এক. বাংলাদেশে কোন ইসলামী হুকুমত কায়েম নেই। বাংলাদেশে কুরআনের আইন বলবৎ নেই। বাংলাদেশের কোন আইন সূরা সদস্য দ্বারা প্রণীত হয়না। আইন প্রণয়নের জন্য কোন মজলিস বসে না। এক সময় এদেশের আলেম সমাজ ফতোয়া জারী করতো কিন্তু সে ফতোয়ার এখন কোন কার্যকারীতা নেই। হাইকোর্টের পরিস্কার নির্দেশ আছে, ”ফতোয়া দেয়া যাবে কিন্তু কাউকে মানতে বাধ্য করা যাবে না।”।তবে অনেকে গলা ফাটান, বাংলাদেশ মুসলিম কান্ট্রি, বাংলাদেশে 95% মুসলমান বাস করে, এদেশে মুসলমানদের ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বলতে চাই এগুলো ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে উদযাপন করার মত। এগুলোর কোন ভ্যালু বা মূল্য নাই। শুধু ফাঁকা আওয়াজ ছাড়া।
এখন আপনি বলতে পারেন বাংলাদেশ আসলে কি? বাংলাদেশ আসলে কী তাহলে আসুন একটু বুঝে নেওয়া দরকার। একটি দেশ কে নির্দিষ্ট করে উপস্থাপন করার জন্য কয়েকটি বিষয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে হয়-
প্রথমত,
(ক) ভূখন্ড
(খ)নির্দিষ্ট আয়তন
(গ) বহি বিশ্বের স্বীকৃতি
(ঘ) জনগণ
(ঙ) সরকার।
দ্বিতীয়ত
(ক) নির্দিষ্ট আইন/সংবিধান
(খ) মানুষের আচার-আচারণ/ধর্ম
তৃতীয়ত
(ক) উক্ত আচার-আচরণ কে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি/গ্যাজেট অথবা নোটেফিকেশন হিসেবে প্রকাশ করা।
অনেকে বলতে পারেন; বাংলাদেশের সংবিধানে তো ইসলাম কে রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে, অথবা সংবিধানের শুরুতে বিসমিল্লাহ দেয়া হয়েছিলো। আরে ভাই এগুলো এডিটিং করা। এগুলো যারা দিয়েছিলেন তারা নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য দিয়ে ছিলেন। যারা এর প্রবর্তক তারা দুষ্ট লোক। এই সমস্ত লোক নিজের প্রয়োজনে রিভার্স সুইপ খেলে। মাঝে মাঝে কাভার ড্রাইভ করতেও ভুলে যান না। এই ধরণের কাজে নিজস্ব স্বার্থ কাজ করেছে বলেই তাদের কর্তৃক সংবিধানে স্বীকৃতি পাওয়া ইসলাম রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রভাব ফেলতে পারছেনা। তারা নিজেদে গদি রক্ষা করার জন্য এদেশের ধর্মকামী মানুষদের সাথে ব্লাক মেইল করেছে। আমাদের জানা দরকার, ইসলামী হুকুমত কায়েম করতে হলে প্রচলিত বিধি ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরুপে বাতিল করে কুরআনিক বিধি বিধান জারী করতে হবে। এখন যারা বাংলাদেশ কে মুসলিম কান্ট্রি, মুসলমানদের দেশ বলছেন তারা সেই 1980 অথবা 1990 সালের ধোকা বাজিতে মজে আছে। তাদের বের হয়ে আসা জরুরী অথবা তাদের হুশ ভাঙ্গানো দায়িত্ব সরকারের।
আমরা জানি, গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র, যা 1971 সালে পাক হানাদার বাহিনীর কজ্বা থেকে এদেশের মুক্তি ও শান্তিকামী জনগণ সম্মিলিতভাবে ছিনিয়ে এনেছিল। