কি করছ? ধোয়া নিচ্ছি...আচ্ছা..কোনো ভাবান্তর নেই মিলির মনে। রিমি একটু বেশিই ধোয়া নেয় ইদানিং। মিলি নিশ্চিন্ত মনে পড়ার ঘরে চলে যায়। টেবিলের বইয়ের তাকগুলো ঝকঝকে..সেখানে অনেক বই। রিমির ধোয়া গ্রহণ এখন মিলির কাছে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। সে একা কি করবে? সবাই ধোয়া নেয়। এইতো গত রাতে আম্মু-আব্বু চুরি চুরি একসংগে ধোয়া নিচ্ছিল, সে তা দেখেছে। মিলির কি করার অাছে? বাবা তো ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমেই কোটিপতি। যখন যা দরকার বাবা দেন। ইয়াবার ধোয়া তো বাবার কাছে অক্সিজেন। শত শত নেতাকর্মী টাকা দিয়ে পোষ মানিয়ে রেখেছেন তিনি। মাও মানিয়ে নিয়েছেন ব্যাপারটা। তাদের শরীর তো খারাপ হয় না কখনেো। মিলি শুরু করেছে। এটা তো করবেই। সবাই কি আর মিলি হতে পারে? মিলি ধোয়া না নিলেও তার আছে টাকার নেশা। বন্ধুকে নিয়ে ব্যাপক টাকা উড়ায় সে। ভাগ্যিস বন্ধুটা ইয়াবা আসক্ত নয়। তাহলে মিলিও হতো ইয়াবাখোর।
আর ভাবতে পারে না মিলি।
শরীর মোড়াতে মোড়াতে রিমি পড়ার ঘরে ঢুকেছে। ধোয়া নেয়ার পর ফুরফুরে মেজাজ তার। বুবুকে জড়িয়ে ধরে রিমি। বাবাকে বলিস না প্লিজ...বাবা জানে না মনে করেছ? মা যা জানেন তা বাবাও জানেন। রিমির মনে কোনো ভাবান্তর নেই...চেয়ারটা টেনে নেয়। পড়ায় মন দিয়েছে সে।
মিলির অবাক লাগে। ইয়াবার ধোয়া নিয়ে ইদানিং রিমি সারারাত পড়তে শুরু করেছে। শুধু তাকিয়ে থাকে বইয়ের দিকে। আসলে সে কি পড়ে না অন্য কিছু ভাবে..বিষয়টি খেয়াল করে মিলি।
রাত তিনটা বেজে গেছে। চেয়ার থেকে ওঠার নাম নেই রিমির। সে খেয়াল করে বই বন্ধ করে ল্যাপটপ ধরেছে রিমি। খানিক্ষণ অপেক্ষার পর মিলি বুঝতে পারে রিমি পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। ইয়াবার ধোয়া তাকে কি মানসিকতা উপহার দিয়েছে মিলির বুঝতে বাকি থাকে না। প্রিয় বোনটার জন্য খারাপ লাগছে তার। আস্তে করে মিলি রিমির পেছনে দাড়ায়। লজ্জা করে না তোর? রিমির ভাবান্তর নেই..এক ধাক্কায় ল্যাপটপ বন্ধ করে দেয় মিলি। রিমির চোখ লাল হয়ে উঠেছে। আস্তে করে বিছানায় গিয়ে ধুপ করে পড়ে যায়। মিলির মুখমণ্ডলে সীমাহীন বিরক্তির চিহ্ন..পরিচিত অাশপাশের অনেকগুলো মুখ তার চোখে ভেসে ওঠে..তারা সবাই ধোয়া নেয়..নেশা..আসক্তি গিলে ফেলছে সমাজকে..মিলি একা কিছুই করতে পারবে না....।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৮