somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরানো -----------------

২১ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





মহাকাশে সময় কাটানো এবং পৃথিবীর অপরূপ দৃশ্য দেখা অনেকের কাছেই আজীবনের স্বপ্ন। তবে মানবদেহ শুধু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে কাজ করার জন্যই বিকশিত হয়েছে। তাই মহাকাশের শূন্য মাধ্যাকর্ষণে সময় কাটানোর পর সম্পূর্ণ সুস্থ হতে অনেক বছর লেগে যেতে পারে। খবর বিবিসি'র।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) মাত্র আট দিনের মিশনে অংশ নেওয়া মহাকাশচারী সুনি উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর ৯ মাস পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরেছেন। তাদের অপ্রত্যাশিতভাবে দীর্ঘ যাত্রা শেষে তাদের স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের সময় শুরু হলো।

ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ওয়েলসের হিউম্যান ফিজিওলজি (মানব শরীরবিদ্যা) গবেষক অধ্যাপক ডেমিয়ান বেইলি বলেন, 'মহাকাশ মানবজাতির জন্য এখন পর্যন্ত সবচেয়ে চরম পরিবেশ এবং আমরা এমন পরিস্থিতির জন্য বিকশিত হইনি।'

মহাকাশে প্রবেশের পর মানবদেহে নানা পরিবর্তন ঘটে এবং প্রথমে সেটি দারুণ অনুভূত হয়।

'এটি যেন ছুটির মতো লাগে,' বলেন মহাকাশচারী টিম পিক। তিনি ২০১৫ সালে আইএসএসে গিয়েছিলেন।তিনি বলেন, 'আপনার হৃৎপিণ্ড খুব সহজেই কাজ করছে। আপনার পেশি ও হাড়ের ওপর কোনো চাপ নেই। আপনি শূন্য মাধ্যাকর্ষণের অসাধারণ পরিবেশে ভেসে বেড়াচ্ছেন।'

পেশী শক্তি হারানো

কিন্তু পেশীর ক্ষেত্রে এটি হল, ব্যবহার করুন বা শক্তি হারান।

সাধারণ কাজ যেমন দাঁড়িয়ে থাকার সময়েও শরীরের বিভিন্ন পেশীকে কাজ করতে হয় আপনাকে সোজা দাঁড় করিয়ে রাখতে।

এটি কিন্তু আইএসএসে মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে (একেবারে শূন্য নয় এমন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি) ঘটছে না।

যখন সবকিছু প্রায় শূন্য মাধ্যাকর্ষণে থাকে, তখন পেশি শক্তির ধারণাটি একেবারে ভিন্ন হয়ে যায়।

দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া

হৃৎপিণ্ড এবং রক্তনালীগুলোও সহজে কাজ করতে পারে, কারণ তখন আর মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে রক্ত পাম্প করতে হয় না। এবং এই কারণে সেগুলো দুর্বল হয়ে পড়তে শুরু করে। আর হাড়গুলোও দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়।

পুরোনো হাড় ভাঙার এবং নতুন হাড় তৈরির মধ্যে একটি সঠিক ভারসাম্য থাকা উচিত। কিন্তু মাধ্যাকর্ষণের বিরুদ্ধে কাজ করার প্রতিক্রিয়া ও প্রতিরোধ ছাড়া এই ভারসাম্য বাধাগ্রস্ত হয়।

অধ্যাপক বেইলি বলেন, 'প্রতি মাসে, তাদের হাড় এবং পেশির প্রায় ১ শতাংশ শুকিয়ে যাবে। এটি দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া।'

এবং এটি পৃথিবীতে ফেরার পর স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

এ সমস্ত কারণেই মহাকাশচারীরা অত্যন্ত ভাল শারীরিক অবস্থায় মহাকাশে যান।
নভোচারী সুনি উইলিয়ামস পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তাকে ক্যাপসুল থেকে বের করা হচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

তাদের দৈনন্দিন রুটিনে দুই ঘণ্টার ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত থাকে। সেখানে ট্রেডমিল, সাইক্লিং মেশিন এবং ওজনসহ বিভিন্ন ব্যায়াম করতে হয়, যাতে যতটা সম্ভব পেশি এবং হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখা যায়।

এখন, সুনি এবং বুচ একটি কঠিন ব্যায়াম প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম শুরু করবেন তাদের হারানো শক্তি পুনরুদ্ধারের জন্য।

মহাকাশে যাওয়া প্রথম ব্রিটিশ নারী ড. হেলেন শারম্যান বলেন, 'এটা সম্ভবত তাদের পেশির ভর পুনর্গঠন করতে কয়েক মাস সময় নেবে।'

তিনি বলেন, হাড়ের ভর পুনরুদ্ধারে 'কয়েক বছর' সময় লাগতে পারে। কিন্তু তবুও 'পৃথিবীতে ফিরে আসার পর যে ধরনের হাড় আমরা পুনর্গঠন করি, তাতে কিছু সূক্ষ্ম পরিবর্তন দেখা যেতে পারে যা কখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে ওঠে না।'

