১।
টাইট জিন্স পরিহিত এক নব্য হিজাবী রাস্তা পার হইতেছে মোহাম্মদপুরে, রিক্সাওয়ালারে বললাম, 'আস্তে যাও ওই আপারে পার হইতে দাও'। মামু কয়, 'দেইক্ষা তো মনে কয় গার পরে উডায় দি, শইল ঢাকনের খবর নাই মাতায় পদ্দা করতেছে। শালার মাতারীর দল, স্টাইল মারে।' বললাম, 'এইডা হইলো হিজাব মামু, আধুনিক পর্দা'। উত্তরে মামু যা কইলো, শুনে আমি হাসতে হাসতে রিক্সা দিয়ে পড়ে যাচ্ছিলাম। মামু কয়, 'এই রহম পদ্দা করা আর মাজারে বইস্যা গাঁজা টাইনা আল্লারে ডাকা সমান কতা। দুইডাই বাটপার।"
সমুদয় ছোট বইন/আফা/খালাম্মা, তোমরা যারা হিজাবি ফ্যাশন কইচ্ছো তাগো জনগন কি চক্ষে দেখতাছে বুইঝা লও। পাগড়ী পড়ে নামাজ পড়লে ৭০গুন বেশি ছওয়াব।তাই বলে লুংগি খুইলা মাথায় বাধতে বলে নাই।
২।
কয়েক মাস আগে ধানমন্ডির এক ছোট ভাই ফোন দিল আমাকে, বলল-
-ভাই কেমন আছেন ? এই প্রথম আপ্নারে ভুল প্রমান করতে পারছি, এই আনন্দে ফোন দিলাম। ভাই কি ব্যস্ত ?
- একটু ব্যস্ত, পরে কথা বলি। -
- না বলে শান্তি পাচ্ছি না ভাই, দুই মিনিট লাগবে, বলি ?
-আচ্ছা বল। এতো আনন্দিত মনে হচ্ছে কেন ?
- আপনার নায়ীকারে দেখলাম।
-কোন নায়িকা ?
- ঐযে ছোট্ট করে। আপনারে চুড়ান্ত অপমান করলো, হুমকি ধামকি দিলো লোকজন দিয়ে। তারপরেও আপনি বললেন যে, সে নাকি অসাধারন মেয়ে। অনেক ভালো ভালো কিছু শিখছে। অশালিন ড্রেস পরে না কখনও আর পরবেও না।
-আচ্ছা কি হইছে তাই বল, আমি ব্যস্ত।
- ভাই আপনি আসলে মানুষ চিনেননা। আপনি ভালোতো এইজন্য সবাইরে ভালো মনে করেন। আর মেয়ে মানুষ, ভাই খুব খারাপ।
- কি বলবা বল। এতো জ্ঞান দিতে হবে না।
-ভাই, আমি প্রথম থেকে কইছিলাম না যে, এই মেয়ে নাটক করতেছে। আমি একদিন কথা বলেই বুঝছি।
- আচ্ছা আমি রাখি। পরে কথা বলব।
- না না শোনেন, তারে দেখছি একটু আগে। ভাই, আপনি বিশ্বাস করবেন না। টাইট হট ড্রেস পরে যাইতেছে, আর ভাই খুব যে বলতেন বড় ওর্না ব্যবহার করে- সেতো এখন আর ওর্নাই পরে না। হা হা হা। বুঝলেন ভাই, বয়সে আপনার ছোট হতে পারি কিন্তু প্রচুর মেয়ে ঘাটছি এই বয়সে। আমি ওদের হাড়ে হাড়ে চিনি।
- আচ্ছা ঠিক আছে চিনতে থাকো। আমার বিশ্বাস আমার কাছেই থাক। আমার সাথে যতদিন ছিলো ভালই ছিলো, সেরকমই আমি মনে করে যাবো। এখন সে কি করলো, ন্যাংটা হয়ে চললও এটা আমার ম্যাথা ব্যাথা না। এইডা ওর নতুন বয় ফ্রেন্ডের ব্যাপার। রাখি, ভালো থেকো।
- ভাই কি রাগ করলেন ?
-নাহ, রাগের কি আছে।
জানিনা কেন, ফোন রাখার পরে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। কঠোর বিশ্বাস নষ্ট হলে মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
৩।
ইদানিং নিজের কিছু ব্যাপার লক্ষ্য করে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। আমি জানতাম যে আমি একবার মাথায় ঢুকালে সহজে কিছুই ভুলি না। কিন্তু অবাক হলাম গত মাসে ২৬ তারিখ মনে হল যে ১৬ তারিখে আমার খুব প্রিয় একজনকে জন্মদিনের উইশ করা হয়নি। আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগে তার সাথে যখন শেষ দেখা হয় তখন অনেক দুঃখী মনে বলেছিলো, 'তুমি তো আমাকে কয়েকদিন পরেই ভুলে যাবে, তাই না ? এইটাই আমার একমাত্র দুঃখ, এমন এক ছেলেকে মন প্রাণ উজাড় করে ভালবাসলাম, তার কাছ থেকে কখনও সাড়াতো পেলামই না উল্টো শুধু খারাপ ব্যাবহার। আমি তার ভিতরে একটুও জায়গা পেলাম না।' আমি বলেছিলাম, কে বলেছে আমি মনে রাখবো না, অবশ্যই মনে রাখবো। হয়তো তোমার সাথে কোন যোগাযোগ থাকবে না, কিন্তু তোমার কথা আমার সবসময় মনে থাকবে। কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি। একটা বারের জন্যও আমার মনে পড়লো না যে ১৬ই অক্টোবর তার জন্মদিন ছিলো। আমার ঠিক ৩ দিন আগেই তার। এভাবে ছোট খাটো অনেক কিছুই ভুলে যাচ্ছি ইদানিং আর নিজেই খুব অবাক হচ্ছি। হলটা কি আমার !!! বন্ধুদের দ্বারা আয়োজিত নিজের জন্মদিনের পার্টিতে চরম মজা করলাম কিন্তু সেদিনো একবারও মনে পড়েনি। আসলে সময় সব কিছু মুছে দেয় , সবকিছু।