সেইজুরো, কিন্তু আমার কোন দেখা নেই। সময় গড়িয়ে চলল, সেইজিরো অস্থির হয়ে উঠল; তার মনঃসংযোগে চিড় ধরল। আর এই মনস্তাত্ত্বিক খেলাই খেলছিলাম । কয়েক ঘণ্টা পরে যখন বনের ভিতর হতে বের হয়ে এলাম , নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না সেইজিরো। রাগে ছুটে গিয়ে আক্রমণ চালাল, আর এইটাই হোল সামুরাই যুদ্ধের সবচেয়ে বড় ভুল। আর এই মনোযোগ হারানোর মাশুল তাকে দিতে হোল আমার তলোয়ারের আঘাতে প্রাণ হারিয়ে ।
.
.
এমন সময় পরিচিত হলাম তোমার মা কিনসা সাথে । সমুদ্রের তীরের জেলে পাড়ার সাধারণ এক মেয়ে সে । তাকে ভালোবাসলাম । তাকে চাইলাম কিন্তু পারলাম না ।
সে আমার ভালবাসাকে ভয় পেতো। তার ভাই আমায় দ্বন্ধ্বযুদ্ধে আহবান জানায় । যথারীতি হারলো । কথা ছিল সে হারলে তার বোনকে আমার হাতে তুলে দিবে , কিন্তু দেয়নি তাই জোর করে তোমার মাকে তুলে আনি । কিন্তু বিধাতার নির্মম পরিহাস , সেও আমার সাথে থাকতে চাইনি , কিছুদিন পরে পালিয়ে যায় । আমিও তাকে আনতে যায়নি এরপর একদিন খবর এল আমার একটা ছেলে হয়েছে তার নামও মুয়াসি । দেখা করব ভেবেছি , কিন্তু যুদ্ধের নেশা আমাকে সে সুযোগটুকু দিলো না ।
.
আমার নাম ছড়িয়ে পড়লো । অনেকে চাইল এই নতুন বিপদকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে। এমনই এক লড়াইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে ভীষণ বিপদে পড়েছিলাম । আমাকে হত্যার জন্যই কৌশলে এই ফাঁদ পাতা হয়েছিল। নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হয়ে চারপাশ দেখেই পরিস্থিতি বুঝে গেলাম , কিন্তু নিজের পিঠ দেখালনা। একাই কয়েক ডজন শত্রুযোদ্ধার মুখোমুখি হলাম , দুই হাতেই তুলে নিল তলোয়ার আর একাই লড়তে লাগল সবার সাথে। এই প্রথম কোন সামুরাই যোদ্ধা দুইহাতে তলোয়ার নিয়ে লড়াই করলাম । ইতিহাস হলো ভয়ঙ্কর "নিনতসু" বা "ডাবল সোর্ড" কৌশল । খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল পুরো জাপানে ।
.
২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যবর্তী ১০ বছর সময়ে আমি প্রায় ৬০টির মত সামুরাই ডুয়েলে মুখোমুখি হয়েছি এবং এর প্রতিটিতেই প্রতিপক্ষকে পরাজিত করল। অবশেষে জীবনের সবচেয়ে বিখ্যাত লড়াইয়ে মুখোমুখি হলাম "Demon of Western Province" খ্যাত "সাসাকি কোজিরো"র । ঐ যুদ্ধের কথাটা আমি মোটেও ভুলবো না ।
.
