আমার সমাধিসৌধে সে দাঁড়িয়ে
অঝরে কেঁদে চলছে
গাল বেয়ে গড়িয়ে পরছে অশ্রু,বিজন ঘাসে।
তার দুটি চোখ অসহায়,ক্লান্ত
নিশ্বাস গুলো দীর্ঘ
তার দুটি হাত রিক্ত
তীব্র ব্যাকুলতায় ছুঁতে চায় আমায়
সমাধি শৃঙ্গের মাটি বাঁধা দিয়ে যায়।
চারদিকে নীরব আঁধার
আকাশ ভরা বরফের কুচি
অদূরে ল্যামপোস্টের আলো
ঝিঁঝিঁ পোকার দল ডেকে ডেকে যায়
জোনাকিরা আলো জ্বেলে উড়ে বেরায়
সামনেই কুয়াশার দেয়াল
পৌষের শীতল বাতাস ছুটে
দুলে উঠে বনঝাউ
কেপে উঠে হাড়
খটখট করে দাত
কি অসহায় তার চাহুনি।
কবর প্রহরী তাকে ফিরে যেতে তাড়া দেয়
সে ঘুরে দাঁড়ায় আবারো পিছ ফিরে তাকায়
ঠিক এভাবেই তাকাত গত শ্রাবণের শেষে
নিরাক পরা দুপুরে কলেজ ফিরতি পথে।
হঠাৎ হু হু করে কেঁদে উঠে সে
দৌড়ে বেরিয়ে যায়
সমাধিভূমি খা খা করে...
আমি বড়ই বিশ্বাসঘাতক
ভালবেসেছিলাম সারা জীবন পাশে থাকার প্রতিজ্ঞায়
কিন্তু আমার নিঃশ্বাস আমার জীবনের হেয়ালি
আমি অবিশ্বাসী
কোনো কোমল হৃদয়ের বিশ্বাসচূর্ণকারী।
আমি নীরব,নিথর
আমার আর্তনাদ গগণ বিদারক
আমার অস্তিত্বে দেহের হাড়
যাতে রক্ত-মাংসের বালাই নেই
ক্ষুদা তৃষ্ণার চাহিদা নেই
নেই কোনো জরুরত।
আমি ঠিক এমনই আছি
বছর পেরিয়ে
যা মাটির বুকে গর্ব করে হেটেছি
সে মাটিই আমায় ক্ষয়ে করেছে
এ হয়ত খোদার নিষ্ঠুর বিচার।
আমি মাটি চাপা পরে আছি
কিন্তু দেখছি এ জগতের সব
তোমাদের হাসিকান্না
তোমাদের বহু অজানা
অন্ধকারে রহস্যের তলানি
হয়ত বেঁচে থাকা সময়ের অপূর্ণতা
মরণের ডাকে পূর্ণতা পেয়েছে।
আমি দেখি সে প্রিয়তমেষুকে
যে আমার জন্য প্রতি রজনীতে কাঁদে
গভীর রাতে আচমকা ঘুম ভেঙ্গে গেলে
হাতড়ে হাতড়ে খুঁজে আমায়
ঠিকে তার পাশে
যেথায় আমি শুয়েছি ভালবাসার ফুলশয্যায়।
কিন্তু আমি নেই
হারিয়েছি চিরজীবনের তরে
মনে পরে,কেঁদে উঠে সে ডুকরে ডুকরে
কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যায়
মৃত্যুর অপেক্ষায়
আরেকটি নতুন সকালে
ঘুম ভেঙ্গে ডাকতে চায় আমায়
আমি নেই বুক ভরা শ্বাস নেয়
ব্যেস্ত হয়ে যায় জীবনের ছায়ায়
শেষবিকেলে চিলেকোঠায় বসে
আপনমনে কথা বলে আমার সাথে
দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে অশ্রুজলে।
এভাবেই কেটে যায় দিন রাত
ঐ তামাটে নীলাভ আকাশে
সূর্য হাসে,মেঘ ভাসে
চাঁদ উঠে,তারকা ঝরে পরে
এভাবেই শত সহস্র বছর
একই নিয়মে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৭