somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার
আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

চিন্তাশক্তি একটু বদলান

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিবেক দিয়ে একটা মেয়ের পিরিয়ডের ব্যাথা বোঝার কোন সুযোগই নাই যেখানে পিরিয়ড নিয়ে অন্য কে কিছু বলারও সুযোগ থাকেনা।
একটা লোক যদি জানেও পিরিয়ড কি, কেন হয়। তবুও তাঁর জানার বুঝার এবং উপলব্ধি করার উপায় নেই এটার ব্যাথা কেমন। এই সময়ে একটা মেয়ে কিরকম মানসিক ও শারীরিক চাপের ভেতর দিয়ে যায়।
পাশ্চাত্যের সমাজ ব্যাবস্থার সাথে আমাদের সমাজ ব্যাবস্থার আমূল পার্থক্য বিদ্যমান। চোখ বুঝে পাশ্চাত্যের সবটুকুন হুবহু নিতে চাইলে খারাপটুকুনি আত্মস্থ হবে সবার আগে। আপনি আশা করেন আপনার বন্ধুকে আপনার পিরিয়ডের কথা বলছেন বলে শান্তি পাচ্ছেন অথচ আপনার ওই শান্তশিষ্ট বন্ধুতা হয়তো চুপে চুপে পাশবিক উত্তেজনা ফিল করছে, কারণ সে ছোটবেলা থেকে এটাকে অশ্লীল হিসাবেই জেনে আসছে।
পিরিয়ডের মত স্বাভাবিক ব্যাপারে পুরুষের অশ্লীল চিন্তাভাবনা তাঁর কৈশোর বয়সকালের শুরুতেই (৭ম বা ৮ম শ্রেণীতে থাকাকালীন) ভেঙ্গে দিতে হবে এবং সেই সাথে তাঁর ঘরের মা বোনদের থেকে জেনে নিবে।
আপনি এইটা প্রত্যাশা করতে পারেন না যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে একটা ছেলের চিন্তাভাবনা একেবারে গোরা থেকে আমূল বদলে যাবে।
ঘর থেকে শুরু করুন আজই, আপনার মেয়ে যদি সুফল নাও পায় হয়তো মেয়ের ঘরের নাতনি সুফলটা পাবে।
‪#‎এই‬ নিসংকোচ সাহসী উচ্চারন Rimana Shetu'র#
(আচ্ছা মাথা ব্যাথা আর পিরিয়ড দুইটা বিষয়ের মধ্যে কোনটা স্বাভাবিক? অবশ্যই পিরিয়ড। তাহলে যেটা অতি স্বাভাবিক সেটা কেন লজ্জার হবে? আমার তো মনে হয় একটা মেয়ের জীবনে সবচেয়ে সম্মান জনক ঘটনা হচ্ছে প্রথমবার "মা" হওয়া। আর পিরিয়ড হচ্ছে মা হওয়ার ক্ষমতা লাভ করা ।তাহলে এটা কেন লজ্জার হবে? আর ভাইয়া কিংবা বন্ধুগণ, যখন বুঝতেই পারছেন যে মেয়েটা কেন সহজ হতে পারছে না তখন কেন শুধু শুধু তাকে খোচাচ্ছেন বলুন তো? আপনিও জানেন সমস্যাটা কোথায়, সেও জানে। আপনি শুধু জানেন না যে কি পরিমান যন্ত্রণা একটা মেয়েকে সহ্য করতে হয় পিরিয়ড চলাকালীন আর মেয়েটা জানেনা যে তার এই লুকোচুরিই যত কমপ্লেক্সের মূল।
আপনি যদি বুঝতেন একটা মেয়ে পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে কতটা কষ্ট ভোগ করে তাহলে আপনার মুখ দিয়ে আর কথা বের হত না। আর এটা বোঝার জন্য শুধু বিবেক থাকা লাগে বোধ বুদ্ধি না।
আমার কোন এক সুশিক্ষিত আধুনিক বড় ভাই একদিন বলেছিল যে "হযরত হাওয়া গন্ধব ফল খেয়ে যে পাপ করেছিল তার শাস্তিই হচ্ছে পিরিয়ড যা পুরো নারীসমাজ কে ভোগ করতে হচ্ছে"
আমার তাকে ছাগলে তৃতীয় বাচ্ছা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় নি। সে জানেনা মাতৃগর্ভে তার ভ্রুন টা মাংশপিন্ডে পরিণত হয় পিরিয়ডের জন্যেই।
পিরিয়ড চলাকালীনসময়ে একটা মেয়ে পুরো দুনিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। হয়ত তাকে বাইরের দুনিয়ায় আসা লাগে কিন্তু তার মন দুনিয়ার বাইরেই থাকে। মনের উপর শরীরের উপর প্রচন্ড রকমের একটা চাপ তৈরী হয়, মেজাজ প্রচন্ড রকমের খিটখীটে হয়ে যায়। ঐ সময় আপনার ভাল ভাল কথাও তার কাছে অসহ্য লাগে। এটা তো গেল মানসিক অবস্থা, শারিরীক অবস্থা টা আরো খারাপ।
কারো কারো পেট সহ সারা শরীরে প্রচন্ড রকমের ব্যাথা হয়। আমার একজন রুমমেট আছে যে তার প্রতি পিরিয়ডেই অসহ্য পেটে ব্যাথায় চিৎকার করে কাঁদে। আপনি ভাবতে পারেন একটা মেয়ে কতটুকু যন্ত্রণা পেলে চিৎকার করে কাঁদতে পারে?