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ কে পরিচালনা করার জন্য সংবিধান রচনা করা হয়। সেই সংবিধান বিভিন্ন সময় পরিবর্তন বা পরিমার্জন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। কিন্তু রাষ্ট্র মানুষের তৈরী সংবিধান দ্বারাই পরিচালিত হবে যত দিন না ধর্মীয় বা আল্লাহ্ বা ঈশ্বর প্রদত্ত সংবিধান পুনঃ প্রতিষ্ঠা না পায়। পুনঃ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা কখনো বলতে পারছিনা বাংলাদেশ একটি মুসলিম কান্ট্রি বা মুসলিম দেশ। বাংলাদেশের পরিচয় সংবিধানে স্পষ্ট করে লেখা আছে “গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ”। সুতরাং আপনি বাংলাদেশ কে অন্য নামে সংজ্ঞায়িত করছেন মানে আপনি সংবিধান লংঘন করছেন। রাষ্ট্র বা কোন ব্যক্তি চাইলে স্ব-ইচ্ছায় আপনার বিরুদ্ধে সংবিধান লংঘন করার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে বিচারের কাঠ গড়ায় দাড় করাতে পারে। সুতরাং আপনি সাবধান হউন, অথবা আগে বাংলাদেশে ইসলামী হুকুমত কায়েম করুন তারপর বলুন বাংলাদেশ একটি মুস্লিম দেশ বা ইস্লামিক দেশ। আপনাদের বলা উচিৎ গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ জণ-গনের দেশ, এখানে জন গণের বিশ্বাস ও মর্যাদার মূল্য আছে। সংবিধানে সে অধিকার দেয়া হয়েছে। প্লিজ সংবিধান লংঘন করবেন না তাহলে আইনি ব্যবস্হা নিতে বাধ্য হব। তবে, মাঝখানে অবস্থান করে লাফানো বন্ধ করুন। আপনি যতটা না ইসলামের জন্য কাজ করছেন তারচেয়ে হাজারগুণ ইসলামের ক্ষতি করছেন। বর্তমানে আপনি দুষ্ট লোকদের কাতারে আছেন।
বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থা হলো সাংবিধানিক। সংবিধান হলো আইনের আঁতুর ঘর। এবং নব্য কোন সমস্যা মোকাবেলায় যদি কোন আইন সংশোধন কিংবা নতুন করে প্রয়োজন হয় তাহলে সে আইন সংসদের প্রণীত হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশে ইসলামী আইনের কোন প্রভাব নেই।তবে বাংলাদেশে বসবাসীকারী মানুষের বিশাল একটি অংশ ইসলাম ধর্ম অনুসারী। তারা ইসলামের এবাদত সমন্ধনীয় আইনগুলো ব্যক্তিগতভাবে পালন করে থাকে। এই এবাদত সমন্ধীয় আইনগুলোর মধ্য অন্যতম হলো.. নামাজ, রোজ, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি। অন্যান্য বিষয়গুলো তারা প্রথাগতভাবে শিখে থাকে, যেমন: কুরবানি, পর্দা, বিয়ে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদি। এ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। সব ব্যাথা পর্দা প্রথা নিয়ে। এই পর্দা প্রথার বিরুদ্ধে গিয়ে তারা নতুন একটি প্রথার প্রচলন করেছেন; তা হলো প্রগতি। আচ্ছা পর্দার উদ্দেশ্য যদি নিজের ইজ্জত হেফাজত, শালীনতা বজায় এবং অন্যের কু-দৃষ্টি থেকে বাঁচা হয় তাহলে এখানে প্রগতি টেনে আনার উদ্দেশ্য কি? যদি প্রগতির অর্থ অন্য কিছু হয় তাহলে এমন প্রগতি আমাদের দরকার নেই।
দুই. বর্তমানে আমরা রাষ্ট্রীয় অপরাধের সাথে ধর্ম কে গুলিয়ে ফেলি। বিশেষ করে, ধর্ষণের বিষয়টি। দেশে প্রতিনিয়ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, ঘটছে, ঘটবে। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর, অপমান কর এবং অপ্রত্যাশিত। মাঝে মাঝে কিছু ধর্ষণের ঘটনায় আমরা লাফালাফি করে। কেউ কেউ ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত লাফায় এবং মুখস্থ কিছু বুলি আওড়ায়, এই লাফ ও বুলি দুই ধরণের পাব্লিক দেয়।
