__________________সামস রবি
তাঁর প্রায় প্রতিদিনই কলেজ আঙ্গিনার বকুল তলায় বসতে হয়
কখনো বই পড়ছেন কখনো'বা কিছু লিখার চেষ্টায় মত্ত।
কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ নেই, দাঁড়ী নেই
তবে চিকন ফ্রেমের চশমা, আর মাঝে মাঝে পাঞ্জাবী পড়তে পছন্দ।
প্রায় প্রতিদিন কাউকে চিরকুট কাউকে চিঠি কিংবা কবিতা লিখে দিতে হয়
তাদের প্রিয়জনদের দি'বে বলে।
কখনো অবহেলিত হয়নি কোন যুগল
কত প্রেমের সারথি হয়েছে তাঁর লেখনী।
কিন্তু তাঁর চোখ যে চেয়ে থাকে কাহারো প্রাণে
কেউ আসবে হাতে দিবে অজানা মুখদ্ধকর চিঠি
হাতে হাত রেখে হারিয়ে যাবে ভালো লাগার অমৃতে...
একদিন এক পরিপূর্ণ বাঙ্গালী ললনা এসে একটা চিরকুট দিল।
মেয়েটাকে কয়েকবার দেখেছে কলেজ আঙ্গিনায়
সব সময় একা থাকে, যেন সম্পর্ক থেকে দূরে থাকাই শ্রেয় তাঁর
তবে আজ তাহার মাঝে অপূর্ণ সৌন্দর্যময় মায়া বাস করছে।
চিরকুটে লেখা শুধু-
তুমি আমার জন্য প্রতিদিন চার লাইনের একটা করে চিরকুট লিখতে পারবা।
কোন আকুতি নেই চাওয়া আর পাওয়ার প্রবেশ
তবে কি এলো চোখের মায়াবী খোঁজ।
এরপর প্রতিদিন একটি করে চিরকুট লেখা হত আপন সুখে
ছুটির দিনের লিখাটা আগের দিন পূর্ণ হত।
মাঝে মাঝে বসে সে-ই বকুল তলায় কবিতা শুনাতো,
জীবনানন্দের, শরৎ চন্দ্রের বা নিজের লেখা
গল্প হত হাটতে হাটতে, কখনো হাতটা ধরা হয়নি তবে।
একদিন কলেজ থেকে বের হয়ে মাত্র ফুটপাতে হাটা শুরু করলো
হঠাৎ সামনে মায়াবীনি, একটা কাগজ হাতে দিয়ে, দোয়া করো বলে রিক্সায় উঠে চলে গেল!!
আজ দুই বছর হতে চললো আর আসেনি সেই মায়াবী পরিপূর্ণ বাঙ্গালী ললনা।
চিঠি পড়ে বুঝলো চিরকুট গুলো নিত তাহার মনের মানুষের জন্য
যেখানে কবি আর কবিতা ছিল শুধুই অনুষঙ্গ
যেখানে কবিতা শুধু ভালো লাগার স্পন্দন গুলোতে রঙ্গের তুলি
ভালোবাসার নয় কাছে ডাকার নয় পায়ে পায়ে ঘুরে ফিরবার নয়।
তাই তো অভিমান গুলো থেকে যায় আজন্ম
কেউ গঠতে আসেনি শুধুই নিতে আসে বুঝ আর অবুঝের বেড়াজাল।
এখন মুখে দাড়ি আছে, মোটা ফ্রেমের চশমাও লাগাতে হয়
এখনো লেখা হয় প্রতিদিনের চার লাইনের সে-ই চিরকুট।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৭ রাত ৮:২২