এই বিদায় লগ্নে এসে সে লড়াইয়ের কথা আজো মনে পড়ছিলো । লড়াইয়ের স্থান নির্ধারিত হলো "ফুনাজিমা" দ্বীপে। আবারো বড় লড়াইয়ের আগে মনস্তাত্ত্বিক খেলা শুরু করলাম , কোজিরোকে তো অপেক্ষায় রাখলাম আর এমন সময় বেছে নিল যখন সূর্য থাকবে আমার মাথার পিছনে। কিন্তু কোজিরোকে সবচেয়ে বড় অপমান করলাম , সাথে কোন তলোয়ার না এনে কাঠের একটি মজবুত লাঠি নিয়ে এনে । এই অপমানে ভীষণ রেগে গেল কোজিরো, তলোয়ার বের করে খাপটি ছুঁড়ে সাগরের পানিতে ফেলে দিল । আর আমি এটাই চাচ্ছিলো "কোজিরো, খাপ ফেলে দিয়ে তুমি তোমার মৃত্যুকেই নিশ্চিত করলে" (সামুরাই প্রথা অনুযায়ী, শুধু মৃত্যুর চূড়ান্ত মুখোমুখি হলেই খাপ ত্যাগ করে)। জবাবে কোজিরো বলল, "মুসাশি এই তলোয়ার শুধু তোমাকেই হত্যার জন্য এনেছি, এরপরে এই তলোয়ার আর আমার কাজে দিবেনা"। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সাগর পাড়ে মুখোমুখি হোল। এটা শুধু দুজন সেরা যোদ্ধার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ছিলনা, বরং দুটি ভিন্ন ধারার সামুরাই কৌশলের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণের লড়াইও ছিল; যা পৃথকভাবে উদ্ভাবন হয়েছিল কোজিরোর গুরু এবং আমার পিতা মুনিসাই এর হাতে।
সূর্যকে পিছনে রেখে কোজিরো'র মুখোমুখি হলাম । কোজিরো তার লম্বা তলোয়ারের জন্য বিখ্যাত ছিল এবং আমি তা ভালোভাবেই জানত । তাই সে তার লাঠিটা কোজিরোর তলোয়ারের চেয়ে একটু বড় করে নিয়ে এল। কিন্তু মুখোমুখি আমার মাথার পিছনে বিশেষ সামুরাই পদ্ধতিতে ধরা অবস্থায় এবং সূর্যের আলো চোখে পড়ায় মুসাশির লাঠির দৈর্ঘ্য সম্পর্কে ধারণা পেলনা কোজিরো। দুইজনই লাফিয়ে উঠে ভয়ঙ্কর আঘাত করলাম পরস্পরের দিকে। কোজিরোর তলোয়ার আমার কপাল বন্ধনী কেটে হালকা রক্তের দাগ কেটে নেমে গেল। তাই দেখে হাসি ফুটে উঠল কোজিরোর মুখে, কিন্তু পরক্ষনেই তা যন্ত্রণার চিহ্নতে পরিণত হলো । আমার লম্বা লাঠির বিদ্যুৎ গতির আঘাত তার মাথা দু ফাঁক করে দিয়ে গিয়েছে। পড়ে গিয়েও আবার আঘাত করার দুর্বল চেষ্টা চালাল কোজিরো কিন্তু তার আগেই ভয়ঙ্কর কয়েকটি হেনে মৃত্যুর কোলে শুইয়ে দিলাম "পশ্চিম প্রদেশের শয়তান" খ্যাত কোজিরোকে।
.
এরপর ডুয়েলে যুদ্ধ ছেড়ে আমি সেনাবাহিনীতে যোগ দিই । হই পুরো জাপানের শ্রেষ্ট যোদ্ধা ।
.
এই হল আমার জীবন কাহিনী । এইবছর পরও পুরানো সব স্মৃতি রোমান্থন করলে গা শির শির করে । জীবনটা ছিলো এক কথায় রক্তের বন্যাতে ডুবে থাকার সিনফুয়া ফুলের মত । আজ আমি অবসর নিয়েছি জাগতিক সব কাজ থেকে । হটাত তাকিয়ে দেখি আজ আমি একা । কোথাও কেউ নেই । তাই চাচ্ছি কেউ যেন আমার হাত ধরুক , আর সে হাত যেন হোক তোমার ।
.
ইতি তোমার হতভাগ্য পিতা
মিয়ামোতো মুসাশি
.
.
.
খারাপ লাগলো । যুদ্ধের নেশা শুধুমাত্র বিয়োগেরই নামান্তর । যেখানে শুধু রক্তপাত হয় । জানি না বৃদ্ধ মুসাশি তার পুত্রের দেখা পেয়েছে কিনা । জীবনের সুখের দেখা পেয়েছে কিনা । যদি না পায় অবাক হব না । নানার কাছে ফিরে এলাম । উনি ঘুমাচ্ছে । গল্প আরো বাকী ।
সমাপ্ত
বিঃদ্রঃ পুরো গল্পটি সত্য ঘটনা বেসিসে । মিয়ামোতো মুসাশি জাপানের ইতিহাসে সর্বশেষ্ঠ সামুরাই যোদ্ধাদের মাঝে অন্যতম । এখনো জাপানী কাটুনগুলোতে মুসাশির দেখা মেলে । আর আমার প্রিয় সামুরাই কার্টুন ক্যারেটারও সে ।
-৩১ জানুয়ারি ২০১৪