ক্লাস এইটের শেষের দিকে আমার প্রথম পিরিয়ড হয়। ওই সময় আমি প্রচন্ড রকমের চঞ্চল ছিলাম। আম্মুর কাছে প্রতিদিন বকা শুনতাম বাইরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য, খেলাধুলা করার জন্য। আমার স্পষ্ট মনে আছে সাতটা দিন আমি ঘরের বাইরে আসি নি। আমাকে আসতে দেওয়া হয় নি। আমি বাড়ির বাইরে বলছি না। বলছি ঘরের বাইরে। এমন কি বারান্দাতেও না।
ছেলে মানুষ তো দূরের কথা, আমাকে আমার আপন ভাই, আমার বাবার কাছেও আসতে দেয়া হয় নি। বলাবাহুল্য যে আমার পরিবার যথেষ্ট আধুনিক এবং শিক্ষিত। কিন্তু তারপরেও আমাকে এগুলো মানতে হয়েছে কারণ আমার নানী দাদীর বক্তব্য অগ্রাহ্য করার সাধ্য আমার মায়ের ছিল না।
আমার ডানা ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য এই সাতদিন যথেষ্ট ছিল। এরপর আমি আর কোনদিন উড়তে পারিনি, ওড়ার ইচ্ছেটাও হয় নি।
আমার মনে আছে । এই সাতদিনের পর আমি আর কখনো মাঠে খেলতে যায় নি। আমি সারাদিন ঘরের ভিতর বসে কাঁদতাম। আম্মু যখন খাবার দিতে আসত তখন প্রথম দুদিন খুব চিল্লাপাল্লা করেছিলাম। যখন দেখালাম আমার চিল্লাপাল্লায় কিছু আসবে যাবে না তখন মেনে নিয়েছিলাম।
এই ব্যাপারটায় আমাদের এত সংকোচ কেন জানেন? কারন সেই বাচ্চা বয়সে আমাদের মায়েরা , গুরুজনেরা আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে যে এটা একটা নিষিদ্ধ ব্যাপার। এটা কোনো ছেলের সাথে আলোচনা করা অশোভন। আচ্ছা যেটা অবসম্ভাভী এবং স্বাভাবিক সেটা অশোভন কেন হবে বলুন তো?
বন্ধুর "কি হইছে তোর" প্রশ্নের জবাবে আমি যদি সরাসরি বলতে পারতাম যে "দোস্ত, "i am having my period" তাহলে আমার বন্ধুটি আমাকে বিব্রত করার সুযোগ পেত না। কিন্তু একটা সত্যি ঢাকতে আমি যখন মিথ্যে বলছি তখনই সমস্যাটার উৎপত্তি।
আপনার পাশের মেয়েটা যে হতে পারে আপনার প্রেমিকা, বোন, বন্ধু বা সহকর্মী। তার উপর সহানুভূতিশীল হন। যখন আপনার প্রেমিকা আপনার উপর অকারণ রাগ করছে তখন উলটা রাগ না দেখিয়ে তাকে সময় দিন। আপনার বোনটা যখন মুখ গোমড়া করে ঘরে দরজা দিয়ে বসে থাকে তার মানে এই না যে সে প্রেমে পড়ছে বা something like that , তাকে সময় দিন।
যতই আধুনিকতার বুলি কপচায় কোন ছেলের সাথে খোলাখুলি পিরিয়ড নিয়ে আলোচনা করব এখনো এত আধুনিক হই নাই। এটা আমাদেরই দোষ। আপনার একটু সহানুভূতি আমাদের এই জটিল সময়টা কে সহজ করে দিতে পারে।
Be with us)
‪#‎ধর্মে‬ এ সস্পর্কে যা বলা আছে-
আয়িশা (রা) নিজেও এই কথা বলেছিলেন,
আমি শুয়ে থাকতাম যখন বিছানাতে তখন রাসূল (স) এসে আমার সামনেই নামাজ পড়তেন। (এমনকি পিরিয়ড চলার সময়ও)”… তিনি আরও
বলেছিলেন, আমার পিরিয়ড চলার সময়ও রাসূল (স) আমার কোলে শুয়ে কুরআন তিলাওয়াত করতেন।
আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত একটা হাদিস আছে, রাসুল বলেছেন, নারীদের’কে সুন্দর করে treat কর। নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে (আদমের) পাঁজরের হাড় থেকে। পাঁজরের (বাঁকা) হাড়কে সোজা করতে গেলে ভেঙে যাবে, বরং যেমন আছে তেমনই রেখে দেয়া উচিৎ। তাই নারীদের সাথে সুন্দর করে বিহেভ কর।
‪#‎অথচও‬-
সহজ এই সত্যগুলো মেনে নিতে কেন যেন বড় সংশয় আমাদের... বড় ভয়... পিরিয়ডের মত একটা খুব সহজ স্বাভাবিক অতি গুরুত্বপুর্ন প্রাকৃতিক নিয়মকে আমরা এই সমাজের বেশিরভাগ মানুষ, বিশেষ করে পুরুষেরা বিকৃত রসিকতা আর পরিহাসের দৃষ্টিতে দেখে থাকি।অতি মুক্তমনা বলে পরিচিত এক লেখক ও আমার এক ফেসবুক বোনের এই প্রকৃতিক অসুস্থ্যতা নিয়ে টিটকারি করেছিলেন।লজ্জা লাগে এদের কথা ভাবলে।
আমরাই বা কি করি?সুযোগ পেলেই টিটকারি দেই আমাদের অফিসের কলিগ,বন্ধু কিংবা অপরিচিতা নারীটিকে। কেন?যে পিরিয়ড না হলে জন্মাতো না কোন পুরুষ, সেই পিরিয়ডকে কেন এতো অশ্লীল টিটকারি? কবে সত্যিকারের মানুষ হবো আমরা? কবে পাল্টাবো ? আদৌ কি পাল্টাবো?
‪#‎চল‬ বদলাই

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×