ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন: পাবলো পিকাসো এবং ব্রিজিত বার্দো ১৯৫৬। আমার বক্তব্যের সাথে কোথায় যেন হয়তো খুব দূরবর্তী একটা যোগাযোগ এর রয়েছে। তাই এই ছবিটাই দিলাম।
দ্বৈততা যে আপনাকে কি পরিমাণ একাকীত্বের অনুভূতি দিতে পারে তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। যারা এটা এক্সপেরিয়েন্স করেননি তাদের জন্য এটা অনুমান করাও কঠিন। ফলে সেটা নিয়ে অহেতুক রোমান্টিক বোধ করাটা উচিৎ নয়। মানে আশাবাদী থাকুন কিন্তু নির্বোধ হবেন না। একসাথে শুয়ে পড়লেই কিংবা একসাথে বেড়িয়ে পড়লেই আপনার একাকীত্ব দূর হবে না। বরং তা আরো ভয়ানকভাবে চেপে ধরতে পারে। শেষ পর্যন্ত সর্ম্পকটা নিজের সাথে নিজের। এবং ঠিক একই সমান্তরালে এমন মানুষের সাথে যার নিজের সাথে নিজের সাথে নিজের সর্ম্পকটা ভালো এবং মহৎ। কোন মানুষ আপনার সাথে আছে এবং তার কারণে আপনি ভয়াবহ একা বোধ করছেন এই অনুভূতিটা সমগ্র মানবকূলের জন্য অপমানজনক। নিশ্চয়ই ভুলে যাবেন না, অপর মানুষ আপনাকে যেমন তীব্রতম সঙ্গের আনন্দ দিতে পারেন ঠিক একইভাবে কেড়েও নিতে পারেন। ফলে তৃতীয় মানুষের টোটকাটা দীর্ঘকাল ধরেই চলে আসছে। মানে সন্তান, এডাপটেশন, যৌথ সৃষ্টি, কাজ ইত্যাদি আরকি। আজকে হুট করে মনে পড়ল, আমার তীব্রতম; ভয়াবহতম অসহায় অনুভূতির মধ্যে দিয়ে যাবার অভিজ্ঞতা অপর মানুষের উপস্থিতিতেই হয়েছে। মানুষ নৃশংস হয়। এটা আমি জানি। কি যে ভয়ানক সে অনুভূতি। মরে গেছি না বেঁচে আছি এই সিদ্ধান্তহীনতায় যে শূণ্যতা তৈরি হয় বলে আমি অনুমান করি অনেকটা সেরকম। কিংবা হঠাৎ আপনি বুঝতে পারলেন আপনি মারা গেছেন, মানে আপনার শরীর এবং আপনার মস্তিষ্ক কেবল একটি কম্পিউটারের ডাটাবেসে বেঁচে আছে। অনেকটা সেরকম।
সাধারণত বলা হয়ে থাকে ভালোবাসার জন্য সবকিছু বিনিয়োগ করতে হয়। সেই বিনিয়োগটা করা রিস্কি। তবে সেটা না করলে আপনি নিজেকে জানতে পারবেন না। প্রকৃতি তার প্রজন্মের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যই এমনটা করে। এর মধ্য দিয়ে আপনি নিজেকে আর একটু জানলেন এটাই লাভ। তবে রিকভারি করার সুযোগ যারা পান তারা জানতে পারেন যে মানুষের জীবনী শক্তি অসীম। কারণ সে অসীমের অংশ। সেটার প্রতি আস্থার নামই জীবন। তাই রবীন্দ্রনাথ যখন বলেন, "মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ"। তখন আমি বুঝি জীবনী শক্তির উপর আস্থা না হারানোর কথা; কারণ এটা আত্মহত্যা মূলক। অদ্ভুত একটা অনুভূতি হয় যখন দেখি প্রকৃতি এবং চারপাশ যেখানে উপচে পড়া সম্ভাবনা তৈরি করে চলেছে মানুষের বিকশিত হবার জন্য তখন অপর মানুষ এবং তাদের পদ্ধতি নিজেদের এবং বাকীদের বন্দী করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সভ্যতার কি বিশাল আয়রনি। নো দাইসেল্ফ আর যাই কর পুট ইয়োরসেল্ফ টু দ্যাট এক্সট্রিম যাতে জানাটা কখনো বন্দী না হয়। যে তোমাকে বিকশিত করতে সহায়তা করে, নিজের সাথে নিজের সর্ম্পক উন্নয়নে কাজ করে সেই প্রকৃত সঙ্গী। সে থাকলে কখনো একা লাগেনা। স্বার্থপর হয়োনা। আমি অনেক স্বার্থপর দেখেছি যারা প্রতিদিন নিজেকে মিথ্যা বলে আর প্রবোধ দেয় পাছে নিজের মুখোমুখি হতে হয়। তাদের সংখ্যাটা বিশাল, কারণ তারা পরস্পরকেও এমন প্রবোধ দেয়। সম্ভবত এরাই অধিকাংশ। আমি এদের থেকে দূরে থাকি। কারণ তার/তাদের জীবন বাঁচানো যেমন ফরজ, তেমনি আমারটাও।