somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই জুলুমের শেষ কোথায়

১৫ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বরিশালে মাদ্রাসার জমি দখলে বাধা দেয়ায় এবং পরিচালনা কমিটিতে জায়গা না পেয়ে বাকেরগঞ্জে এক মাদ্রাসা সুপারকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আবু হানিফ (৫০) নামে কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার ওই সুপারের মাথায় মল ঢেলে দিয়ে তা ভিডিও করা হয়। মিনজু ও বাদল নামে এ ঘটনায় জড়িত ২ জনকে রোববার (১৩ মে) দিবাগত রাতে বাকেরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে রাতভর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এই জুলুম নির্যাতনের শিকার কেবল মাদ্রাসা সুপার নয়, গোটা দেশের আলেম সমাজ এই জুলুমের শিকার।
গ্রেফতারদের মধ্যে মিনজু (৪৫) বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১২ নং রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের মৃত মো. হাসেম মুসল্লির ছেলে এবং দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি। অপরদিকে বেল্লাল (২৫) বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নূর মোহাম্মদের ছেলে। তাকে ফেসবুকে প্রকাশিত লাঞ্ছনারর ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার (১১ মে) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে কাঠালিয়া গ্রামের কাঠালিয়া ইসলামিয়া দারুচ্ছুন্নাৎ দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সুপার মাও. মো. আবু হানিফকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছনা করে তার ভিডিও ধারণ করা হয়। মঘটনার পর লাঞ্ছনার শিকার মাদ্রাসার সুপার ও তার পরিবার লোকলজ্জায় বিষয়টি গোপন রাখতে চায়। তবে রোববার (১৩ মে) লাঞ্ছনার ঘটনার একটি ভিডিও ধারণকারীদের মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
এরপর মাদ্রাসা সুপার মাও. মো. আবু হানিফ বাদী হয়ে নিজের ছোটভাই জাকারিয়া হোসেন জাকিরসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৬ জনকে আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী বলেন, কাঁঠালিয়া গ্রামে দারুল উলুম দীনিয়া আরাবিয়া কমপ্লেক্স ও এতিমখানা নির্মাণের জন্য ২০০৯ সালে জায়গা কেনা হয়। কিছু ব্যক্তি ওই জায়গা দখল করে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার পাঁয়তারা করলে ২০১৪ সালে একটি মামলা হয়।
অপরদিকে কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দারুচ্ছুন্নাৎ দাখিল মাদ্রাসায় কমিটির সভাপতি হিসেবে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভোকেট এইচএম মজিবুর রহমান নির্বাচিত হন। কিন্তু লাঞ্ছনাকারীদের মধ্যে থাকা খন্দকার মো. জাহাঙ্গীর আলম সভাপতি হতে চেয়েছিলেন।
মামলার বরাত দিয়ে মাদ্রাসা সুপার আবু হানিফ বলেন, এসব কারণে লাঞ্ছনাকারীরা জোটবদ্ধ হয়ে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং বিভিন্ন সময়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে তারা আমাকে নানান ধরনের হুমকি ও মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করে। বাদী বলেন, ঘটনার দিন ১১ মে সকাল ৭টায় হাঁটতে বের হই। বাড়ির ৫শ’ গজ দূরে হাঁটতে গেলে মামলার নামধারী আসামি ও অজ্ঞাতনামাসহ ১৪/১৫ জন আমার পথরোধ করে চাঁদার ৫ লাখ টাকা দাবি করে এবং দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর করে। একপর্যায়ে মাটির হাঁড়ির ভেতরে থাকা মানুষের মল আমার মাথায় ও গায়ে ঢেলে দেয়। তিনি বলেন, মল ঢেলে দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দিলে লজ্জায় কোনভাবে বাড়িতে চলে যাই।
ভিকটিমের ছেলে মহিবুল্লাহ জানান, লোকলজ্জার ভয়ে প্রথমে বিষয়টি যাতে কেউ না জানে সেজন্য স্থানীয় ২/১ জন গণ্যমান্য ব্যক্তিতে জানিয়ে চুপ থাকি। কিন্তু যারা বাবাকে লাঞ্ছিত করেছে তাদের মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেলে সবাই তা দেখে ফোন দিতে থাকে। এরপরই মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেই আমরা। মামলা দায়েরের পর পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় মিনজু ও বাদল নামে ২ জনকে গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন বাকেরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আ. হক। তিনি জানান, মাদ্রাসার সুপারের সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। জমি ও মাদ্রাসা কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে বিরোধের জের ধরে শরীরে মল ঢেলে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ দেখে ও প্রাথমিক তদন্তে সুপারকে লাঞ্ছনা করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি চাঁদা দাবি ও টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর ২ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারমধ্যে একজন এজাহারনামীয় এবং অপরজনেক ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ রয়েছেন। খবর পেয়ে রোববার সারাদিন আলেম সমাজসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ সুপারের কাছে গিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি স্থানীয়রাই দোষীদের ধরিয়ে দিতে পুলিশকে সহায়তা করছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:২১
১৮টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×