somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার
আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

বেকার জীবন

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেকার প্রেমিক গুলোর প্রেম পাতিলের নিচে পোড়া লাগা কয়েকদানা ভাতের মত,শুকনো কড়কড়ে।ঝরঝরে সাদা ভাত গুলোর আড়ালে পোড়া ভাত গুলো যেমন শেষমেষ অনেকের মুখে রোচে না বেকার প্রেমিকের প্রেম ও শেষমেশ তার প্রেমিকার অন্তরের গহ্বরে রোচে না।তবুও বেচে থাকে তাদের ভালবাসা।
গভীর রাতে প্রেমিকা মিষ্টি গলায় আবদার জানায়,"চলনা কাল দুজন মিলে একটা মুভি দেখি,তারপর একসাথে লাঞ্চ করব''।
ভালোবাসার মানুষের মুখে এ কথা শুনে হাই প্রেসারের রোগীর মত প্রেমিকের ভালোবাসার রক্তচাপ ও বেড়ে যায় কিন্তু গভীর রাতে অন্ধকারে ম্যনিব্যাগ টায় হাত দিতেই বুকের ভেতর টা মোচড় দেয়।মাসের শেষ ,একশ টাকার একটা নোট আছে মাত্র।মেসের খাবার খরচ বাবদ দৈনিক বিল টা ত সকালেই মেটাতে হবে,ওইদিকে কানের কাছে প্রেমিকার সেই আবদার আবার ফিসফিস করে উঠে।সাধ থাকলেও সাধ্য যে নেই।
খুব করে প্রেমিকাকে বোঝায়,
"কাল যে আমার ইম্পরট্যান্ট একটা এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে,আর তাছাড়া প্রেজেন্টেশন ও ত আছে একটা।প্লিজ জান কাল না আরেকদিন যাই?"
বেকার প্রেমিকের নিখুদ অভিনয় প্রেমিকার চোখে ধরা পড়েনা।রাগে অভিমানে ফোন বন্ধ করে সে,মনে মনে আনরোমান্টিক বলে হাজারবার গালিও দিতে থাকে।
এইদিকে প্রেমিক তার অক্ষমতার খাতাটা খুলে বসে,হিসাব কষে সারারাত।কিন্তু সে হিসাব আর মেলাতে পারেনা।
কদিন পরেই ভালোবাসার মানুষ টার জন্মদিন।রিলেশনের পর দ্বীতিয় জন্মদিন।প্রথম জন্মদিন টা কোনরকম অজুহাত দিয়ে পার করেছে।দামী চাইনিজে প্রেমিকার বন্ধুবান্ধবের খাবার বিল মেটানো বা প্রেমিকাকে ভালোবাসার ক্ষুদ্র উপহার দেয়ার সামান্য সামর্থ্য ও ছিলনা তার।তাই এবারের জন্মদিন টা স্পেশাল হওয়া চাই।প্রতিদিন একটা সিগারেটের খরচ বাচায় বেকার প্রেমিক টা।কিছুদিন পর পর জমানো টাকা গুলা গুনে দেখে।শেষমেশ শেষ রক্ষা হবে ত?
তবে ভাগ্যদেবতা হয়ত প্রসন্ন হয়ে যায় বেকার প্রেমিকের অবুঝ মনটার ওপর।একটা শাড়ি কেনার টাকা জমেছে।কেনাকাটায় আনাড়ি যুবক প্রেমিকার উদ্দেশ্যে সবুজ রঙের জামদানি টা কিনে ফেলেছে,দোকানদার হয়ত বোকা পেয়ে দামটা কিছু বেশিই নিয়ে নেয়।প্রেমিকের মাথায় তখন সেসব নেই।সবুজ শাড়িটা আর এক তোড়া গোলাপ নিয়ে বারোটার মধ্যেই প্রেমিকার বাসার নিচে পৌছতে।প্রথম উইশ টা ত তাকেই করতে হবে।
প্রেমিকা জন্মদিনের উপহার পেয়ে খুশিতে খুব জোরে ভালোবাসি বলে জড়িয়ে ধরে,বেকার প্রেমিকের তখন এতদিন দুটোর জায়গায় একটা সিগারেট কম খাওয়ার দুক্ষ হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।হা করে প্রেমিকার হাসিহাসি মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকে।
বেকার প্রেমিকের গভীর রাতে প্রেমিকাকে বলা কথাগুলাও অনেক সময় অসমাপ্তই থেকে যায়।মোবাইল সিম কোম্পানী গুলোর ত বেকার যুবকদ্বয়ের জন্য বিশেষ কোন প্যাকেজ সুবিধা নেই তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে শেষবারের মত ভালোবাসি বলার আগেই লাইন টা কেটে যায়।মনের অনুভুতিগুলো প্রেমিকার কান পর্যন্ত পৌছানোর আগেই শেষ মুহুরতের সাইরেন বাজে।অসহায় চোখ গুলো মোবাইলের স্ক্রিনে অপলক তাকিয়ে থাকে অসমাপ্ত মন বিড়বিড় করে বলে "ভালোবাসি ভালোবাসি"।
বেকার প্রেমিক গুলার পকেট মাঝেমাঝে টানাপোড়নের মধ্যে গেলেও চোখের স্বপ্ন গুলো কিন্তু খুব অভিজাত আর আকাশচুম্বী।মনের মধ্যে ভালোবাসার বিশাল পসরা নিয়ে বসে থাকে তারা।প্রেমিকার হাতে হাত রেখে তাদের সেই লাল নীল সচ্ছল সংসারের স্বপ্ন দেখে বেকার যুবকটা।স্বপ্নের ছোট্ট ফ্ল্যাট টিতে সাউথফেসিং বারান্দায় প্রেমিকার খোলা চুলের গন্ধ নেয়ার স্বপ্ন দেখে এই বেকার ছেলেগুলা।ছুটির দিনে বউ কে নিয়ে অভিজাত রেস্তরাঁয় রাতের খাবার খাওয়ার কল্পনা করে মনে মনে।একদিন প্রেমিকার প্রতিটা অপূর্ণ চাওয়া পুরনের প্রতিজ্ঞা নেয় চুপেচুপে। এরা স্বপ্ন দেখে একদিন সব না পাওয়া কে কাটিয়ে উঠার,এরা কল্পনা করে একদিন সব অভাব কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে খুব করে সুখে থাকার।অভাব বড় ক্ষণস্থায়ী তবে ভালোবাসা যে শেষ হওয়ার নয়।


তথ্য-তাসনুভা রিয়া
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:০৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প বলেছে, বাংলাদেশ পুরোপুরি এনার্খীতে, তারা মাইনোরিটির উপর অত্যাচার করছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬



৩ দিন পরে আমেকিকার ভোট, সাড়ে ৬ কোটী মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে; ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫১ ভাগ। এই অবস্হায় সনাতনীদের দেওয়ালী উপক্ষে ট্রাম্প টুউট করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×