মাঙ্কিপক্স খুবই একটা বিরল রোগ যা সাধারণত স্মলপক্স এর সমগোত্রিয় এবং একই রকম ছোয়াঁচে। এই রোগটি সাধারণত দেখা যায় পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকাতে, তবে সম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউকে, স্পেন সহ ঊরোপেও দেখা যাচ্ছে এই রোগ। খুব সম্প্রতি ইউএসএর ম্যাসেচুসেটস এই রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে একজন এবং কানাডাতে পাওয়া গেছে দুই জন রোগি। ব্যাপারটি খুবই আশংকাজনক।
ছবিসুত্র: Click This Link
মাঙ্কিপক্স প্রথম দেখা যায় ১৯৫৮ সালে যা গবেষণার জন্য সংরক্ষিত অঞ্চলে বসবাসরত বানরদের মধ্যে ছড়িয়ে পরে। তাই এর নামকরণ হয় মাঙ্কিপক্স। মানুষে মধ্যে প্রথম সংক্রমণ দেখা যায় ১৯৭০ সালে কঙ্গোতে। এর পর থেকেই সচরাচর সংক্রমন দেখা যেতে থাকে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতে। ইউএস সরকারের Centers for Disease Control and Prevention (CDC) মাঙ্কিপক্সের ব্যাপারে কিছু সতর্কতা জারি করেছে যা পাবেন নিচের লিংকে।
2022 United States Monkeypox Case
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার স্পেনের মাদ্রিদে আক্রান্ত ৭ জনকে সনাক্ত করা হয়েছে এবং আরও ২২ জনের পরীক্ষা চলমান। কানাডার পাবলিক হেল্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে যে কুইবেকের মন্ট্রিলে সন্দেহজনক ১৭ জনের পরীক্ষা নিরিক্ষা চলছে। এর আগে ২০২১ সালে ইউএসএতে নাইজেরিয়া ফেরত দুইজনকে সনাক্ত করেছিল CDC। খবরের লিংক নিচে দেওয়া হল।
What is monkeypox and its signs and symptoms?
সংক্রমণের আলামতসমূহ
এর আলামতসমূহ স্মলপক্সের মতই যেমন জ্বর, মাথা ব্যাথা, শরীর ব্যাথা, দূর্বলতা, যায়গায় যায়গায় ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। এর পর শরীরে র্যাশ ও দানা দেখা দেওয়া এবং তা বড় হয়ে ফুসকুড়ি বা ফোড়ায় পরিণত হয়। ফুসকুড়ি উঠতে পারে সারা শরীরে, হাত পায়ের তালুতে এমনকি মুখগহ্বরেও। ফোড়াগুলো পানিতে পূর্ণ থাকবে এবং এর চারদিকে লাল দাগ দেখা যেতে পারে।
সংক্রমণ পদ্ধতি
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস বডিফ্লুইড দ্বারা সংক্রমিত হয়ে থাকে যেমন কাশ, থুথু, রক্ত, লালা, চোখের পানি ইত্যাদি। কেটে যাওয়া বা ছড়ে যাওয়া চামড়া দিয়ে রক্তের মাধ্যমেও এটা শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তবে সাথারণত নাক বা মুখ দিয়েই শরীরে প্রবেশ করে। রোগি সুস্থ হওয়ার পর শুকিয়ে খসে পড়া চামড়ার গুড়ায় ভাইরাস থাকে এবং সেটা নিশ্বাসের সাথে ফুসফুসে চলে গেলেও সংক্রমণের সম্ভবনা থাকে। তবে এটা বায়ু বাহিত ভাইরাস না, তাই রোগির শ্বাস প্রশ্বাস এর মাধ্যমে ছড়ানোর কোন সম্ভবনা নাই।
খবরের লিংকটিতে এই রোগের আলামত কি বা কিভাবে ছড়ায় তার আরও বিস্তারিত পাবেন। তবে এই রোগ যে এশিয়াতেও ছড়িয়ে পরবে না তার কোন নিশ্চয়তা নাই। তাই সবাই এখন থেকেই সাবধান হই। মুখে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যাবহার করা এসব যেন চালিয়ে যাই। তাছাড়া কিছু স্বাস্থ সচেতনতা যেমন পাবলিক প্লেসে একই গ্লাসে যেন পানি না খাই, একই চামচ বা থালা-বাসন ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকি। যেখানে সেখানে কাশ বা থুূ না ফেলি বা সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। পরতপক্ষে সাথে একটা হান্ড স্যানিটাইজার ও ওয়েট টিস্যু রাখি। গণহারে ব্যাবহার এমন জিনিষপত্র যেমন কলম বা পেন্ষিল, ডোর নব, চেয়ার হ্যান্ডেল বা যে কোন কিছু তা ধরার আগে যেন ওয়েট টিস্যু দিয়ে মুছে নেই। একটা প্যান্ডেমিকের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে আর একটা চলে আসলে অর্থনিতীর যে কি অবস্থা হবে বুঝতেই পারছেন। এছাড়া নিজেকে সুস্থ রাখাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াবে। একটু বাড়তি সতর্কতা সবাই কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে আশা করি।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০২২ রাত ১১:৩১