আমিনুল হক শান্ত
সকলেই মাস্ক পড়ে ঘুরে ফিরে এখন, অণুজীব?
কি অদ্ভুত নব্য স্বাভাবিকতায় আমরা
নিজেদের লুকিয়ে ফেলছি ক্রমাগত মুখোশের আড়ালে,
কিংবা...
কাউকে চট করে সনাক্ত করা এখন বড্ড কঠিন,
এক অজানা গোপনীয়তা এখন চারদিকে,
সবকিছু লুকিয়ে ফেলছি আমরা,
সানগ্লাসেও ঢেকে নিচ্ছি নিজেদের চোখ!
গাড়ির কালো কাচের ভিতর ঢেকে ফেলছি আরও অধিক,
অথচ দূর থেকে খুব সংগোপনে,
এসপিওনাজের মত চকিত চোখে দেখি নেই অন্যকে,
শত্রু শিবিরে নজর রাখার মত দেখি চারপাশ!
অনেকে, এক প্রান্তে বিশ্বস্ত কুকুরের দড়ি ধরে পথ চলে...
যেন এক নিরাপত্তা বলয়। সবই বড্ড
ব্যক্তিগত ইদানিং, পার্সোনাল স্পেইস!
কি কারণে এই বোধ? আত্মরক্ষার্থে?
আবুল হাসানের যে মানুষ তার চিবুকের কাছেও
ভীষণ অচেনা ও একা, সে এখন
আঙ্গুলের ডগায় সেলফোনে খোঁজে সঙ্গ!
আমরা বড্ড অবিশ্বাসে বাঁচি! অথচ একই সময়ে
স্ববিরোধীতাও প্রবল,
গাই ডেবর্ডের সোসাইটি অফ স্পেক্ট্যেকেল থেকে,
ধীরে, কিন্তু নিশ্চিতে আমরা তীব্র এক্সিবিশনজমের দিকে ঝুঁকেছি বরং!
প্রকাশ করে চলেছি নিজেদের জীবনচরিত
ভার্চ্যুয়াল, অস্তিত্বহীন এক অন্য স্পেইসে,
ক্রমাগত আমাদের নিজের তথ্য নিজেরাই
যোগান দিয়ে অস্বস্তিতে ভুগি, অবাক!
অদ্ভুত এই ফ্রয়েডীয় প্যারানয়া—সদা ভয় কখন
কোন সার্ভেইলেন্সে আটকে পড়ি, প্রযুক্তি, তবু হায়,
ফ্যুকোর সেই ক্ষমতা আর দমন কৌশলেই
আমাদের আটকে ফেলে ক্রমশ।
উপায়হীন এক সিম্যুলেশন এর গভীর প্রদোষে
হারাতে হারাতে প্রকৃত আর নকলের গ্রন্থিগুলো
মিলেমিশে একাকার করে মিশিয়ে দেয় সকল
বাস্তব-অবাস্তবের সীমারেখার ভেদ।
এখন মুখোশের আড়ালে আর কিছু নেই,
মুখোশই এখন মুখ!
অক্টোবর ১৯, ২০২১
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:০৯