প্রথমে পিতা অত:পর পুত্র যাঁদের মহান মেহনত কঠিন কষ্ট, মুজাহাদা,স্রষ্টার জন্য উৎসর্গ চোখের পানি যার রূপের রূপকার তাবলীগ।
ইলিয়াস (রহ)শত কষ্ট, ক্লেশ ও মুজাহাদার দরুন যেই মেহনত চালু করেছিলেন,সেই অহরান পাহাড়ের ঝর্ণা আজ নদী-নালা,খালবিল পেরিয়ে মহাসমুদ্রে রূপ নিয়েছে।
যেসব মানুষ একদিন ছবি অংকন করতো, গান গাইত, শত জুলুম ব্যভিচারে লিপ্ত ছিল, ভয়ংকর থেকে অতী ভয়ংকর পাপিষ্ঠ সন্ত্রাসী ছিল তারা যখন পাপড়ি পাতার মহান বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে তখন তারা হয়েছে সোনার মানব।তারা আয়ত্ত করতে চায় বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ চরিত্র মহানবী (স) ও সাহাবাওয়ালা চরিত।
বর্তমান সারা বিশ্বে তাবলীগ জামাত ইসলামী নবজাগরণ সৃষ্টি করেছে।সোজাসাপ্টা কিছু উদাহরণ দেই।ইংল্যান্ডে গত কয়েক বছর পূর্বে হাতে গোণা কয়েকটিমাত্র মাদ্রাসা ছিল যা এখন হাজার পেরিয়েছে।বর্তমান বিশ্বের তিনজন নামজাদা খেলোয়াড় দক্ষিণ আফ্রিকার যাদের ধর্ম ইসলাম এবং অধিনায়ক হাশিম আমলা তাবলীগ পন্থী। কিছুদিন পূর্বেও কেউ ভাবতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট টিমে কোম মুসলিম খেলোয়াড়ের সুযোগ হবে অথচ এখন উসমান খাজা একজন নিয়মিত খেলোয়াড়।
"ইসলাম শান্তির ধর্ম"
বাংলার ইজতেমার কথা ভাবুন ;লক্ষলক্ষ মানুষ যেথায় একত্রিত হয় এবং অবস্থান করে, সেথায় নাই কোন গোলযোগ, মারামারি। চারদিক সুভাষিত শান্তির বাতাসে।মন্ত্রের মুগ্ধতায় চলছে সব।
প্রথমে তিনদিন তারপর একচিল্লা,তিনচিল্লা এভাবে সারাটা জীবম কাটিয়ে দিচ্ছে দ্বীনের খেদমতে,মানুষকে ধর্মের আহবানে।মা-বাবা,স্ত্রী-সন্তান, আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে যাযাবরের মতো কখনো দেশের মাটিতে কখনো অদূর দিগন্তে পরদেশে।কখন জীবনের হুমকি কখনোবা হিংস্র আক্রমণের কড়াল থাবায় জর্জরিত হয়ে দুফোটা চোখের নোনাজল সে জমিন ভিজিয়ে আসে;যে অশ্রু ধীরেধীরে সবুজে সিক্ততা দেয়
বিরান ভূমিকে।জীবন কুরবান করে তাদের শেষ ইচ্ছে প্রতিটি ঘড়ের কার্ণিশে পৌঁছে যাক "আল্লাহ এক,মুহাম্মদ (স) আল্লাহ্ রাসূল"।
খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী, শাহ জালাল,শাহ পরান যাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে জন্মগত ভাবে ইসলামের সুশীতল ছায়া পেয়েছি ;জন্মের পর থেকে পেয়েছি ইসলামী শিক্ষা।
আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত যেথায় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার কারণে সমাজ থেকে বয়কট করা হয়,জীবিত কবর দেওয়া হয়,গুজরাটের বাতাসে আজো ভেসে বেড়ায় মুসলিম লাশের পোড়া গন্ধ। কাশ্মীরে প্রতিনিয়তি ধর্ষিত হচ্ছে শতশত মা-বোন;শহীদ হচ্ছে শিশু থেকে বৃদ্ধ নির্মম ভাবে।চীন ও বার্মায় চলমান মুসলিম ইতিহাসের রক্তক্ষরণ শোকের কলিতেই গাধা থাকবে।
