স্বাধীনতার ৫৩ বছর শুরু হতে চলেছে। অনেক আনন্দের একটি ব্যাপার । কিন্তু বাংলাদেশের কম পক্ষে আড়াই কোটি লোক জানেই না যে, ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস নামে আমাদের একটি দিবস আছে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস নামে নামে আমাদের গৌরবের একটি দিবস আছে। প্রতি দিন প্রতিরাতে নুন আনতে যাদের যাদের পান্তা ফুরায় তাদের আবার দিবস!
স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আর যা কিছু না হোক দেশে নেতা বেড়েছে। ব্যবসায়ী বেড়েছে । আর বেড়েছে মাস্তানী।
কাম-কাজ না করেও প্রচুর ইনকাম করার মহান উদ্দেশ্য নিয়েই মাস্তার শ্রেণীর উৎপত্তি। আমাদের গর্বিত মাস্তানদের রয়েছে নিজস্ব বাহিনী। তাদের আবার রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। যেমন ঠোট-কাটা মখলেছ, কান-কাটা আবুল, নাক কাটা মফিজ ইত্যাদি। মজার ব্যাপার হচ্ছে এদের আবার নাম ধরে ডাকা যাবে না। বলতে হবে,‘বড় ভাই’।
বড় ভাইয়ের থাকে বড় বড় উসকু-খুসকু চুলের বাহার। হাতে কয়েকটা আংটা। পকেটে বিদেশী মাল! তাকে দেখলেই সালাম দিতে হবে। নইলে খবর আছে! সমাজের মুরুব্বি হলেন তারা।
জমিজমা বেঁচে একটা ঘর তুলবেন। বড় ভাইকে টাকা দিতে হবে। নইলে ঘর তোলার সাধ চিরতরে মিটিয়ে দেবে। সব বেচে টেচে বাজারে ব্যবসার জন্য দোকান করবেন? বড় ভাইতে ভ্যাট দেবেন না তা কি হয়? পথের ফুটপাথ বন্ধ করে দিব্যি দোকান দিয়ে ব্যবসা করবেন! সেটাও সম্ভব । জনগণের রাস্তার মূল মালিকানাই যেন তাদের। আফসোস।
নির্বাচন এলে নেতারা/প্রার্থীরা এসে বড় ভাইয়ের পায়ে পড়েন। বড় ভাইয়ের সমর্থন না হলে নির্বাচনে জেতা এতো সোজা নয়। বড় ভাইয়েরা নেতাদের শক্তি। তারাই ভোট ব্যাংক। তাদের দোয়া ছাড়া চলবে না।
এই সব বড় ভাইয়ের বাবা-মা রা আছেন মহাসুখে। তাদের গুণধর পোলার কারণে তারা পথে ঘাটে হাজার কোটি সালাম পান। একটি শান্ত-শিষ্ট সুবোধ ছেলের বাপ হওয়ার চেয়ে একটি মাস্তান পোলার বাপ হওয়া কতইনা ভাগ্যের কথা!
বাংলার পল্লী বন্ধু ও সাবেক স্বৈর শাসক লেঃ জেঃ হোঃ মোঃ এরশাদ বাংলাদেশে ৮ টি প্রদেশ করার কথা ঘোষণা দিয়েছেন। বড়ই পুরাতন ঘোষণা ! সম্প্রতি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও মহান নেতার স্বপ্নের পুনঃপ্রকাশ ঘটেছে। বাংলাদেশের মাস্তান সম্প্রদায় অনেক আগেই দেশকে অনেকগুলো প্রদেশে ভাগ করে রেখেছে। একেক প্রদেশের মাস্তান আরেক প্রদেশে গিয়ে মাস্তানী করতে পারে না। ভিসা নিয়ে গেলেও না! ঢাকা শহরের রয়েছে অনেক গুলো প্রদেশ। গুলিস্তান প্রদেশের মাস্তান ফার্মগেট প্রদেশে গিয়ে মাতবরি ফলাতে পারেনা। আইন বড় কঠিন! এই আইন না মানলে বিরাট সমেস্যা!
আপনি কি জানেন যে, বাংলাদেশ থেকে কখনোই মাস্তানী দূর হবে না!
কারণ তাদের শিকড় অনেক গভীরে। আমরা চাইলেই শেকড় তুলতে পারবো না। কেউ কি জানেন যে, এই শিকড় কত গভীর??? যত দিন বাংলাদেশ আছে তত দিন মাস্তান থাকবে,থাকবে মাস্তানী।
আমি যদি গলা ফাটিয়ে বলি: দুর হ’ মাস্তানী ..।
তাহলে আমি নিজেই পৃথিবী থেকে দূর হয়ে যাব।
বড়ই আফসোস!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৫৩