দেশে প্রতিনিয়ত র্যাপ হচ্ছে তাতে কারো মুখে তেমন কোন সাড়া শব্দ নেই। যেমন গেল বছর ঢাকার একটি পাশ্ববর্তী জেলায় একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হলে তার বাবা থানায় মামলা করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন, হয়রাণী হয়েছেন। ধর্ষকদের ভয়ে কিছু দিন পালিয়ে বেড়িয়েছেন। তাদের একমাত্র সম্ভল পালিত পশুটাকে ধর্ষকের দল সাবাড় করে দিয়েছিলো। এতো কিছুর ঘটার ফলে তিনি দেশের বিচার ব্যবস্হা, আইনের প্রতি আস্হা রাখতে পারেনি। অবশেষে বাবা ও মেয়ে একই সাথে ট্রেনের নিচে আত্মাহুতি দিয়ে নিজেদের মুক্ত করে দিয়েছেন (স্বাধীনতা যুদ্ধের পর কেউ যদি মুক্তিযোদ্ধা খেতাবের দাবিদার হন তাহলে এই বাবা ও মেয়ে প্রথম সারিতে থাকবে)। এই খবর প্রথম অবস্হায় আমাদের লেজকাটা মিডিয়াগুলো প্রচার করতে চায়নি। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া সরব হওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তারা দায়সারাভাবে প্রচার করে নিজেদের জাত রক্ষা করেছে। আবার একই সময়ে বনানীতে দুইজন মেয়ে পার্টিতে গিয়ে ধর্ষণের যেই না অভিযোগ তুললো তাতেই সাথে সাথে এডিটিং করা হাউকাউ পড়ে গেল! আরে ভাই গরীব ঔ মেয়ের জন্য যদি আগে জোড়ালো হাউকাউ করা যেত তাহলে বনানীতে দুই বেজন্মা আকাম করতে কখনো সাহস পেত না।
আগে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য হাউকাউ শুরু করেন, তাহলে দেখবেন জাফর স্যারদের জন্য হাউকাউ করা লাগবেনা। তারা
এমনিতেই শান্তিতে থাকতে পারবে এবং স্যারদের উদ্দেশ্য সহজে বাস্তবায়িত হবে। এতে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে। এখন কথা হলো, প্রতিনিয়ত দেশের কোথাও না কোথাও ছুড়ি চাপাতি চলছে, তখন আপনারা চুপ থাকেন! আর যেই স্যারদের উপর ছুড়ি চাপাতি চলে তখন আপনারা সরব হন! এতে কার্যত কিছুই হচ্ছেনা কিংবা মূল সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবেনা। আমাদের/আপনাদের মূল সমস্যা পেতে হলে:-
-পুলিশ মানুষ সেবার নামে পকেটে যে ছুড়ি কাচি চালায় তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আওয়াজ একবার গড়ে তুলেন।
-বাংলাদেশে শেয়ার মার্কেটের মাফিয়াদের বিরুদ্ধে গলার আওয়াজ বাড়ান।
-ব্যাংক ডাকাতির যে অভিযোগ আছে তার সুষ্ঠ তদন্ত করে হোতাদের বিচার করতে বলেন। এবং তাদের কাছ থেকে সে টাকা ফেরত এনে বেকারদের জন্য কর্ম সস্হানের ব্যবস্হা করার জন্য চাপ দেন।
-বিদেশে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য জোড়ালো দাবি তুলেন। এবং টাকা ফেরত এনে নতুন ইন্ডাস্ট্রি গঠন করে বেকারদের নিয়োগ দিতে বলেন।
-কোটা ব্যবস্হার পুনঃ বিন্যাস করার জন্য জোড়ালো ভূমিকা রাখেন ।
-সরকারী মন্ত্রণালয় কে ঘুষ মুক্ত করার জন্য শাহবাগে জমায়েত হন।
-রাজৈনিক প্রতিহিংসা দূর করার জন্য মাঠে নামেন।
-গণ-তন্ত্রের বিকাশ ঘটাতে ভূমিকা রাখুন। এবং বিরোধী মত প্রকাশের সমান সুযোগ সুবিধা দেয়ার জন্য গান ধরুন।
-নিরপেক্ষ ও সুস্হ নির্বাচন আয়োজন করার জন্য পদক্ষেপ নেন।
-মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলেন।
-পেশি শক্তির রাজনীতি বন্ধ করতে বলেন।
-দলীয় ক্ষমতা, রাজনৈতিক প্রভাব চিরতরে বিদায় করার জন্য মাঠে নামুন।
-বিদেশে দাস-দাসী রপ্তানি বন্ধ করতে বলেন। দেশেই কেন তাদের কাজে লাগানো যাচ্ছেনা রাষ্ট্রের কাছে তার জবাব চান।
-দেশে কেউ যাতে ধর্মের নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে না পারেন সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। ধর্ম ব্যবসায়ীদের গলা চেপে ধরেন।
-নিত্য দ্রব্যমূল্য সহণীয় পর্যায়ে রাখার জন্য কথা বলুন।
এছাড়া আরো অনেক কিছু আছে যেগুলো করলে দেশ থেকে কালো ছায় নেমে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
দেশের আইন মানুষের কল্যাণে প্রয়োগ করতে পারলেই মানুষের মধ্যে সাম্য, ভ্রাতৃসংঘ গড়ে উঠবে। নতুবা শুধু বই লিখে যেমন সমাজ কে পরিবর্তণ করা যাবেনা তেমনি শুধু ধর্মের ঢোল পিটিয়ে মানুষ কে সম্পূর্ণভাবে সৎপথে আনায়ন করা সম্ভব না।
মানুষের হাতে কাজ থাকলে মানুষ খারাপি করার চিন্তা মাথায় আনার সুযোগ পায়না। দেশের অনেক মানুষ পিছনে পড়ে গেছে, তাদের টেনে তুলতে না পাড়লে জাতি আরো কঠিন সময় পার করবে। জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তাই এদেশের যুবকদের সঠিক পথে পপরিচালিত করতে হলে অধিক কর্মসংস্হান সৃষ্টি করতে হবে এবং সাথে সু-শিক্ষার আওতায় প্রতিটি মানুষ কে আনতে হবে। এতে এক সময় সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