ফেনার কেশরে ফুসে উঠা বিধর্মীদের ঈপ্সিত কঠিন রূঢ় নির্যাতন ও অপমান মুখ বুজে,দাতেদাত চেপে রেখে অটল ঈমানের পথে পরদেশি মুসলিম।
বিপরীতে আমরা হারিয়ে বসেছি ঈমানের অহংকার;হারাতে বসেছি ধর্মের আচল।আঘাতে ছিন্নক্ষত জরাজীর্ণ আমরা।
ধর্মের বাণীতে লিপিবদ্ধ "দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ "।
তাবলীগ কখনো জঙ্গি সৃষ্টি করেনা কখনো দেশদ্রোহীতা শিক্ষা দেয়না।
তবে হে,আমি তাবলীগ করবো তাবলীগের আইন মেনে শরিয়তে যেভাবে বলা আছে সেভাবে তাবলীগ করতে হবে।তাবলীগ মানে কিন্তু মসজিদে পরে থাকা আর ফাজায়েলে আমল পড়া নয়।তাবলীগ মানুষকে ধর্মের দিকে এক আল্লাহ্ পাণে আহবান করার নাম।
নিঃসন্দেহে ফাজায়েলে আমলে পূর্ণ জীবনধারা বর্ণিত নেই।কোনকালে এক মজলিসে শ্রবণ করা বয়ান পরবর্তীতে অন্যকোন মজলিসে পেশ করতে গিয়ে চৌদ্দশ বছর আগের ইতিহাস তিনহাজার বছর আগের রূপকথার রূপ দিয়ে মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো কঠিন গোনাহ। প্রবীণরা কখনোই ফাজায়েলে আমলের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকতে বলেনি। ধর্মীয় পুস্তক সহ সকল জ্ঞান অর্জন করা প্রয়োজন। আলেম অথবা হাফেজ হতেই হবে তা কিন্তু নয়।আমি ডাক্তার হবো নিয়ত
হতে হবে এক আল্লাহ্ জন্য মানুষের সেবা করবো। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এমন নিয়ত থাকবে আল্লাহতালার জন্য মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে।
বর্তমান শিক্ষার বড়ই অভাব।শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। খুব অল্প সংখ্যক মানুষি আছে আমাদের যারা ভিনদেশে গিয়ে সাবলীল ভাষায় মানুষকে আল্লাহ্ পথে ডাকতে পারে।অথচ ধরণীতল তাকিয়ে আমাদের দিকে।
তাবলীগ জামাতের একটি তত্ত্ব আছে "আমিরের নির্দেশ মান্য করা"।
ফ্রান্সের শার্লি হোবদা,হিন্দুস্থানের মুম্বাই,বাংলার গুলশানে আক্রমণকারী কেউ কি তাবলীগের সাথে জড়িত অথবা তারা মুসলিম হয়ে থাকলে কোন আমিরের নির্দেশে আক্রমণ পরিচালনা করছে।আমরা সবাই অবগত ;ধর্মের মুখোশ পরে যারা এসব হীন সন্ত্রাসী কর্ম করছে তাদের আমির খোদ আইএস অথবা আইএস এর মতো কোন সংগঠন যারা বিধর্মীদের মদদে ইসলামকে ভূপৃষ্ঠ থেকে মুছে দিতে চায়।যেই চেষ্টা করে আসছে তাদেরি পূর্বপুরুষরা ইসলামধর্ম আত্মপ্রকাশের পূর্ব থেকে।
মহান আল্লাহ্ পৃথিবীজুড়ে এমন এক মেহনত চালু করেছেন এবং এমন ভাবে এ মেহনত কবুল করেছেন যার সফলতা যার আলো প্রতিটি ঘরকে উদ্ভাসিত করে চলছে।সেই মেহনতের নাম তাবলীগী মেহনত।
ইনশাআল্লাহ্ আর বেশিদিন বাকি নেই যেদিন এই মেহনতের উসিলায় ইসলাম আবারো দেখা পাবে সোনালি সূর্য যা গলে পড়বে সবুজের মাঝে।পৃথিবী আবারো দেখবে মক্কা বিজয়ে মহানবী (স)এর উদারতা, শান্তির বাতাস প্রবাহিত হবে প্রতিটি ঘরের জানালায়।চারদিক ধ্বনিত হবে "আল্লাহ্ এক মুহাম্মদ (স)আল্লাহ্ রাসূল।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৪১