somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শাহীন ভূইঁয়া
আমার স্বপ্ন ছিল ঘাতক রাজাকারদের বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার জীবদ্দশায় দেখার। আমার আর কোনো চাওয়া নেই তবে জামাতের সব ব্যবসা প্রতিস্ঠান অচিরেই বাংলাদেশে বন্ধকরা উচিত। না হলে ওরা আবার অঙ্কুর উদগম করবে এই মাটিতেই।

বেপরোয়া ঐশী ছাত্রী সংস্থার সদস্য। মাদক সরবরাহ করতো ছাত্র শিবির ও ছাত্রদল নেতা আরিফ

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কালার ফ্রেন্ড

পিতা মাতার আদরের সন্তানই শুধু নয় তার কোন সাধই অপূর্ণ রাখতো না তারা। কিন্তু ছাত্রী সংস্থার সদস্য হবার পর থেকে শুরু হয় উশৃঙ্খল জীবনযাত্রা। পল্টন থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফ এবং কয়েকজন শিবির ক্যাডার তাকে মাদকাসক্ত এবং যৌনাচারে অভ্যস্ত করে তোলে। তবে এক্ষেত্রে তার প্রেমিক শিবিরের সুরা সদস্য পারভেজও দায়ী। তার বন্ধুদের বেশিরভাগ ছাত্রদল নেতা আরিফের বন্ধু ও শিবির কর্মী। গতকাল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যার নৃশংসতার বর্ণনা করে এ তথ্যসমুহ প্রদান করেছে ঐশী।

বেপরোয়া জীবনযাপন, অনিয়ন্ত্রিত প্রেম ও মাদক সেবনে বাধা পেয়েই নিজের পিতা-মাতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ঐশী রহমান। ঠাণ্ডা মাথার পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমেই মা স্বপ্না রহমানকে কুপিয়ে ও পরে পিতার গলায় খঞ্জর চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। হত্যা মামলায় ঐশী রহমান, তার বয়ফ্রেন্ড মিজানুর রহমান রনি ও বাসার কাজের মেয়ে সুমিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে তাদের হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ডের বিরোধিতা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মিজানুর রহমান ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পল্টন থানার এসআই শহীদুল্লাহ প্রধান রিমান্ড আবেদনে বলেন, ঐশী মাদকাসক্ত ছিল। মাদকাসক্ত বন্ধুবাবন্ধরা মিলেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তাদের সবার পরিচয় জানতে ও হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

অন্যদিকে ঐশীর পক্ষে তার আইনজীবী মাহাবুব হাসান রানা, চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব রাকিব ও রেজাউর রহমান টিংকু রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন আবেদন করেন। রনির পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মন্টু রঞ্জন দাস। মাহাবুব হাসান রানা বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক ঐশীকে রিমান্ডে নেয়ার প্রশ্নই আসে না। এই শুনানি স্থগিত রেখে তাকে কিশোর আদালতে নেয়া হোক। আর জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তা কারাফটকেই করা উচিত। রানা বলেন, যে পরিবার ও যে সমাজ ঐশীদের তৈরি করে তাদের বিচার হওয়া দরকার।

শুনানি শুরুর আগে কালো বোরকা ও মেরুন চাদর পরা ঐশী এজলাসে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মা-বাবার জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে। আমার হাঁপানি আছে। এ সময় তার হাতে একটি ইনহেলারও দেখা যায়। এদিকে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঐশীর আরও তিন বয়ফ্রেন্ডকে খুঁজছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ বিষয়ে ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের অনুসন্ধান ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ দম্পতি হত্যাকাণ্ডে ঐশী, সুমি ও রনির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া গেছে- এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত। এখন রিমান্ডে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার মোটিভ সম্পর্কে পরিষ্কার হওয়া যাবে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কিনা তা জানা যাবে।

মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, নিহত দম্পতির বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ছুরি ও বঁটির মধ্যে ছুরিটিই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছে। আর ঐশীর মায়ের কোমরে থাকা আলমারির চাবির গোছা কাটার জন্য রান্না ঘর থেকে বঁটি আনা হয়েছিল। তিনি বলেন, আসলে মেয়েটির বন্ধুসংখ্যা অনেক। তাদের সঙ্গদোষে বখাটে হয়ে গিয়েছিল। এই বখাটেপনা থেকে ফিরিয়ে আনতে তাকে বাসা থেকে বের হতে দিতেন না তার মা-বাবা। এ কারণেই মায়ের প্রতি বেশি ক্ষোভ ছিল ঐশীর। তদন্ত সূত্রমতে, ঐশীর শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে। সেখানে থাকতেই ছাত্রী সংস্থায় যুক্ত হয়। ছাত্রী সংস্থার ধর্মীয় অনুকরণ না করলেও তাদের মত অবাধ যৌনাচার ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে।

পরবর্তীতে বায়না ধরে ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- অক্সফোর্ড স্কুলে ভর্তির। ঐশী ছিল বাবা-মায়ের বড় মেয়ে। তাই তার সকল আবদার পূরণের চেষ্টা করতেন বাবা-মা। যা চাইতেন তা-ই দেয়ার চেষ্টা করতেন। এরই এক পর্যায়ে ২০১১ সালে ঐশীকে ধানমন্ডির অক্সফোর্ড স্কুলে ভর্তি করে দেন বাবা-মা। ভর্তির পর স্কুলের গাড়িতেই যাতায়াত করতো ঐশী। মাঝে-মধ্যে রিকশা নিয়ে যেতো। পারিবারিক সূত্র জানায়, অক্সফোর্ড স্কুলে ভর্তির পরই ঐশীর আচরণ ও জীবন-যাপনে দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে। সালোয়ার কামিজ ও স্কার্ফ ছেড়ে পাশ্চাত্য ঢঙের পোশাক পরা শুরু করে। খোলামেলা পোশাকে ছেলে বন্ধু ও প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতো। এ কারণে কখনও কখনও তার মা বকা-ঝকা করতেন। স্কুলের কথা বলে সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে কখনও রাত ১০টা, কখনও ১১টায় ফিরতো। স্কুল ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দিতো ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে। যোগ দিতো ইয়াবা ও গাঁজার আসরে। যেতো ডিজে ও ড্যান্স পার্টিতে। শুধু তাই নয়, পার্টিতে অংশ নেয়া বন্ধু মহলের যাকে ভাল লাগতো, তার সঙ্গেই অন্তরঙ্গ সময় কাটাতো।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ জানান, নিহত পুলিশ কর্মকর্তার দেহে ছুরিকাঘাতের দু’টি এবং তার স্ত্রীর দেহে ১১টি চিহ্ন পাওয়া গেছে। হত্যার আগে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজ ও তার স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়েছিল ঐশী।

লাশ থেকে গহনা খুলে নেয় ঐশী: গোয়েন্দারা জানান, নিজের পিতা-মাতাকে খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি ঐশী। নিথর ও রক্তাক্ত মায়ের শরীর থেকে গহনাও খুলে নিয়েছে। রান্নাঘর থেকে বঁটি এনে স্বপ্না রহমানের কোমরে থাকা বাসার চাবির গোছা কেটে নেয়। এরপর একে একে কানের দুল, গলার চেইন, হাতের বালা ও নাকফুল খুলে নেয়। আলমারিতে রক্ষিত আরও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ব্যাগে ভরে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। সূত্র জানায়, বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঐশী একাই তার পিতা-মাতাকে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার আগে সন্ধ্যার পর মা’র জন্য তৈরি করা কফিতে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে দেয়। মা ঘুমিয়ে পড়লে তার সঙ্গেই শুয়ে থাকে ঐশী। রাত ১১টার পর তার পিতা বাসায় ফিরলে তাকেও ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত কফি খেতে দেয়। তিনিও ঐশীর বেডরুমে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর রাত ২টার দিকে ঐশী খঞ্জর টাইপের একটি ধারালো ছুরি নিয়ে ঘুমন্ত মায়ের ওপর হামলে পড়ে। প্রথম কোপেই তার মা জেগে ওঠেন।

