somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সড়ক দুর্ঘটনাঃ সামান্য ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনে প্রতিবছর বেঁচে যেতে পারে হাজারো প্রাণ

১২ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর লক্ষ লোক মারা যায়। দুর্ঘটনায় হাত-পা বা শরীরের কোন অঙ্গহানী হয়ে অনেকেই বেঁচে থাকেন জড় পদার্থের মত। অথচ সড়ক ব্যবস্থাপনায়, বিশেষ করে Roadside Plantation এবং রাস্তার মোড়ের স্থাপনাগুলোর ব্যবস্থাপনায়, সামান্য পরিবর্তন এনে প্রতিবছর হাজারো প্রাণকে রক্ষা করা যেতে পারে, বাঁচানো যেতে পারে পঙ্গুত্বের হাত থেকে।

আমাদের দেশের হাই্ওয়েসহ আন্তজেলা, আন্ত থানা সংযোগ সড়কগুলোতে রয়েছে প্রচুর বাঁক। প্রতিবছর আমাদের দেশে যে প্রচুরসংখ্যক দুর্ঘটনাগুলো ঘটে তার বেশিরভাগই ঘটে রাস্তার বাঁকগুলোয়। বাঁকগুলোয় এত দুর্ঘটনাপ্রবণ হওয়ার প্রধান কারণ বাকগুলোয় একজন ড্রাইভারের ভিজিবিলিটি কমে আসে। পুরো বাঁকটা না ঘুরে সে দেখতে পারে না যে ওপাশ থেকে কোন যানবাহন আসছে কিনা। অথবা চালককে উঁকি মেরে ওপাশের যানবাহন দেখতে হয়।

হাইওয়েতে, বিশেষ করে রাজধানীর সাথে সংযোগ সড়কগুলোয় এ সমস্যা কিছুটা হলেও কম। কিন্তু জেলা-জেলা, জেলা-থানা, থানা-ইউনিয়ন সংযোগ সড়কগুলোয় এ সমস্যা খুবই প্রকট। কিন্তু এ সমস্যাটি সমাধান করতে তেমন কোন খরচ নেই বললেই চলে, প্রয়োজন কেবল ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা।

নিচের ছবিগুলো লক্ষ্য করুন (কোনরকমে আঁকা এবং চাইনিজ মোবাইলে তোলা:))।


একটা তিন রাস্তার মোড়।



এটা একটা বাঁক।



একটা আঁকাবাঁকা রাস্তা।

উপরের ছবিগুলোয় রাস্তার বাঁকগুলোতে কিছুটা অংশে আমি 'xxxxx' চিহ্ন দিয়ে রেখেছি। এই ক্রশচিহ্নিত এলাকায় গাছ বা অন্য কোন স্থাপনা থাকলে চালকদের ভিজিবিলিটি কমে আসে। ফলে এসব জায়গায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

আমি মনে করি শুধুমাত্র এটুকু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতিবছর কয়েক হাজার প্রাণ রক্ষা সম্ভব। কিন্তু আমাদের সড়ক ও জনপথ বিভাগ, এলজিইডি, বন বিভাগ এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। আমাদের এসব কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপার জানেন বলেই মনে করি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ না জানলেও রাস্তা বনায়ন কর্তৃপক্ষ (সামাজিক বনায়ন বিভাগ) অবশ্যই জানেন। কাজটি মোটেই দুরূহ নয়।

আমাদের সবুজ প্রয়োজন। প্রাণের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই প্রয়োজন। কিন্তু যে প্রাণের জন্য আমাদের সবুজ প্রয়োজন সে প্রাণের বিনিময়ে, হোক না সে কেবল একটাই, সবুজ আমরা চাই না। দ্বিতীয়ত, এতে এমন কতখানি রোডসাইড প্লানটেশন ধ্বংস হচ্ছে না যা আতংকজনক, বরং মৃত্যু বা পঙ্গুত্বগুলোই বেশি আতংকজনক। তৃতীয়ত, রাস্তার পাশের গাছ হল নেতাদের লুটেপুটে খাওয়ার জন্য, সাধারণ মানুষ কতখানি লাভবান হয় তা এদেশের প্রতিটা নাগরিকই জানে।

শুধু গাছ নয়, রাস্তার মোড়গুলোয় অবৈধ স্থাপনাগুলোও উচ্ছেদ প্রয়োজন। গাছের ফাঁকা দিয়ে হয়তো একটু আধটু দেখা যায়, ঘর-বাড়ী-দোকান-পাট থাকলে ভিজিবিলিটি শুণ্যে নেমে আসে। সুতরাং এ বিষয়টিকে যত দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষের নজরে আনা উচিত বলে মনে করি।

====================

ছাত্রজীবনেই এ চিন্তাটা আমার মাথায় এসেছিল (একাডেমিক কারণে অবশ্য)। তখন ভাবছিলাম পত্রিকায় লিখব। কিন্তু পত্রিকায় লিখতে চাইলেই তো লেখা যায় না! তাই লেখা হয়নি। চট্টগ্রামের দুর্ঘটনাটাই আজ এ লেখাটির কথা মনে করিয়ে দিল। কতগুলো শোকাহত পরিবারের সারা জীবনের কান্না হয়ে থাকল আজকের দুর্ঘটনাটি। ভাবতেই বিষাদ ছুঁয়ে যায়। যদিও কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে আমি জানি না, তবে এ কারণটি অনেক গুরুত্বের দাবিদার এবং এখনই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া জরুরী মনে করছি। ছাত্রজীবনেও যেমন ছিলাম, এখনও তেমন আছি। আপনারা যারা পত্রিকায় লেখালেখি করেন তারা এ ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে পত্রিকায় দু'কলম লিখলে খুশী হব।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাল মার্কস, পুঁজিবাদ ও বাংলাদেশের বাস্তবতা: কমিউনিজম কি এখনো প্রাসঙ্গিক?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:২৭


আজ ১৪ মার্চ, কাল মার্কসের মৃত্যুবার্ষিকী। দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক অনন্য স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর চিন্তাধারা শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির লক্ষ্যে গড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুরহা ধাওয়াইল্লেহ, আন্ডা ভোনছে…….

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:০০



২৪’এর জুলাই আগষ্টের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সুযোগ এনে দিতে পারতো দেশটিতে তা আর হতে দিলো কই কিছু কিছু রাজনীতিবিদ আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড: আরেফিন সিদ্দিকের সময় যারা ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়েছে!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:১৫






ড: আরেফিন সিদ্দিক (১৯৫৩-২০২৫ ) ২ মেয়াদের ৮ বছর ভিসি ছিলেন; উনার ছাত্রদের থেকে সরকারের উঁচু পদে চাকুরী ( ব্যুরোক্রেট, নন ক্যাডার, পলিসি-ম্যাকার ) করছে কমপক্ষ ২০ হাজার ছাত্র' এদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিনাকি আসলে কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:২৬



গেছদাদা্ মনে করেন পিনাকি আসলে ‘র’ এর এজেন্ট। কারণ ‘র’ তাকে হত্যা করে নাই।শেখ হাসিনা ভারতে গেছিলেন সেখান থেকে শক্তি সঞ্চয় করে আবার ক্ষমতা দখল করার জন্য। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্যসন্ত্রাস

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৫ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩



জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান যেমন আমাদের দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমস্যাগুলো উন্মোচিত করেছে, তেমনি এটি ভারতের বাংলাদেশ সংক্রান্ত কূটকৌশল, সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং এর ষড়যন্ত্রগুলোকে সম্পূর্ণ প্রকাশ্যে এনেছে। শত্রু যখন তার চেহারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×