কিন্তু এটি শুধু পেশি এবং হাড়ের বিষয় নয়, মহাকাশ পুরো দেহকেই পরিবর্তন করে।

আমাদের শরীরে বাস করা ভালো ব্যাকটেরিয়া মাইক্রোবায়োমেরও পরিবর্তন ঘটে।

প্রায় শূন্য মাধ্যাকর্ষণে শরীরের তরলও পরিবর্তিত হয়।

পৃথিবীতে যেমন তরল শরীরের নিচের দিকে চলে যায়, মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে তা ওপরের দিকে, বিশেষত বুকে এবং মুখে চলে আসে।

মুখ ফুলে যাওয়া শরীরের প্রথম দৃশ্যমান পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি।

কিন্তু এতে মস্তিষ্কও ফুলে যেতে পারে এবং চোখের মধ্যে থাকা অপটিক নার্ভ, রেটিনা এমনকি চোখের আকৃতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

এটি 'মহাকাশ ফ্লাইট সংক্রান্ত নিউরো-অকুলার সিনড্রোম' নামে পরিচিত, যা দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়ার এবং সম্ভবত স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।

মাথা ঘোরানো

মাইক্রোগ্র্যাভিটি ভেস্টিবুলার সিস্টেমকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি মূলত আমাদের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং কোন দিক ওপরে আছে তা অনুভব করার মাধ্যম।

মহাকাশে ওপরে, নিচে বা ডান-বাম বলে কোন দিক নেই। এটি বিভ্রান্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে যখন মহাকাশ থেকে ফিরে নভোচারীরা পৃথিবীতে আসেন।

টিম পিক বলেন, 'এটা ঠিক করার প্রথম ধাপ হলো মাথা ঘোরার অনুভূতি কাটানো, ভারসাম্য ফিরে পাওয়া এবং সাধারণভাবে হাঁটার জন্য শক্তি পাওয়া, যা দুই-তিন দিন সময় নেবে।'

তিনি বলেন, 'পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রথম দুই-তিন দিন আসলেই অত্যন্ত কষ্টকর হতে পারে।'মাইক্রোগ্র্যাভিটি ভেস্টিবুলার সিস্টেমকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি মূলত আমাদের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং কোন দিক ওপরে আছে তা অনুভব করার মাধ্যম।

মহাকাশে ওপরে, নিচে বা ডান-বাম বলে কোন দিক নেই। এটি বিভ্রান্তিকর হতে পারে, বিশেষ করে যখন মহাকাশ থেকে ফিরে নভোচারীরা পৃথিবীতে আসেন।

টিম পিক বলেন, 'এটা ঠিক করার প্রথম ধাপ হলো মাথা ঘোরার অনুভূতি কাটানো, ভারসাম্য ফিরে পাওয়া এবং সাধারণভাবে হাঁটার জন্য শক্তি পাওয়া, যা দুই-তিন দিন সময় নেবে।'

তিনি বলেন, 'পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রথম দুই-তিন দিন আসলেই অত্যন্ত কষ্টকর হতে পারে।'
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:১১
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসনাতের বয়ানে সেনাবাহিনীর প্রস্তাব নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি, সেনা সদরের অস্বীকার

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১:০১

হাসনাতের বয়ানে সেনাবাহিনীর প্রস্তাব নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি, সেনা সদরের অস্বীকার

ছবি: অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগের একটি 'সংশোধিত' অংশকে রাজনৈতিকভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তবু তো ফাল্গুন রাতে এ গানের বেদনাতে আঁখি তব ছলছলো....আমার দুঃখভোলা গানগুলিরে ......

লিখেছেন ইন্দ্রনীলা, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫



মাঝে মাঝে আমার বুকের গহীনে এক ব্যথার নদী উথলে ওঠে। উথাল পাথাল ঢেউগুলো পাড়ে এসে আছড়ে পড়ে। উত্তাল বেগে ধেয়ে এসে ভেঙ্গে খান খান হয়ে পড়ে বুকের মাঝে... ...বাকিটুকু পড়ুন

"বিস্মৃতি"

লিখেছেন দি এমপেরর, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৫


সে যে আজ কোথা হারিয়ে গিয়েছে, আঁধার ছেয়েছে ঘনঘোর কালো;
চাঁদ নেই তারকারাজিও উধাও, নেই জ্বলে কোথা টিমটিমে আলো!
সে যে জানে শত হৃদয়ের কথা, মায়াজালে ঘেরা হাজার স্মৃতি!
কত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথা হালকা পোষ্ট!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:০৭

অবিশ্বাস্য হলেও লেকটির অবস্থান খোদ ঢাকায়; কেউ কি এর লোকেশন বলতে পারেন?



কাটা তরমুজের ছবিটা দেবার বিশেষ মাজেজা আছে;
উটিউবে একজন কামেল বুজুর্গান পাকা সূমিষ্ট তরমুজ কেনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলার্ট : শেখ হাসিনা আজ রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৭


বাংলাদেশের মানুষ কল্পনা করতে খুব ভালোবাসে। গুজব ও অপতথ্য শেয়ারে বাংলাদেশের মানুষ প্রথমদিকে থাকবে বলে অনেকের বিশ্বাস । দেশের মানুষের পাঠ্যবই ছাড়া অন্য কোনো বইয়ের প্রতি আগ্রহ নেই। আত্নউন্নয়ন মূলক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×