(ক) হুজুগে ধর্মীয় গোষ্ঠী কর্তৃক প্রচারিত লাফ ও বুলি-
পর্দা না করার কারণে মেয়েটি ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে! পর্দা মেনে চললে এই অবস্থার শীকার হতো না।
এই ধরণের কথা তারা তখনি প্রচার করে যখন উঁচু মহলের বা অভিজাত শ্রেণির অথবা প্রগতি মনাদের ক্ষেত্রে ঘটে। তারা হয়ত এদের কর্মকান্ডের উপর বিরুক্ত। কারণ, তারা পূর্বে সর্ব সাধারণের উপর দাপিয়ে বেরিয়েছে। যাদের উপর দাপিয়েছে তারা ছিলো রাষ্ট্রের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের পেটে তখন ভাত ছিলো না। এখন তারা মোক্ষম সুযোগ পাইছে, তাই দাপানোর প্রতিক্রিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্ত করছে।
(খ) পর্দা প্রথা বিরোদী কর্তৃক লাফ ও বুলি:
অভিজাত শ্রেণির কেউ ধর্ষণের শিকার হলে তারা ভিক্টিমের সার্পোট করতে গিয়ে অহেতুক পর্দা কে টেনে আনে। তারা চিল্লা পাল্লা করে বলে বেড়ায়, কোথায় আজ পর্দা, কোথায় আজ হিজাব, এই হিজাব তো অমুক কে ধর্ষণ থেকে রক্ষা করতে পারেনি? অমুক হিজাব পড়া অবস্থায় ধর্ষণের শিকার হয়েছে, অমুক নাবালিকা ধর্ষণ করা হয়েছে, তার তো হিজাব পড়া বয়স হয়নি, অমুক তো ডাকাত কর্তৃক ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে, কই এই হিজাব তো কোন কাজে দেয়নি ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাদের কথা বার্তায় মনে হয়, তারা যতটা না ধর্ষণের বিরুদ্ধে কথা বলতে আগ্রহী, তারচেয়ে বেশি আগ্রহী পর্দা বিরোধী কথা বলতে। এই দুই গ্রুপের কেউই তাদের আশে পাশে প্রতি নিয়ত যে সমস্ত নারীরা ধর্ষণের স্বীকার হচ্ছে, যৌন হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন অথবা হেনেস্তা হচ্ছেন তাদের পক্ষে কোন দিন কথা বলেছেন কিন সন্দেহ আছে।
এখানে দেখা যাচ্ছে, পরস্পর বিরোধী দুটি গ্রুপ কাজ করছে। তারা নিজেদের প্রচারণার পারদ তুঙ্গে রাখার জন্য ক্যাচাল সৃষ্টি করছে। এর থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।
উদাহরণ স্বরুপ তাদের লাফ ও বুলি অনেকটা এরকম:
(ক) দেওয়ানবাগীর মত, কোন এক ভাষণে সে বলেছে, কুরআন মানুষ কে রক্ষা করতে পারেনা, সাদ্দামের হাতে কুরআন ছিলো, সে কুরআন সাদ্দাম কে রক্ষা করতে পারেনি!
আচ্ছা কোরআন কি কাউকে রক্ষা করতে পারে? অবশ্যই না। উত্তর হলো কুরআনের আইন মানুষ কে রক্ষা করতে পারে, নিরাপত্তা দিতে পারে, ভিক্টিম হলে ন্যায় বিচার পাওয়া সুযোগ করে দিতে পারে। যদি সে আইন সঠিকভাবে বাস্তাবায়িত হয়।
(খ) চরমুনাই চেয়ারপার্সন কোন এক বক্তৃতায় বলেছেন; তার মরহুম বাবাজান কেয়ামতের মাঠে জাহাজ ছুটাইবেন।
কিয়ামতের মাঠে নৌকা/জাহাজ চলবে কিনা পর্যন্ত। আজ শুনিনি।
দেখা যাচ্ছে এগুলো ফ্যান্টাসি। যারা এই ফ্যান্টাসি শুনে বাবাজান বাবাজান করে তারা ঘোরের মধ্যে আছে অথবা তাদের কে রাখা হয়েছে।(এখানে আমি দুটি উদাহরণ দিয়েছি মাত্র, এরকম অসংখ্য জনের অসংখ্য উদাহরণ আছে, কারো বিশ্বাসে আঘাত লাগলে ক্ষমা প্রার্থী।)