নিজ মেয়ের এমন বর্বরতা দেখে বলতে থাকেন ‘তুই আমার মেয়ে না?’ তাই বলে ঐশীর ছুরি থামেনি। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করতে থাকে। একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে যান মা। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ছোট ছেলে ঐহী মায়ের সঙ্গেই ঘুমিয়ে ছিল। হত্যাকাণ্ডের সময় সে জেগে ওঠে। তখন ঐশী তাকে ধরে নিয়ে বাথরুমে আটকে রাখে। এরপর পিতার গলায় খঞ্জর চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে কাজের মেয়ে সুমির সহায়তায় তাদের লাশ কাপড়ে মুড়িয়ে টেনেহিঁচড়ে বাথরুমে নিয়ে ফেলে রাখে। দু’জনে মিলেই রক্তাক্ত ঘর ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে। এরপর নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ব্যাগে ভরে ছোট ভাই ঐহী ও কাজের মেয়েকে নিয়ে বাইরে যায়। সূত্র আরও জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তার বান্ধবী তৃষার বাসায় ছিল। পর দিন শুক্রবার রনির এক খালার বাসায় অবস্থান করে। পরে প্রেমিক শিবির নেতা পারভেজের নির্দেশনা মোতাবেক শনিবার পল্টন থানা পুলিশের কাছে ধরা দেয়।

এখন সকলের প্রশ্ন তার সঙ্গী ও মাদকের যোগানদাতা শিবির ক্যাডাররা ও ছাত্রদল নেতা আরিফ কি আইনের আওয়ার বাহিরে থাকবে
Click This Link
১৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে "রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ": পুনর্বাসন নাকি নতুন ষড়যন্ত্র?

লিখেছেন মুনতাসির রাসেল, ২১ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ১১:৫৬


বাংলাদেশের রাজনীতি বর্তমানে এক অনিশ্চিত ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ গত ৫ আগস্টের গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারিয়েছে, এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরানো -----------------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:১০





মহাকাশে সময় কাটানো এবং পৃথিবীর অপরূপ দৃশ্য দেখা অনেকের কাছেই আজীবনের স্বপ্ন। তবে মানবদেহ শুধু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে কাজ করার জন্যই বিকশিত হয়েছে। তাই মহাকাশের শূন্য মাধ্যাকর্ষণে সময় কাটানোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার একটা ব্যক্তিগত সমুদ্র থাকলে ভালো হতো

লিখেছেন সামিয়া, ২১ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:২৭


আমি এসে বসছি
নরম বালুর উপর,
সামনে বিশাল সমুদ্র,
ঢেউগুলা আমারে কিছু একটা বলতে চাইতেছে,
কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না।

আমার মাথার উপর বিশাল আকাশ,
আকাশের নিচে শুধু পানি আর পানি,
আমি একলা,
আমার সামনে সমুদ্রের একলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্তের এই মাতাল সমীরণে... সাজাই এ ঘর ফুলে ফুলে ...

লিখেছেন শায়মা, ২১ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:৫৮


ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল লাগলো যে দোল
স্থলে জলে বনতলে লাগল যে দোল দ্বার খোল, দ্বার খোল....
বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে লাগে দোল। সাথে সাথে দোলা লাগে বুঝি আমাদের অন্তরেও। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজড ! নতুন করে ওপেন করার সুযোগ নেই......

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৪৫


..বলে মনে করেন জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমান। বাংলাদেশের রাজনীতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। প্রধান উপদেষ্টা সাম্প্রতিক সময়ে একটি স্বনামধন্য থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রধানের সাথে বৈঠকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×