বাংলাদেশে এখন জয় বাংলা রোগের প্রকোপ চলছে। জয় বাংলা রোগ মানে হল ‘চোখ ওঠা’ কিংবা‘কনজাংটিভাইটিস’। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি মানুষ নিরুপায় হয়ে আশ্রয়ের জন্য ভারতের পশ্চিম বঙ্গের শরণার্থী শিবিরগুলিতে আশ্রয় নেয়। তাদের এই উদারতার কারণে আমরা আজীবন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। এই ঋণ শোধ হওয়ার নয়।
ঐ সময় বাংলাদেশে চোখ ওঠা রোগের প্রকোপ হয়। শরণার্থীদের সাথে সাথে পুরো পশ্চিমবঙ্গে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ধারণা করা হয়ে থেকে যে কলকাতার অধিকাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। তখন বাংলাদেশের শরণার্থী এবং অন্যান্য আশ্রয় গ্রহণকারীদের মুখে মুখে শুধু একটাই স্লোগান ‘জয় বাংলা’। এই স্লোগানে মুগ্ধ হয়ে পশ্চিম বঙ্গের মানুষেরাও ‘জয় বাংলা’ শব্দটাকে ভালোবেসে ফেলে। চোখ ওঠার প্রকোপ বেড়ে গেলে এই রোগ তখন হয়ে যায় ‘জয় বাংলা’ রোগ। এখনও পশ্চিমবঙ্গের মানুষ চোখ ওঠাকে ‘জয় বাংলা রোগ’ বলে থাকে।
আহমদ ছফার ‘অলাতচক্র’ উপন্যাসে এই রোগের উল্লেখ আছে। তখন শুধু জয় বাংলা রোগ না, জয় বাংলা সাবান, জয় বাংলা গেঞ্জি, জয় বাংলা চপ্পল ইত্যাদি আরও অনেক কিছু বাজারে চলে আসে।
ঐ সময় এই রোগের কারণে এক পর্যায়ে ট্রেন সেবা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। কারণ রেলের বহু কর্মী এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। একটা ফুটবল খেলা বাতিল হয় এই জয় বাংলা রোগের কারণে। মুক্তিযোদ্ধারা এই রোগে আক্রান্ত হয়। এমন কি পাকিস্তানের হানাদার সৈন্যরাও এই রোগে আক্রান্ত হয়।