ইসলামের কোথাও বলা নেই পর্দা করলে নিশ্চিত ধর্ষণ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। শুধু ধর্ষণ প্রতিরোধের জন্য আল্লাহ্ পর্দা ফরয করেনি।আর ধর্ষণ থেকে বাঁচার জন্য পর্দার উপর নির্ভরশীল হতে বলেনি। আল্লাহ্ পর্দা কে একটি হুকুম (ফরয) হিসেবে নাযিল করেছেন যাতে শালীনতা বজায় থাকে, অন্যের কু-দৃষ্টি থেকে হেফাযত থাকা যায় এবং অন্যের কামনার রিপুকে যথা সম্ভব দমন করে রাখা যায়। ব্যভিচার প্রতিরোধে পর্দা ভূমিকা রাখে, এখানে ব্যভিচার বলতে আমরা সাধারণত বুঝি পর পুরুষের সাথে পর নারীর অবাধ মেলামেশা। এই মেলার মেশার আর ভিন্ন ভিন্ন শব্দ দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা যায়- বিবাহের পূর্বে মেলামেশা(লিভ টুগেদার), বিবাহের পর মেলামেশা (পরকীয়া), একে অন্যের প্রতি ক্রাশ খাওয়ার পর গোপনে মিলিত হওয়া (অভিসার), অন্যকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে মেলামেশা (সংজ্ঞা আজো ঠিক হয়নি) ইত্যাদি। আর ধর্ষণের জন্য ইসলামে আলাদা আইন, বিধান রয়েছে। ইসলামের বিধান অনুযায়ী এগুলো খারাপ এবং গহিত কাজ। যারা এই সমস্ত কাজে লিপ্ত তাদের জন্য কঠিন শাস্তি প্রাপ্য।
তিন. বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানে যে ইচ্ছে করে সে চাইলে ছিঁচকে চোর হতে পারে। আর যার যোগ্যতা আছে সে চোর থেকে মাফিয়া ডন হতে পারবে। টোকাই মিজান, এরশাদ শিকদার এর প্রকৃত উদাহরণ।
অপর দিকে, এদেশের মানুষ তাদের নিজ ইচ্ছায় বা স্ব-ইচ্ছায় সব কিছু (ধর্ম পালন) করছে। স্ব-ইচ্ছা ছাড়া কেউ তাদের ধর্ম পালন করতে বাধ্য করছেনা। কেউ শর্ট পোষাক পড়লে তাকে ঢিলাঢালা পোষাক পড়তে বাধ্য করছেনা। ওড়না এখন যার ইচ্ছে সে রাখছে আর যার ইচ্ছে হচ্ছে না সে রাখছেনা। সুতরাং কেউ যদি কোন অপরাধের স্বীকার হয় তার দায়-দায়িত্ব ধর্ম বহন করবে কেন? আবার কেউ ভিক্টিম হলে তার দায় ধর্ম নিবে কেন! যারা এগুলো করবে/অহেতুক ধর্মকে দোষ দিবে বা ধর্মকে টেনে আনবে তারা দুষ্ট লোক।
অপর দিকে যারা স্ব-ইচ্ছায় ধর্মীয় বিধি-বিধান পালন করবে তাদের বিধি বিধান কে আপনি কোন অপরাধের সাথে গুলিয়ে ফেলবেন না। কটাক্ষ করবেন না। সমালোচনা করবেন না। যদি আপনি এগুলো করেন তাহলে আপনিও দুষ্ট লোক।
আসুন আমরা সকল অপরাধ কে রাষ্ট্রীয় অপরাধ হিসেবে দেখি। কোন অপরাধ সংঘটিত হলে বলি, রাষ্ট্রীয় আইন না মানার কারণে বখাটে কর্তৃক অমুক নারী ধর্ষিত হয়েছে । পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসন না মানার ফলে মেয়েটি বখাটের বিয়ের প্রলোভনের পা দিয়েছে। অবৈধভাবে মেলামেশার ফলে তারা (মেয়ে বা ছেলে) সামাজিক কাঠামো নষ্ট করছে।
কোন অপরাধ সংঘটিত হলে তার দায় সরকার নিবে, অপরাধী নিবে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জবাব দিহিতা করবে। তাহলে ভিক্টিমের বিচার পাওয়া সহজ হবে। নচেৎ আপনাদের চিল্লা-পাল্লা ভিক্টিমের বিচার পাওয়া কঠিন করে দিবে। অতএব, আমরা চাই আপনি দুষ্ট লোকদের কাতারে না যান।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:০১