ছবি-নেট
কোন এক বসন্তে
গভীর ঘুমে যখন
এই বাংলার জনসাধারন
শিমুলে পলাশে নবপ্রাণের স্পন্দন
অস্থির বাংলা অস্থির রাজপথ
প্রতিবাদে সংগ্রামে আন্দোলনে
ক্লান্ত নগরবাসী
গভীর নিদ্রায় যদিও জাতি ঘোর হতাশায় তখন।
অসুরের দল মেতে ওঠে হিংস্রতায়
রক্তের হুলি খেলায়
মুহুর্তেই মৃত্যুকূপে পরিণত হলো
ক্যাম্পাস প্রাঙ্গন
বারুদের গন্ধে রক্তের স্রোতে
লেলিহান শিখায়
গণহত্যায় নিহত শত শত
অসহায় নিরীহ মানুষের বুকভাঙা আর্তনাদ
আঁধার রাত আরো আঁধার রাত
মানবেতিহাসের সব চেয়ে কালো সেই রাত
অপারেশন সার্চলাইট!
গভীর নিকষ কালো
সেই রাত হাতছানি দিলো
পরাধীনতা আর নয়
রাতকেটে ভোরে নতুন বার্তা এলো
নতুন আলোকবর্তিকা নিয়ে
স্বাধীনতার ডাকে নতুন সূর্য এলো
তবু মনে পরে ভয়াল সেই রাত
আধার কালো রাত
বিশ্ব মানবতার সুতীব্র আর্তনাদ।
-----------------------------
সারা বাংলা হানাদারদের অত্যচারে অতিষ্ঠ।বাংলার মানুষ মুক্তিপাগল।আর নয় পাকিস্তান।৭ই মার্চেই বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে লাঠি সোটা যার যা আছে তাই নিয়ে ঝপিয়ে পড়ার আহবান দিলেন।তারই পথপরিক্রমায় পাকিস্তানী ঘৃন্য রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক মার প্যাচে এদেশ কে দাবিয়ে রাখার নানাবিধ নীল নক্সা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন চলছিলো।নির্বাচনে বিজয়ী মেজোরিটি পার্টিকে ক্ষমতায় না এনে ইতিহাসের কালোতম নিধন যজ্ঞ চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল সামরিক সরকার।নানা প্রপাগান্ডা আর মিথ্যা আশ্বাসের মধ্যে দিয়ে ৭১ এর বসন্তে যখন চরিদিকে পলাশ শিমুলের রঙ।২৫ মার্চ রাতে।গভীরতম রাতে।মধ্যরাতে যখন সারা ঢাকা শহর গভীর ঘুমে নিরব নিশ্চুপ পিনপতন নিরবতা।এমনই এক সময়ে সেই নিরবতা ভেঙে যায় ঢাকা সেনানিবাস থেকে বেড়িয়ে পরা ট্যাংক আর সাজোয়া যানগুলো মৃত্যদূত হয়ে তিমির বিদারী হয়ে পৌছে যায় নিষ্পাপ ঘুমন্ত বাঙালীর দরজায়। কয়েক ঘন্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যাদলয়ের হল গুলোতে,ঢাকামেডিকেল কলেজের হোস্টেলে সসম্ত্র হামলা চালিয়ে হত্যা করে কয়েকশ তরুণ তাজা প্রাণ,বুদ্ধিজীবি।বাতাসে বারুদের গন্ধ,জমিনে রক্তস্রোত,স্থাপনাগুলোতে আগুনের লেলিহান শিখা।
আজ ২৫শে মার্চ দিবাগত রাত্রি মানস পটে জাগিয়ে দিবে ভয়াবহ ইতিহাসের জঘন্যতম এক গণহত্যার রাতের।বাংলাদেশ একে নাম দিয়েছে কালো রাত।মহান শোক দিবস ।পরের দিনেই আসে স্বাধীনতার ডাক।বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার।বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন মেজর জিয়া কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে।তারপর সাড়ে নয় মাস যুদ্ধ। কিংবদন্তীর যুদ্ধে বাঙালীর বিজয়। সারাবিশ্বে গর্বিত জাতি হিসেবে বাংলাদেশের মাথা উচু করে স্বাধীনভাবে দাঁড়ানো।
সেই কালো দিবসের কালোতম রাত শোকভরে স্মরণ করি।নত মস্তকে শ্রদ্ধাজানাই ভালবাসা জানাই নিহত হতাহত স্বজনহারা মানুষদের । সকল মানবিকতা বিরুধী কর্মকান্ডের ইতি কামনা করি এই কালোরাত্তিরে।