somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম ভালোলাগার সে ছেলেটি (সত্যি কাহিনি) :`> :`>

১২ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগের আগের কোন পোষ্টে এক ব্লগারকে কথা দিয়েছিলাম একদিন নিজের প্রথম ভালোলাগার কথা শেয়ার করব। বেশ সরল কাহিনী। কিন্তু কথা দিলে কথা রাখতে হয়। তাই প্রথমবারের মতো জীবনের প্রথম ভালোলাগাটা শেয়ার করব আপনাদের সাথে। ধুলো পরা সে স্মৃতির পাতাটা পরিষ্কার করে আপনাদেরকে দেখাব!

আমার নানু একবার কয়েকমাসের জন্যে আমাদের বাড়িতে বেড়াতেন আসলেন। আমার নানু রিটায়ার্ড প্রফেসর ছিলেন, এবং পাঠ্যবই লিখেছেন। আমি এবং আমার নানু নিয়ম করে সকালে এবং বিকালে হাটতে যেতাম। একদিনের কথা বৈকালিক ভ্রমন হচ্ছে নানা নাতনির। এমন সময় দুটো তরুণ আমাদের পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিল। আমার নানু ওদেরকে আটকাল, ওরা অবাক, আমিও। তারপরে ওদের হাতের বই নিয়ে (হয়ত কোচিং এ যাচ্ছিল) নাড়াচাড়া করতে লাগলেন। ওদেরকে বললেন, এই বই ওনার বন্ধুর লেখা। আমার নানু আবার যখন গল্প করতেন সাল, জায়গা, কোন বিশেষ মানুষ তার ছাত্র ছিলেন সবকিছু বলতেন। বাড়িতেই আমরা বোর হয়ে যেতাম কিন্তু ওনার সামনে হাসিমুখ করে রাখতাম যাতে কষ্ট না পায়। ঠিক আছে বাড়ির মানুষ না হয় সহ্য করে, কিন্তু অপরিচিত দুই ছেলে কেন করবে? আমি এমবারেসড, আটকালে ঝাড়ি খাব। কি করি?

অবাক হয়ে দেখলাম ঐ দুটো ছেলের মধ্যে একটা ছেলে শ্যামলা, গভীর চোখে চশমা পরা খুব মজা নিয়ে হাসি চাপতে চাপতে আমার নানুর লেকচার শুনছে। আমার যে কি ভালো লেগেছিল সেই সরল হাসি!! আমি ওর দিয়ে তাকিয়ে ইশারায় বললাম যেন কিছু মনে না করে, ও তাকিয়ে কাঁধ ঝাকিয়ে ইশারা করল কোন ব্যাপার না। আর সেভেন এ পড়া সদ্য কিশোরি আমি অন্য এক ভালো লাগার সম্মুখীন হলাম। একদিকে নানু লেকচার দিচ্ছে অন্যদিকে আমরা দুজনে ইশারায় হেসে হেসে কথা বলছি। ছেলেটা একটু পরে পরে বলছে জ্বী দাদু, জ্বী দাদু! আমার সেটাও খুব ভালো লেগেছিল। বড়দের সম্মান দিতে পারা মানুষদের আমি খুব পছন্দ করি। এখানে বলে রাখা ভাল আমি প্রচন্ড লাজুক ছিলাম বিশেষ করে ছেলেদের ব্যাপারে। কিন্তু ওর সাথে প্রথমেই এত সহজে ফ্রি হলাম কিকরে কে জানে। হয়তো ওর প্রচন্ড সরলতার কারনেই।

নানুর লেকচার শেষ হল, ওরা বিদায় নিল। ছেলেটা যেতে যেতে যে সুন্দর হাসি দিল তা বর্ণনা করা সম্ভব না। বাড়ি আসলাম। মা আমাকে জিগ্যেস করলো হাসছিস কেন একা একা? আমি বললাম নানু কিরকম অপরিচিত দুই ছেলেকে লেকচার দিল! মাও হেসে ফেললেন আব্বুনা! যাই হোক, আমার হাসির কারন নানু না ঐ ছেলেটা ছিল। ওর সাথে মজার ইশারাবাজিটা মনে করে খিলখিল করে হেসে উঠছিলাম একটু পরে পরে। এত জীবন্ত ছিল স্মৃতিটা! শুধু ৫/১০ মিনিটই তো ছিল। কিন্তু বারবার মনের আয়নায় রিপিট দিয়ে দেখছিলাম।

তারপরে যখনই বাইরে যেতাম খুজতাম ছেলেটাকে। ছোট শহর, কোন মার্কেটেও তো আবার দেখা হতে পারে। কিন্তু হয়নি আর দেখা। কয়েক মাস পরেই আমরা অন্য জায়গায় বদলি হয়ে চলে যাই।

এখন আসল মজার ব্যাপার হলো আমি বুঝতেও পারিনি ছেলেটাকে আমার ভালো লাগত। ভালো লাগা কি বুঝতামই না। নিজেকে এতো প্রশ্নও করিনি কেন এমন আনচান করছে মন? অনেকদিন পরে কানাডায় তখন ১১/১২ এ পড়ি আমাকে এক বান্ধবী প্রথম প্রেমের কথা জিগ্যেস করল। আমি কখনো প্রেমে পরিনি বলতে যাব কিন্তু বিজলি চমকানোর মতো করে ঐ ছেলেটার মুখ মনে পরল! তখনকার অনুভূতি বিশ্লেষন করে বুঝলাম ভালো লেগেছিল প্রথম কাউকে। থতমত খেলাম নিজের মধ্যে। ইস! কি লজ্জার ব্যাপার! এত ছোট বয়সে এসব ভেবেছিলাম? হাহা।

তবে এখনো শ্যামলা, বড় চোখের, সরল হাসির ছেলেদের অনেক ভালো লাগে। একসময় ভাবতাম বিয়ে করলে শ্যামলা ছেলেই করব। কিন্তু এখন একটা সারটেইন ম্যাচুরিটি থেকে বুঝি চেহারা না মনটাই আসল। ভাললাগা চেহারা, হাসি দেখে হতে পারে কিন্তু ভালোবাসার সময় এসব মনে করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।

তো আমার কাহিনী ফুরালো, নটে গাছটি মুরোল। অন্য ব্লগারেও কমেন্ট বক্সে বলা শুরু করে দিন, আমি যখন শেয়ার করেছি আপনাদেরও করা উচিৎ। :)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৭
৪৮টি মন্তব্য ৪৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×