সে এক বিষাদে মাখা কাব্য
ছেলেটি সমুদ্রের ঢেউ গুনত
একদিন আনমনা অজানায় নদীর ঢেউ গুনা শুরু করে
সে বুঝত নদীর জোয়ারভাটা
নদীর প্রবলতা, দিগন্তব্যাপী পরিসীমা
নদী তার জীবন স্পন্দন, তার বেচে থাকার অনুভূতি
দুজনা রজনী আধারে চিলেকোঠায় দাঁড়িয়ে বলত
চল তারা গুনি
সেদিন আমি অগণিত তারা গুনি
হঠাৎ তাকে জিজ্ঞাসা করিলাম-
কিরে কয়টা তারা গুনেছিস?
সে বলল একটাও না- আমি জানতে চাইলাম কেনো?
অপলক নেত্রে তাকিয়ে তোকে দেখেছি
আমি ভাল করে তাকিয়ে দেখি
নদীর গাল বেয়ে ঝরে পরছে কষ্টের সমুদ্র
আমি প্রশ্ন ছুড়ি, কিরে কাঁদিস কেনো?
সেদিন সে দৌড়ে চলে গেল
ধীরেধীরে দিন বদলে একএকটি রাত্রি আসে
নদীর প্রবলতা কমে যায়, পানিও শুকিয়ে যায়
নদীটি আর আগের মত খরস্রোতা নেই
সে এক নি:সাড় নিশ্চুপ
সে আগের মত খিলখিল করে হাসেনা কথার বাণ ছুড়েনা
মাঝেমধ্যে একলা বসে মুখচেপে কাদে
হঠাৎ একদিন কাদার মর্ম জানান দিয়ে সে সমাধিসৌধে আশ্রয় নেয়
সেদিন আমার চোখের রেটিনা প্রচণ্ড তৃষ্ণার্ত হয়
উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু খুঁজে আমি কোথাও জল পাইনি।
আমি এখন রাত্রিক্লান্তা মুখ চেপে কাদি
উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখি শূন্য চিলেকোঠা
ধীরপায়ে এগিয়ে যাই সেথায় দাঁড়িয়ে থাকি, কতক্ষণ, নিজেও জানিনা
বুকটা ভরে যায় কষ্টের হীম বাতাসে চোখে মৃত্যুর নীল আতঙ্ক
আমি ছটফট করে আর্তনাদ করি যা মেঘমালায় হারিয়ে যায়
তারকা ঝলসে উঠে.........
কষ্টের তীব্রতায় অন্ধকার আকাশও কালো মেঘে ছেয়ে যায়
আমি সে তিমিরময়ি আধার উপেক্ষা করি
নাগরীর পথপ্রান্তরে ছুটি, হয়ত সে সামনেই দাঁড়িয়ে।
আমি হিমালয়ে ছুটে যাই
হয়ত সেথায় শুকনো তুষারে তার পদচিহ্ন আছে
আমি মরুর বুকে নীলসমুদ্র খুঁজি
আকাশের দিকে তাকিয়ে ক্লান্ত চোখ ভিজাই
আবার কখনো রক্তস্রোতে হাবুডুবু খাই
কাটাবনে দৌড়াতে গিয়ে নিজেকে করি ছিন্নক্ষত
আমি সমুদ্রতটে দাঁড়িয়ে অস্তাচল দেখ
ঘুমহীন রাত পার করে পাহাড়ের কোণে লাল সূর্য দেখি
আমি জানিনা কিসের আশায় এ বেচে থাকা
কিসের আশায় এ অবেলায় দিনপাত
আমি মৃত্যুকামী তবুও মৃত্যুর বিঘত অপেক্ষা
আমি আজও বেচে আছি, বদলে গেছি অনুভূতিহীন হৃদয়ে
রোগ, তাপ, শোক কিছুই আমায় স্পর্শ করেনা
আমার নর্মল হাসিও আজ-কাল বিরল
আমি নিজেও জানিনা কি জন্য এ বেচে থাকা
হয়ত তা মৃত্যুর প্রয়োজনে.........
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:৩৫