ঈদ মানে খুশি,আনন্দ। ঈদুল আজহা মানে ত্যাগের আনন্দ। যাই হোক আরও অনেক অর্থ আছে যা লিখার প্রয়োজন মনে করছি না এই মতহুর্তে। সমাজের একটা শ্রেনীর ঈদ কেটেছে কাটাকাটি, ভাগাভাগি এবং বিলি বন্টনের মাধ্যমে। অনেকেই কাজ করে সন্ধ্যায় হাত ব্যাথার জন্য মেডিসিন নিয়েছে। আর শ্যাম মেডিসিন নিয়েছে ঘরে শুয়ে থেকে ব্যাথার জন্য। যখন মানুষ ঈদের নামাজ পড়ে এসে ঘরে মিষ্টিমুখ তখন শ্যাম সকালে নাশতা করার জন্য হন্য হয়ে খুজেছে খাবারের হোটেল। কিন্তু সেই অভিজানে ব্যার্থ হয়ে ঘরে এসে ডগডগ করে একজগ পানি পান করে সকালের ক্ষুধা হালকা করার চেষ্টা করেছে। হ্যা বলে নিচ্ছি শ্যামের সংক্্ষিপ্ত ইতিহা। মা-বাবার একমাত্র ছেলে পড়াশুনায় দেশের উচ্চ বিদ্যাপিঠের উচ্চতর ডিগ্রি আছে। বাবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জব করে কোন ঈদ বাড়ি করেনা। কারণ ঈদের দিন ডিউটি করলে অতিরিক্ত কিছু আয় হয় যা সাংসারিক নিত্যদিনের কাজে লাগায়। অভাবের মধ্যে দিন গেলেও বাহিরের কেউ বুঝার সাধ্য রাখেনা। যাই হোক শ্যাম ঢাকায় মেসে থাকে মা থাকে গ্রামে। ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ির দুরুত্ব প্রায় ১৭০ কিলোমিটা। বাবা ছেলে ঢাকা থাককেও তাদের দেখা হয়না। কারণ শ্যাম বয়ষ্ক বাবার কষ্ট বুঝে কিন্তু বাবাকে কোন হেল্প করতে পারেনা বলেই ৬৫ বছর বাবাকে দেখতে যায়না। এ না যাওয়াটাও একটা ভীষণ কষ্টের। ঈদ কে না করতে চায় বাবা মায়ের সাথে। কিন্তু শ্যামেরও ইচ্ছা গ্রামের বাড়িতে মায়ের সাথে ঈদ করতে কিন্তু বিধি সেই সুযোগ যেন কেড়ে নিয়েছেন। কিভাবে সে ঈদ করবে পরিবারের সাথে? বছর পাচেক আগে রাস্তা থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে সরকার বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের সাথে মিথ্যা মামলায় খেটিয়েছিল তিন মাসের জেল। সেই ঘটনার পর আদালতে হাজিরা দেওয়ার মত অবস্থা না থাকায় এখন সে ফেরারী আসামী। তাই সে ৫ বছর যাবত ঈদ কেন মায়ের সাথে দেখা পর্যন্ত করতে পারেনা।
এমন হাজারোও শ্যাম আছে যারা ঈদের দিনে না খেয়ে উপোস থাকে। ৬/৭ তলা থেকে নিচে উঠা নামার সময় গরুর গোশতের ঘ্রাণ শুকে আলগা ঢেকুর কাটে।
অথচ এই ঈদের দিনে টুকাইরা গোশত খেয়ে ঢাকায় রাস্তায় রাস্তায় ২০০ টাকা কেজি গোস্ত বিক্রি করে। অথচ শ্যামরা ঘরে শুয়ে বসে সোনালী অতিতকে মনে করে আর চোখের অশ্রু দিয়ে বালিশ কিংবা রুমাল ভিজিয়ে রাখে।