দেশে হুজুগে হিড়িক চলছে। একই ব্যক্তি কাল সাপ হয়ে ছোবল মারছে, আবার যখন দেখছে দংশনককৃত বস্তু চেয়ারের পায়া নড়চড় করে দিতে পারে তখন নিজে ওঝার ভূমিকায় অব্তীন হয়ে সে বস্তুকে প্রাণ জিইয়ে দিচ্ছে।
একদল আছে মাতার আঁচলের নিচে আশ্রয় গ্রহন করে, আরামে বিরানী ভক্ষম করে যখন আর গলদ:করণ করতে পারে না তখন গলা দিয়ে চিকুন ঠেঁকুর তোলেন, তারপর চিক্কুর বাক্কুর দিয়ে উঠেন, আঁচল ফুটা আঁচল ফুটা! এই দৃশ্য যারা দূর থেকে অবলোকন করেন, তারা কাজ কারবার দেখে খিল খিল হেসে উঠেন।
তাদের এটা বুঝতে হবে, মাতা যা করেন আঁচলের নিচে আশ্রয় গ্রহন কারীদের মঙ্গলের জন্য করেন। মাতার যদি একবার চেয়ার ছাড়া হয়ে যায় তখন দৌড়ের উপর থাকতে হবে। এখন যারা তার আঁচলের নিচে আশ্রয়ে আছে তারা লন্ডভন্ড হয়ে যাবে।
এদেশে গরীবরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যেতে পারে না। তাদের কাছে ন্যায় বিচার শর্সে ফুল। মেয়ে ধর্ষণের স্বীকার হলে মামলা মোকাদ্দমায় হয়রানি, তাদের কাছে ন্যায় বিচারের প্রতীক ১০০০ হাজার টাকা! দুটি প্রাণের অকালমৃত্যু। অন্যদের বাড়ি, ভিটে মাটি বন্ধক রেখে উকিল, আদালত পাড়ায় কতিপয় ব্যক্তিদের নিকট টাকার বাণ্ডিল তোলে দেয়া! থানা তদন্ত কর্ম কর্তাদের পকেট ভারি করা।
এদেশে বিচারের বাণী যুগ যুগ ধরে কেঁদে কেঁদে মরেছে। সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায় বিচার মানে, স্হানীয় বখাটের হাত থেকে মেয়েকে হেফাযত করা। মামলা মোকাদ্দমায় হররানি না হয়া। তদন্ত কর্মকর্তার উল্টাপাল্টা রির্পোট না দেয়া। ঘুষখোর ও পা চাঁটা পুলিশ অফিসারদের মুখ না দেখা। টাকা ও ক্ষমতার দাপটে বিচার কে প্রভাবিত না করা।
এত কিছু যারা দেখতে পায়না তাদের কাছে ন্যায় বিচারের প্রতীক জড় ভাস্কর্য কে দেখা স্রেফ তামাশা ছাড়া কিছুই না।
আমি হলফ করে বলতে পারি সুপ্রিম কোর্টের সামনের ভাস্কর্য নিয়ে যদি গণভোটের আয়োজন করা হয় তাহলে এর (ভাস্কর্যের) বিপক্ষে ৯৭ পারসেন্ট ভোট পড়বে।
এই ভাস্কর্য না সড়ালে ধর্মীয় সংগঠনগুলো মানুষের মাঝে ভাবাবেগ সৃষ্টি করে মিছিল মিটিং জনসভা করত। সরকার বাধ্য হয়ে তাতে বাধা দিত। ফলে পবিত্র রমজান মাসে দেশে রক্তারক্তি হত, যা অত্যান্ত দু:খজনক।
সাধারণ মানুষ তখন বুঝত, বাস্তবে যেখানে মানুষের মাঝে ন্যায় বিচার নেই সেখানে জড়বস্তু ন্যায় বিচারের প্রতীক হতে পারে না।
মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা গেলে ভাস্কর্যের প্রয়োজন হবে না। মানুষ তখন ন্যায় বিচার বলতে বুঝবে, আদালতে মজলুমের মুখে হাসি আর জুলুমবাজের আর্তনাত।
(ছবি: আলাওলপুর ফেসবুক পেইজ থেকে নেয়া)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৫