আমি বিভিন্ন ধরনের গান শুনেতে পছন্দ করি। রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগিতী, লালন,ছবির গান আর ব্যান্ড তো আছেই। অন্য গানগুলো শোনা সমস্যা না হলেও ব্যান্ডের গান শুনলে গুরুজনেরনা ভুরু কুচকে তাকাত। নিষিদ্ধ কিছুর প্রতি আগ্রহ থেকেই আরো বেশি করে ব্যান্ড গানের অনুরুক্ত হওয়া। তো আমার সেরা কিছু ব্যান্ড গায়ক, গানের লিস্ট এবং মজার কিছু কাহিনী নিয়ে হাজির হলাম।
১) জেমস: তো এনাকে দেখলেই আমার দাদী ঘিন্নায় মুখ বাকাতেন। আর মাঝে মাঝে রবীন্দ্রসংগীত গুনগুন করতে থাকা আমার মাও। ও নাকি অনেক দিন ধরে গোসল করে না। লম্বা চুল!! ভুরুতে দুল। জেমসের নাম নেওয়া হারাম ছিল আমার আর আমার ২ বছরের বড় কাজিন ব্রাদারের। কিন্তু ওর গানগুলো তো জোস। শুনতেই হয়। তো আমার ভাই নিজের বাসা থেকে লুকিয়ে রেডিও আনত আমাদের (দাদুর) বাসায়। সেই রেডিও লুকিয়ে ড্রয়িংরুমে ট্রান্সফার হতো। আর দরজা বন্ধ করে আস্তে ভলিউমে রেডিওর কাছে কান লাগিয়ে ভাই বোনে মিলে গান শুনতাম। কিন্তু সেই লো ভলিউমও মা, দাদীর কানে চলে যেত আর রেডিও বাজেআপ্ত হত। এরপরে পানি অনেক দুর গড়িয়েছে জেমস বলিউডে গান গায় সেটা আবার টপ টেন চার্টে জায়গা করে নেয়। তখন বড়রা বুক ফুলিয়ে তার গান শোনে আর বলে সোনার ছেলে! আমি আর আমার ভাইকে পায় কে তখন? জোরে জোরে জেমসের গান শোনা আর বড়দের দিকে তাকিয়ে বিশ্বজয়ের হাসি দেওয়া। ওর পছন্দের কটি গান,
লাস্টলি যে গান শুনলে বড়রা সবচেয়ে রাগ করতেন।
হাসান: তো এই জনাবের দোষ ছিল লম্বা চুলের সাথে সাথে মেয়েদের মতো গলা হওয়া। এনাকে ছেলে মেয়ের মাঝামাঝি ভেবে বড়রা আমাদের দুরে রাখার চেষ্টা করতেন। কিন্তু ওর প্যাশনেট গলা, স্টাইলের ভক্ত ছিলাম আমরা। সবস্তরে বিখ্যাত হওয়া ওর একটা গান।
পাড়ায় কোন বড় ভাই ছেকা খেলে তার সামনে এই গান বাজানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালাত আমার দুষ্টু ভাইটা।
মাইলস: এরা অবশ্য সবার প্রিয় ছিল। আট থেকে আশির পছন্দ।
সেই লেভেলের গান!! কি যাদুকরি মিউজিক! মানুষের মনের গভীরের প্রিয়জন হারানোর ব্যাথা উঠে আসত এ গানে।
এই গান শুনলে মতো হত আমার নাম নীলা হলো না কেন? আমার নামটা অানকমন এবং এই গানে কখনো কোন মিউজিক হয়নি। এই দুঃখ কোথায় রাখি? আফসোস।
আইয়ুব বাচ্চু: এনার আর জেমসের একই স্ট্যাটাস ছিল বাড়িতে। জেমস বলিউডের গান গেয়ে ইমেজ ঠিক করতে পেরেছিলেন, ইনি পারেননি। ওনাকে টিভিতে দেখলেই আমার দাদীর কমেন্ট, "এইসব ছেলেপেলেকে দেখলেই খারাপ লাগে। লেখাপড়ার নাম নেই, খালি গান গেয়ে বেড়ায় নিজে বিগড়ায়, আর এখন আমাদের বাচ্চাগুলোকে নষ্ট করছে। চ্যানেল জলদি চেন্জ কর।" হা হা
মেহরীন: এনাকে ব্যান্ডের না বলে ব্যাতিক্রমধর্মী বলছি। মেয়ে হয়েও পুরুষের মতো চুল, পোশাক!! এধরনের মেয়েরা দেশের, দশের শত্রু। না না আমার না আমার মায়ের ভাবনা। কিন্তু ওর কিছু গান শুনলে মনে হয় আমার মনের কথা নিয়ে লিখেছে। আমি গান গাইতে পারলে এরকম গানই গাইতাম। আর গলাটাও বাংলাদেশে ওয়ান পিস। আসলেই ব্যাতিক্রমধর্মী।
সত্যিই রাজকুমার কবে আসবে? কবে হবে দেখা তোমার আমার???
আরও অনেক গান মাথায় গিজগিজ করছে। পরে দেব। এগুলো কেমন লাগল?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৬ রাত ১০:৫৭