১০ টা বছরের জেনারেশন গ্যাপ কি এত হতে পারে? কিছুদিন আগেও কি আমরা বাঁধনহারা যুবা ছিলাম না?
কই আমরাতো এতটা অভদ্র হতে পারিনি, এতটা নির্লজ্জ!
উবারের যান্ত্রিক সমস্যার কারনে বাসে উঠেছিলাম অফিস থেকে ফেরার পথে। পিছনের দিকে ফাকা দেখে বসলাম। পাশের সিটটা খালিই ছিল। মিনিট দশেক পরে এক সুদর্শন যুবক উঠলো ২৪/২৫ বছর বয়সের। কানে মোবাইল লাগিয়েই আমাকে ইশারা করছে পাশের সিটে বসার জন্য। আমি উঠে দাঁড়িয়ে পাশের সিটে বসতে দিলাম। উফ! বসার পর থেকে ছেলেটির অঙ্গীভঙ্গি এত অভদ্র লাগলো নিজেকে সামলাতে পারছিলাম না। মন চাইলো নিশপিশ করা হাতটাকে শান্ত করি ফাজিলের গালটার উপর।
মোবাইলের উপাশের ললনার সাথে কুৎসিত আলাপন সে নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছে। আমি অস্বস্তিতে মরছি, কিন্তু অসহায়। সবগুলো সিটই বুক হয়ে গেছে। আমি যে একটা জলজ্যান্ত মানুষ তার পাশে বসে আছি, সে এতক্ষন যেন খেয়ালই করে নাই। মিনিট দশেক রঙ্গ আলাপন ছেড়ে সে নিশ্চিন্তে হিন্দি গান আওড়াচ্ছে তাও উচ্চ শব্দে! শিক্ষিত বাচনভঙ্গি আর স্বচ্ছলতার পোষাক দেখে মেলাতে চেষ্টা করলাম, এইটা কোন চিজরে ভাই? আমার থেকে বড়জোর ৫/৭ বছরের ছোট ছেলেটির এই কু-শিক্ষা আমাকে ধাধায় ফেলে দিলো । প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এত গ্যাপ কেন? আমাদের নুন্যতম পারিবারিক শিক্ষাটা, সামাজিক মুল্যবোধটাকে সম্মান করতে শিখিয়েছে আজীবন। কিন্তু নতুন এই সকল হাইব্রীড প্রজন্ম, না পারছে অন্যকে সম্মান দিতে, না পারছে নিজেরা সম্মান আদায় করতে। এরাই ডিজিটাল প্রজন্ম, ইয়াবা প্রজন্ম, ডিজে আর মেকি চেতনার প্রজন্ম। এর দায়টা তাদের থেকে আমাদেরই বেশি। অভিভাবক শ্রেণি দৌড়াচ্ছি বিত্ত-বৈভব, সোস্যাল স্ট্যাটাস আর সন্তানদের A+ আশায়। নৈতিকতা এখানে ঠুনকো, মুল্যবোধ এখানে মূল্যহীন। যেভাবে পারো, যেমনে পারো, অন্যকে ধাক্কা দিয়ে পারো সামনে এগোও, প্রয়োজনে কাউকে পেছেনে টেনে হলেও সামনে এগোও।
এভাবে সমাজ চললে সেটা কোনদিন মঙ্গল বয়ে আনতে পারবেনা। নেশা, পরকিয়া, আর হানাহানিতেই সে সমাজের ধংস্ব অনিবার্য।
এটা গোটা রাষ্ট্রেরই সামগ্রিক চিত্রের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